চট্টগ্রাম রবিবার, ০৫ জানুয়ারি, ২০২৫

সর্বশেষ:

ক্বণন’র ৩৯ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে কবি হাসান হাফিজ

বিজয় অর্জনের চেয়ে ধরে রাখা কঠিন

নিজস্ব প্রতিবেদক

৩ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৯:২২ অপরাহ্ণ

জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি, সাংবাদিক, কবি হাসান হাফিজ বলেছেন, বিজয় অর্জন করা সহজ কিন্তু সেটি ধরে রাখা আরও কঠিন। সেখানে গণমাধ্যমে দায়িত্ব রয়েছে। শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি যারা চর্চা করেন তারা যদি মানুষের ভাষা বুঝতে না পারেন সেটি খুব মর্মান্তিক। সেই সচেতনা আমাদের মধ্যে তৈরি হতে হবে। আবৃত্তি রুচিশীল মানুষের শিল্প। এই শিল্প সুন্দরের চর্চা করতে শেখায়। সুন্দর ও শুদ্ধ করে কথা বলতে শেখায়।

 

শুক্রবার চট্টগ্রাম থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ক্বণন শুদ্ধতম আবৃত্তি অঙ্গনের ৩৯ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ক্বণন সভাপতি ও আবৃত্তি শিল্পের শিক্ষক মোসতাক খন্দকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা পরিষদ চট্টগ্রামের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাব্বির ইকবাল, কোলকাতার খ্যাতিমান আবৃত্তিশিল্পী ও প্রশিক্ষক শাশ্বতী গুহ, সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ক্বণন কার্যকরী পরিষদ সদস্য সৌভিক চৌধুরী।

 

আবৃত্তি শিল্পী শরীফ মাহমুদ ও শুভ্রা চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি কবি হাসান হাফিজ আরও বলেন, দেশকে, দেশের মাটি ও মানুষকে ভালবাসতে হবে। আর দেশপ্রেমকে জাগ্রত করতে হলে সংস্কৃতিচর্চা বাড়াতে হবে। সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পেলে এবং এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে পৃষ্ঠপোষকতা করলে তরুণরা বখে যাবে না। ক্বণন সাড়ে তিন দশক ধরে আবৃত্তি চর্চা এবং এই শিল্পের সম্প্রসারণে কাজ করে যাচ্ছে। তাদের এই কর্মকাণ্ড শুধু শুদ্ধ আবৃত্তির জন্য নয়, শুদ্ধ সমাজ বিনির্মাণেও ভূমিকা রাখবে।

 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শাব্বির ইকবাল বলেন, আবৃত্তি একটি শিল্প। কবি যে অনুভব থেকে শব্দের পর শব্দ সাজিয়ে কবিতা রচনা করেন, তা শ্রুতি মাধুর্যে, বাচিক শৈলিতে শ্রোতার কাছে পৌঁছে দেন আবৃত্তিশিল্পী। অতিথিগণ কুণনের আয়োজনের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, এ ধরনের আবৃত্তিকেন্দ্রিক কর্মযজ্ঞ যতো বেশি হবে, ততই অসুন্দর, অশুভ সবকিছু দূর হয়ে যাবে। শুধু আবৃত্তি কেন্দ্রিক একটি সংগঠন মনের তাগিদে এত বছর ধরে শুদ্ধ সংস্কৃতি চর্চা করে চলেছে। আশা করছি আগামীতেও তারা এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবে এবং উত্তরোত্তর সমৃদ্ধ হবে।

 

অতিথিরা ক্বণন’র আয়োজনের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, এ ধরনের আবৃত্তিকেন্দ্রিক কর্মযজ্ঞ যতো বেশি হবে, ততই অসুন্দর, অশুভ সবকিছু দূর হয়ে যাবে। শুধু আবৃত্তি কেন্দ্রিক একটি সংগঠন মনের তাগিদে এত বছর ধরে শুদ্ধ সংস্কৃতি চর্চা করে চলেছে। আশা করছি আগামীতেও তারা এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবে এবং উত্তরোত্তর সমৃদ্ধ হবে।

 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কোলকাতার খ্যাতিমান আবৃত্তিশিল্পী ও প্রশিক্ষক শাশ্বতী গুহ বলেন, একটি আবৃত্তি সংগঠন ৩৯ বছর টিকে থাকার এমন নজির ভারতে নেই। এটাই বাংলা ভাষার ঐতিহ্য। মোসতাক দা যে কাজ করে গেছেন তার কোন তুলনা নেই।

 

অনুষ্ঠানে ক্বণন’র শিশু-কিশোর সদস্যদের পরিবেশনায় আবৃত্তি শিল্পের শিক্ষক মোসতাক খন্দকারের গ্রন্থনা ও নির্দেশনায় ‘বাংলাদেশের মুক্তি’ শীর্ষক বৃন্দ আবৃত্তির মঞ্চায়ন হয়। এতে অংশগ্রহণ করে মেহজাবিন, সামিহা, নাবিলা, নওশিন, সমৃদ্ধ, মুবাশিরা, রেঁনেসা, আফরিন, জারিফ, নুসাইবা। একক আবৃত্তি পরিবেশন করে সৌভিক চৌধুরী, শরীফ মাহমুদ, শুভ্রা চক্রবর্তী, সুস্মিতা চৌধুরী, ইব্রাহিম মাহমুদ, মুনয়িম আসরা ও রাইয়ান রহমান। এরপর একক-দ্বৈত আবৃত্তি পরিবেশন করে আমন্ত্রিত শিল্পী কোলকাতার জনপ্রিয় আবৃত্তি শিল্পী শাশ্বতী গুহ ও ক্বণন সভাপতি মোসতাক খন্দকার। সংগীত পরিবেশন করে শ্রাবন্তী ধর ও কৌশিক দত্ত।

 

অনুষ্ঠানে অতিথিদের বিশেষ সম্মাননা প্রদান করেন ক্বণন সভাপতি মোসতাক খন্দকার। এই আয়োজনে ৭৫তম কর্মশালা সম্পন্নকারী শিক্ষার্থীদের মাঝে সনদ তুলে দেন কবি হাসান হাফিজ।

 

 

পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট