দেশে সরকারি বেসরকারি সব ব্যাংক মিলিয়ে গ্রাহকদের মোট আমানতের পরিমাণ ১৮ লাখ ২৫ হাজার ৩৩৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। এরমধ্যে ১ কোটি ১৭ লাখ ৩৯ হাজার ৬২১ ব্যাংক একাউন্টে ২ লাখ ৪৭ হাজার ৪৬৬ কোটি ৩৭ লাখ টাকা আমানত রেখেছেন চট্টগ্রামের গ্রাহকরা। যা দেশে গ্রাহকদের মোট আমানতের সাড়ে ১৩.৬ শতাংশ। এরমধ্যে জেলায় সবচেয়ে আমানত বেশি নগরীর ডবলমুরিংয়ে আর কম ভুজপুরে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত শিডিউলড ব্যাংক স্ট্যাটিস্টিকস (তালিকা ব্যাংক পরিসংখ্যান) প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। ওই প্রতিবেদনে গত বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ের বিভাগ, জেলা ও থানা ভিত্তিক তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, চট্টগ্রামের ৩২টি থানার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আমানত জমা হয়েছে ডবলমুরিং থানা এলাকার গ্রাহকদের। ১১ লাখ ৬৭ হাজার ৩৪৮ হাজার একাউন্টে ৭৫ হাজার ৫১১ কোটি টাকা জমা রেখেছে ওই এলাকার ব্যাংক গ্রাহকরা। যা পুরো দেশের মোট আমানতের ৪ দশমিক ১ শতাংশ। এই থানা এলাকাতেই ব্যাংক পাড়া ও নগরীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক এলাকা বলে খ্যাত আগ্রাবাদের অবস্থান।
গেল প্রায় দেড় যুগ ধরেই চট্টগ্রামে আমানতের শীর্ষে আছে এই এলাকা। দেশের অধিকাংশ ব্যাংকের আঞ্চলিক কার্যালয়ের অবস্থানও এই এলাকায়। তাছাড়া বন্দরের কাছাকাছি অবস্থান ও যোগাযোগসহ নানামুখী সুবিধার কারণে শত বছর আগে থেকেই শহরের বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছে আগ্রাবাদ। তাই নগরে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয় এই এলাকার ব্যাংকে।
জেলায় ব্যাংক আমানতের অংকে ডবলমুরিংয়ের পরে অবস্থান কোতোয়ালির। এই থানা এলাকার ১৪ লাখ ৬১ হাজার ২০৭ একাউন্টে ৫৫ হাজার ৪০ কোটি টাকা জমা আছে গ্রাহকদের। যা দেশের মোট আমানতের ৩ শতাংশ। দেশে ভোগ্যপণ্যের অন্যতম বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জের অবস্থানের সুবাধে দেড় দশক আগেও ব্যাংক আমানতে জেলায় শীর্ষস্থানে ছিল কোতোয়ালী।
সর্বশেষ ২০০৯ সালের মার্চের শেষে দেশে মোট আমানতের ৪.২৭ শতাংশই ছিল এই এলাকার। তবে নানা কারণে জৌলুস হারাচ্ছে খাতুনগঞ্জ, এর প্রভাব পড়ছে ব্যাংক লেনদেন ও আমানতে। জেলার সর্বোচ্চ গ্রাহকধারী হয়েও কোতোয়ালি আমানতে শীর্ষস্থান হারায় ২০১০ সালে।
চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার-সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, নানামুখী সমস্যার কারণে খাতুনগঞ্জ জৌলুস হারাচ্ছে। এরমধ্যে আবার চট্টগ্রামের প্রবেশ পথে ওজন স্কেল বসানো হয়েছে। এটা আমাদের বেশি ভোগাচ্ছে, ব্যবসার পরিসর ছোট হয়ে আসছে।
অন্যদিকে চট্টগ্রামে গ্রাহক সংখ্যা ও ব্যাংক আমানতে সর্বনিম্ন অবস্থানে ভুজপুর থানা। এই থানা এলাকার ৪৬ হাজার ৯৫৩ ব্যাংক একাউন্টে ৩১ হাজার ৬৭৩ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা রেখেছেন গ্রাহকরা। মূলত ফটিকছড়ি উপজেলার এই থানা এলাকা কিছুটা দুর্গম হওয়ায় এখনও অধিকাংশ ব্যাংকের ব্রাঞ্চ নেই সেখানে। তাছাড়া উপজেলা সদর হিসেবে ফটিকছড়ির ব্যাংকে আমানত জমা করেন এই এলাকার অনেক গ্রাহক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী দেশে মোট ব্যাংকের সংখ্যা ৬১টি। এসব ব্যাংকের ১১ হাজার ৩০০টি ব্র্যাঞ্চ রয়েছে সারাদেশে।
পূর্বকোণ/ইব