চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ০৯ জানুয়ারি, ২০২৫

সর্বশেষ:

আব্দুচ ছালামের ১৩ প্রকল্পের ‘অনিয়ম-দুর্নীতির’ তদন্ত শুরু

ইমরান বিন ছবুর

৮ জানুয়ারি, ২০২৫ | ১১:২১ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুচ ছালামের আমলের ১৩ প্রকল্পের ‘অনিয়ম-দুর্নীতির’ তদন্ত শুরু করেছে মন্ত্রণালয়। তদন্তের জন্য গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. কামাল উদ্দিনকে আহ্বায়ক ও সিডিএ’র সচিব রবীন্দ্র চাকমাকে সদস্য সচিব করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে মন্ত্রণালয়।

 

২০০৯ সালে আব্দুচ ছালাম সিডিএ’র চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়ার পর তার সময়কালে নেওয়া ১৩টি প্রকল্পের তদন্ত করবে পাঁচ সদস্যের কমিটি। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা শাখার উপসচিব-২ মো. নাজমুল আলম, সিডিএ’র বোর্ড সদস্য স্থপতি সৈয়দা জেরিনা হোসাইন ও এডভোকেট সৈয়দ কুদরত আলী।

 

তদন্তের কাজে আগামী শনিবার সিডিএতে আসবেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব ও তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক মো. কামাল উদ্দিন। আব্দুচ ছালামের গ্রহণ করা ১৩ প্রকল্পের ফিজি বিলিটি রিপোর্ট, প্রকল্পের ফিজিবিলিটি রিপোর্টের টর (টার্মস অব রেফারেন্স), ইআইএ রিপোর্ট, বাস্তবায়ন মনিটরিং মূল্যায়ন বিভাগের প্রতিবেদন, টেন্ডার ডকুমেন্টস, ঠিকাদার নির্বাচন প্রক্রিয়ার ডকুমেন্টস এবং পিইসি ফর ইসিএনসিইসি প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন তদন্ত কমিটি।

 

সিডিএ’র সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালের ২৮ এপ্রিল থেকে ২০১৯ সালের ২২ এপ্রিল পর্যন্ত সিডিএ’র চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন আব্দুচ ছালাম। এই ১০ বছরে তিনি ছোট বড় মিলে প্রায় ৩০টি প্রকল্প গ্রহণ করেন। এরমধ্যে তিনি অনেকগুলো প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন এবং অনেক প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারেননি, যা এখনো চলমান রয়েছে। এই ৩০ প্রকল্পের মধ্যে ১৩টি প্রকল্পের তদন্ত করবে কমিটি।

 

সিডিএ’র সচিব রবীন্দ্র চাকমা স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বলা হয়, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) বিগত সময়ের উন্নয়ন প্রকল্পের অনিয়ম/দুর্নীতির তদন্তের লক্ষ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তের স্বার্থে নিম্নবর্ণিত কাগজপত্রাদিপত্র প্রাপ্তির তিন কার্যদিবসের মধ্যে সরবরাহ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, ওই আদেশে প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র ও ফাইল সমূহ নিরাপদে সংরক্ষণ ও কমিটির তদন্ত কাজে সার্বিক সহযোগিতার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালকগণকে নির্দেশক্রমে বলা হয়েছে।

 

সিডিএ’র ১৩ প্রকল্পগুলো হচ্ছে- এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার, মুরাদপুর ফ্লাইওভার, কদমতলী ফ্লাইওভার, জলাবদ্ধতা প্রকল্প, কালুরঘাট-চাক্তাই রিং রোড প্রকল্প, বাকলিয়া এক্সেস রোড, চিটাগাং সিটি আউটার রিং রোড, সিডিএ স্কয়ার, কল্পতরু প্রকল্প, সল্টগোলা ডরমেটরি, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন মাস্টার প্ল্যান, বায়েজিদ লিংক রোড প্রকল্প।

 

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে সিডিএ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল করিম বলেন, মূলত ২০০৯ সালের পর থেকে সিডিএ’র বাস্তবায়নাধীন ও চলমান প্রকল্পের অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্ত শুরু করেছে মন্ত্রণালয়। এসব তদন্ত করতে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটিও করেছে মন্ত্রণালয়।

 

সিডিএ’র সচিব স্বাক্ষরিত আরেক অফিস আদেশে আরো বলা হয়- ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের নাম ও পূর্ণ ঠিকানা, প্রকল্পের ডিপিপি/সর্বশেষ আরডিপিপি, প্রকল্পের ক্রয় পরিকল্পনা মোতাবেক ক্রয় সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি, প্রকল্পের ক্রয়কৃত মালামাল বুঝে নেওয়ার কাগজপত্রাদি, প্রকল্পের ড্রইং ও ডিজাইন, প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ও সংশোধিত ব্যয়, প্রকল্পের কনসালটেন্ট রিপোর্ট, প্রকল্পের চুক্তিপত্র, প্রকল্পের পিইসি সভার প্রতিবেদন, প্রকল্পের স্টিয়ারিং কমিটির সভার কার্যবিবরণী, প্লট/ফ্ল্যাট বরাদ্দের তালিকা (২০০৯ সাল থেকে), চলমান প্রকল্পের সময়ভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা, প্রকল্পের ভৌত ও আর্থিক অগ্রগতি প্রতিবেদন এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র ও ফাইল সমূহ নিরাপদে সংরক্ষণ ও কমিটির তদন্ত কাজে সার্বিক সহযোগিতার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন তদন্ত কমিটি।

 

পূর্বকোণ/ইব

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট