একেতো রোগীর চাপে নাভিশ্বাস। এর উপর অস্ত্রোপচার টেবিলের ‘সিলিং লাইট’ বা ওটি লাইট খারাপ প্রায় দু’মাস। যে কারণে সাধারণ লাইটের আলোয় চলছে প্রসূতিদের অস্ত্রোপচার (সিজার)।
এমন চিত্র চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের গাইনি ও অব্স বিভাগে। অবশ্য হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ওটি লাইট নষ্ট থাকার কারণে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে তাগাদা দেয়া হলেও মেরামত না করায় সাধারণ আলো দিয়েই সেবা অব্যাহত রাখা হয়েছে।
জানা গেছে, গাইনি বিভাগের (৩৩ নম্বর ওয়ার্ড) জন্য সাড়ে ৯ লাখ টাকা মূল্যের এলইডি ওটি লাইট ক্রয় করে চমেক হাসপাতাল। দরপত্রের মাধ্যমে ২০২০ সালের ১১ জুন ওটি লাইটটি সরবরাহ করে ঢাকার মেসার্স এলাইভ হেলথকেয়ার নামে একটি প্রতিষ্ঠান। চুক্তি অনুযায়ী সরবরাহ করা এলইডি ওটি লাইটের ওয়ারেন্টি পিরিয়ড ছিল পাঁচ বছর। কিন্তু ইতিমধ্যে সদ্য বিদায়ী বছরের নভেম্বরে বিকল হয়ে যায় সাড়ে ৯ লাখ টাকা মূল্যের এই এলইডি ওটি লাইটটি।
খবর নিয়ে জানা গেছে, পাঁচ দিনের মধ্যে ওটি লাইটটি মেরামত করতে চিঠি দিয়েছেন চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দিন। ৩০ ডিসেম্বর সরবাহকারী প্রতিষ্ঠানকে প্রেরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ওটি লাইট নষ্ট হওয়ার পরপরই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সরবারহকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করেন। সরেজমিনে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এসে পরিদর্শন করে দ্রুত মেরামত করে দেয়ার কথা জানানো হলেও অদ্যাবধি ওটি লাইটটি মেরামত করা হয়নি। যে কারণে সেবাদান ব্যাহত হচ্ছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দিন বলেন, ‘ওটি লাইট নষ্ট হওয়ার পরপরই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাথে আমরা যোগাযোগ করে চিঠি দিয়েছি। এখনো ওয়ারেন্টি পিরিয়ড থাকায় তাদেরকে দ্রুত লাইট ঠিক করে দেয়ার তাগাদা দেয়া হয়েছে। গাইনি ওয়ার্ডের অন্য দু’ ওটিতে সমস্যা নেই। সেখানে কাজ চলছে।’
গাইনি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে অস্ত্রোপচার কক্ষে তিনটি ওটি টেবিল দিয়ে গাইনি রোগীদের সেবা দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। যদিও প্রতিদিন যে পরিমাণ রোগীর সেবা দিতে হয়, তাতে এ সংখ্যা কম। এরমধ্যে একটি ওটি টেবিলের লাইট বিকল হওয়ায় বিকল্প হিসেবে স্পট লাইট ব্যবহার করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। এতে কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে চিকিৎসকদের। তবুও এর মধ্যেই রোগীর চাপ এবং জরুরি সেবাদানের স্বার্থে প্রতিদিনই কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
পূর্বকোণ/পিআর