নগরীর বিভিন্ন এলাকায় নকশা বহির্ভূত ভবনের বিরুদ্ধে শীঘ্রই অভিযান করবে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। দীর্ঘদিন ধরে উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ থাকায় নগরীতে অনুমোদনহীন ও নকশা বহির্ভূত ভবন নির্মাণের হিড়িক পড়েছে।
পরিকল্পিত নগরী গড়তে অনুমোদনহীন ও নকশা বহির্ভূত ভবন অপসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে সিডিএ’র অথরাইজড বিভাগের সঠিক তদারকি না থাকায় নগরীতে নির্মাণ করা হচ্ছে অসংখ্যা নকশা বহির্ভূত ভবন। কর্মকর্তাদের সঠিক তদারকির অভাবে ভবন মালিকরা এসব নকশা বহির্ভূত ভবন নির্মাণের সুযোগ পাচ্ছেন বলে মনে করছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা।
জানতে চাইলে সিডিএ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল করিম বলেন, বিভিন্ন কারণে অনেকদিন উচ্ছেদ কার্যক্রম বন্ধ ছিল। পরিকল্পিত নগরী গড়তে অনুমোদনহীন ও নকশা বহির্ভূত ভবন অপসারণের বিকল্প নেই। এখন থেকে নির্মাণাধীন ভবনগুলো নিয়মিত মনিটরিং করা হবে। যাতে নতুন করে কেউ অনুমোদনহীন বা নকশা বহির্ভূত ভবন তৈরি করতে না পারে।
নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, সিডিএ’র সংশ্লিষ্ট বিভাগের তদারকি না থাকায় নকশা বহির্ভূত বা অনুমোদনহীন ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এছাড়াও এসব ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে অথরাইজড বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তার সহযোগিতাও রয়েছে। তবে পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় নিয়মিত তদারকির অভাবে এসব ভবন নির্মাণ হচ্ছে দাবি অথরাইজড বিভাগের।
জানতে চাইলে সিডিএ’র সাবেক বোর্ড সদস্য স্থপতি আশিক ইমরান বলেন, এই জায়গায় যদি সিডিএ কঠোর হতে পারে তাহলে চট্টগ্রাম নগরী পরিকল্পিত হতে বাধ্য। কিন্তু দেখা যায়, সিডিএ’র পরিদর্শক যাদের ভবন নির্মাণে তদারকি করা দরকার, তারা সেভাবে তদারকি করেন না। অনেক সময় ক্ষমতাসীনদের চাপের জন্য তা পারেন না। পরিদর্শকদের ক্ষমতা ও সুযোগ-সুবিধা আরো বাড়ালে তারাও কাজে আগ্রহী হবেন।
তিনি আরো বলেন, আমাদের মধ্যে আইন না মানার প্রবণতা রয়েছে। কোনভাবে সিডিএ’র একটি প্ল্যান অনুমোদন নিতে পারলেই আমাদের কাজ শেষ। তারপর নিজের ইচ্ছেমতো ওই ভবন নির্মাণ করা হয়। প্ল্যান পাসের পর অথরাইজড বিভাগ থেকে মনিটরিং বাড়াতে হবে। নিয়মের ব্যত্যয় ঘটালে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। তাহলে অনুমোদনহীন ও নকশা বহির্ভূত ভবন কমবে বলে মনে করছি।
ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮ অনুযায়ী, নতুন ভবন নির্মাণ কাজ শুরুর বা স্থগিত কাজ শুরুর ১৫ দিন আগে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে অবহিত করার কথা থাকলেও তা করেন না অধিকাংশ ভবন মালিক। এছাড়া, কোন কারিগরি ব্যক্তিকে নতুন নিয়োগ বা পরিবর্র্তন সম্পর্কে কিছু থাকলে ১৫ দিনের মধ্যে জানাতে হবে।
বিধিমালায় আরো বলা হয়েছে, ইমারতের দায়িত্বপ্রাপ্ত কারিগরি ব্যক্তির গাফিলতি হিসাবে গণ্য হবে, যদি তিনি কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়াই নির্ধারিত ডিজাইন ও স্পেসিফিকেশনের সাথে যুক্ত এমন কোন প্রয়োজনীয় তথ্য ও বিবরণ সম্পর্কে ভুল তথ্য প্রদান বা গোপন করেন।
এছাড়া, যদি তিনি কাঠামো নকশা, অগ্নিনির্বাপক অথবা অন্যান্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে ভুল তথ্য পরিবেশন করেন এবং এড়িয়ে যান।
পূর্বকোণ/ইব