বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, সংসদীয় দলের সাবেক হুইপ, চট্টগ্রাম মহানগরী আমীর ও সাবেক এমপি আলহাজ শাহজাহান চৌধুরী বলেছেন, বিজয় দিবসকে আওয়ামী লীগ তাদের একক সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছিল। অথচ আজকে কত সুন্দর সারাদেশে সব দলের অংশগ্রহণে বিজয় দিবস উদযাপন করা হচ্ছে। বিজয় দিবসের নামে হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে। চিকিৎসার নামে লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। আমার দেশকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। এক এক করে সব ষড়যন্ত্র উন্মোচিত হচ্ছে।
আজ সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) বিজয় দিবস উপলক্ষে জামায়াত ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর উদ্যােগে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শাহজাহান চৌধুরী আরও বলেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের পুরো ইতিহাসকে বিকৃত করেছে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে স্বাধীনতার বিরোধী আখ্যা দিয়ে ৫৩ বছর মিথ্যার আশ্রয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করেছে। এই আওয়ামী লীগ, শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনা অপপ্রচারের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামীকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করার অপচেষ্টা চালিয়েছে কিন্তু তারা পারেনি। বরং তারাই জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
বাংলাদেশের বিডিআর হত্যাকাণ্ড এটা সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্র। শেখ হাসিনা আর নরেন্দ্র মোদি তাদের গোপন ফোনালাপ ও গোপন ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছিল বলেও মন্তব্য করেন আলহাজ শাহজাহান চৌধুরী।
তিনি আরও বলেন, ১৯৪৭, ৭০, ৭৫, ৯০ এর গণঅভ্যুত্থান ২০০১ ভোট বিপ্লবের পরে ২৪ এর ৩৬ জুলাই এটাই প্রমাণ করে হিন্দুস্তান যতই ষড়যন্ত্র করুক বাংলাদেশে এক ইঞ্চি জায়গার উপরেও হিন্দুস্তান আধিপত্য বিস্তার করতে পারবে না। কারণ এই স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও ইসলামের জন্য জামায়াতের নেতৃবৃন্দরা ফাঁসির মঞ্চেও গিয়েছেন। এই স্বাধীনতার জন্য ২৪ সালের ৩৬ জুলাই ১ হাজার ৫৮৩ জন দামাল যুবক ছাত্ররা তাদের বুকের তাজা রক্ত দিয়েছে।
চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানবাজারস্থ বাংলাদেশ ইসলামিক একাডেমি (বিআইএ) মিলনায়তনে আয়োজিত উক্ত আলোচনা সভায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও মহানগরী জামায়াতে সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিনের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য চট্টগ্রাম মহানগরী নায়েবে আমীর পরিবেশবিদ মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, নগর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ উল্লাহ ও ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুস, নগর সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগরী সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান, নগর কর্মপরিষদ সদস্য আবু হেনা মোস্তফা কামাল ও কোতোয়ালী থানা আমীর মো. আমির হোছাইন, চকবাজার থানা আমীর আহমদ খালেদুল আনোয়ার, বিশিষ্ট চিকিৎসক ও সমাজসেবক ডা. খাইরুল আনোয়ার, কোতোয়ালী থানা সেক্রেটারি মোস্তাক আহমেদ, চকবাজার থানা সেক্রেটারি সাদুর রশিদ চৌধুরী প্রমুখ।
এতে আরো উপস্থিত ছিলেন নগর কর্মপরিষদ সদস্য আবু বকর সিদ্দিক, অধ্যক্ষ মো. সাইফুল্লাহ ও হামেদ হাসান ইলাহি।
আলোচনা সভায় মহানগরী জামায়াতের নায়েবে আমীর পরিবেশবিদ মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ দীর্ঘ ১৮ বছর জামায়াতে ইসলামীকে বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের সুযোগ দেয়নি। বাংলাদেশের মানচিত্র নিয়ে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র চলছে। পূর্ব পাকিস্তানের সীমানাই বাংলাদেশের সীমানা। এই সীমানার এক ইঞ্চি জায়গাও আমরা ছাড়বো না ইনশাআল্লাহ। তারা ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ মেনে নিলে ১৯৪৭ সালে আরো বড় এলাকা নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো এবং স্বাধীন সত্ত্বা নিয়ে আমরা দাঁড়িয়ে যেতে পারতাম। কিন্তু তারা ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ মেনে নেয়নি যার ফলে ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদ করতে হয়েছে। এতে করে তারা প্রমাণ করেছে তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী। যারা ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ মেনে নেয়নি তারা আবার ১৯৭১ সালের বঙ্গভঙ্গের সহযোগিতা করেছে তাদের স্বার্থেই।
পূর্বকোণ/জেইউ