থার্টি ফার্স্ট নাইট ও খ্রিষ্টীয় নববর্ষ ২০২৫ উপলক্ষে যেকোনো ধরনের আতশবাজি, পটকা ফোটানো ও ফানুস ওড়ানো নিষিদ্ধ করা হলেও আতশবাজি ফুটিয়েছে অনেকে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টা বাজতেই শত শত বাজির শব্দ শোনা যায়। এতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ক্ষোভ জানিয়েছেন অনেকে।
Chittagong Walks – চট্টগ্রামকে জানুন নামক একটি ফেসবুক পেজে ক্ষোভ প্রকাশ করে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে আতশবাজি বন্ধের ঘোষণা দেয়ার জানান।
পেজটির মন্তব্যের ঘরে আবদুর রশিদ নামে একজন লিখেন, ‘এই আতশ বাজি ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করা উচিত কারণ আতশবাজির উচ্চশব্দের কারণে পশুপাখি ছোট শিশু বৃদ্ধ গর্ভবতী নারী এবং অনেক অসুস্থ ব্যক্তির নানান সমস্যা হয়ে থাকে। তাই আতশবাজি ফোটানো কোন সংস্কৃতি হতে পারে না।’
গ্রিন টাচ নামক একটি আইডি থেকে একজন লিখেন, ‘নিজের জীবনের নির্ধারিত হায়াত হতে একটা বছর হারিয়ে, লাভ ক্ষতির হিসাব নিকাশ করার কথা সেখানে এসব করে গুনাহের বোঝা ভারী করে আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠে কিভাবে?’
আবদুল্লাহ আল মামুন নামে একজন লিখেন, ‘গজব নাজিল হওয়ার সময় ঘনিয়ে আসছে, আল্লাহ্ তা’য়ালা সবাইকে হেফাজত করুন।’
আবদুল হান্নান লিখেন, ‘আতশবাজি ফোটানো আইনের মাধ্যমে বন্ধ করা হোক। এতে মানুষের ঘরবাড়ি ও বিভিন্ন পাখির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। আজ সকালে ফেসবুকে দেখলাম এক জায়গায় আগুন ধরল। জনগণ তা নিভিয়ে দিল। আওয়াজ তুলুন সকলে ফেসবুকে।’
এদিকে, আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মুহাম্মদ নাছির উদ্দিন নিজের ফেসবুকে লাইভে এসে হ্যাপি নিউ ইয়ার পালন করতে না পারায় নিজেকে একজন আনকালচারড মানুষ বলে দাবি জানান। লাইভটিতে তিনি বলেন, আমি একজন আনকালচারড, গেঁয়ো বলতে পারেন। কারণ, ১২টা বাজে আমার বাচ্চাদের যেভাবে ভয়ে চমকে ঘুম ভেঙে গেছে, আমি আপনার বাচ্চাদের ভয়ে চমকিয়ে ঘুম ভাঙাতে পারিনি। আপনার অসুস্থ মা-বাবা যিনি আছেন উনার ঘুম ভাঙাতে পারিনি, আতশবাজি ফুটিয়ে। আমি আসলে একজন আনকালচারড, আমাকে গেঁয়ো বলতে পারেন।
তিনি বলেন, আমরা ছোটখাটো যে শুভেচ্ছাগুলো জানাই সেগুলো বড় হতে হতে তরুণ সমাজ এটাকে এমনভাবে করছে যার কারণে গতবছর একজন শিশু এবং এইবছরও দুটো শিশু গতকাল মারা গেছে। আমাকে ক্ষমা করবেন আমি আপনাদের হ্যাপি নিউ ইয়ারের শুভেচ্ছা জানাতে পারিনি।
এর আগে, সোমবার (৩১ ডিসেম্বর) ইংরেজি বর্ষবরণে ‘থার্টি ফার্স্টের’ রাতে উন্মুক্ত স্থানে সমাবেশ, নাচ-গান, আতশবাজি-পটকা ফোটানো, ফানুস ওড়ানো নিষিদ্ধসহ ১৩ দফা নির্দেশনা দেয় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। একইসঙ্গে নগরবাসীকে গ্রহণযোগ্য শালীনতা বজায় রাখার পাশাপাশি নৈতিক মূল্যবোধ পরিপন্থী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে বলে নগর পুলিশ। তবে মানতে দেখা যায়নি অনেককে। ব্যবস্থা নিতেও দেখা যায়নি পুলিশকে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশনস্) মো. রইছ উদ্দিন পূর্বকোণকে বলেন, সাধারণ নাগরিকদের জন্য আমরা এই নির্দেশনা দিয়ে থাকি। জনগণকে সহযোগিতা করতে ও সচেতন হতে হবে। তাদের উল্লাস যদি অপরজনের জন্য কষ্টের কারণ হয় তা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমাদের চোখের সামনে এমন কোনো আতশবাজি ফুটানোর ঘটনা না ঘটায় ব্যবস্থা নিতে পারিনি।
পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ