চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২৫

সর্বশেষ:

আন্দোলনে প্রতিটি গুলিবর্ষণের নির্বাহী তদন্ত করবে পুলিশ

নাজিম মুহাম্মদ

৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ১২:৫৭ অপরাহ্ণ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সারাদেশে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার উপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় দায়ী করা হচ্ছে পুলিশকে। এ অবস্থায় সারাদেশে সংঘটিত প্রতিটি গুলিবর্ষণের ঘটনার নির্বাহী তদন্তের উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। এতে আন্দোলন চলাকালীন ছাত্র-জনতার উপর কারা গুলি করেছে তার সঠিক তথ্য উঠে আসবে এমনটি ধারণা করা হচ্ছে।

 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনে গুলিবষর্ণের প্রতিটি ঘটনার নির্বাহী তদন্ত করে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা জানিয়ে সম্প্রতি র‌্যাবের মহাপরিচালক, সকল পুলিশ কমিশনার, ডিআইজি ও পুলিশ সুপারদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। চিঠিতে আন্দোলন চলাকালীন ১৯ দিনের গুলিবর্ষণের ঘটনার নির্বাহী তদন্ত করতে বলা হয়েছে। গত ৩ ডিসেম্বর পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি কামরুল আহসান স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলিবর্ষণের ঘটনায় সাধারণভাবে পুলিশের উপর সকল দায়ভার অর্পিত হচ্ছে। এর ফলে পুলিশ সদস্যদের মনোবলের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য গুলিবর্ষণের প্রতিটি ঘটনার নির্বাহী তদন্ত সম্পন্ন করা প্রয়োজন।

 

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়- এতে গুলিবর্ষণ যথাযথ (ন্যায়সংগত/অন্যায়ভাবে) হয়েছে কিনা তা প্রতিষ্ঠিত হবে এবং অনেক পুলিশ সদস্য অনাকাক্সিক্ষত দায় হতে নিষ্কৃতি পাবে। প্রতিটি ইউনিটের গুলিবর্ষণের সকল ঘটনা বিধি-বিধান অনুসরণ করে আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে নির্বাহী তদন্ত সম্পন্ন করে প্রতিবেদন পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠাতে হবে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সারাদেশে কতজন হতাহত হয়েছে তার সঠিক পরিসংখ্যান এখনো নির্ধারণ হয়নি। এরমধ্যে গত রবিবার চট্টগ্রাম বিভাগে আন্দোলনে নিহত ১০৫ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন। নগরীর প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম এ সহায়তার অর্থ তুলে দেন শহীদ পরিবারের সদস্যদের হাতে।

 

নির্বাহী তদন্তে যেসব তথ্য উঠে আসে :
গুলিবর্ষণের ঘটনায় নির্বাহী তদন্ত সম্পন্ন ও প্রতিবেদন প্রেরণের ক্ষেত্রে ২০২০ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইন শাখা-১ এর এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গুলিবষর্ণের যথার্থতা যাচাইয়ের নির্বাহী তদন্ত প্রতিবেদনের সাথে আবশ্যকীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করা হয় না। ফলে তদন্তের যথার্থতা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে বিঘ্ন সৃষ্টিসহ বিলম্বিত হয়, যা কাম্য নয়।

 

গুলিবর্ষণের ঘটনা তদন্ত ও নিষ্পত্তির প্রস্তাব প্রেরণের ক্ষেত্রে যেসব নিদের্শনা পালন করতে হবে তা হলো- সুস্পষ্ট মতামত ও মন্তব্যসহ একটি বিস্তারিত ও স্ব-ব্যাখ্যাসহ তদন্ত প্রতিবেদন, তদন্ত কর্মকর্তা কর্তৃক জারিকৃত ও যথাযথভাবে প্রকাশিত গণবিজ্ঞপ্তির কপি, তদন্ত কর্মকর্তা কর্তৃক লিপিবদ্ধ সাক্ষীদের জবানবন্দি, জিডি/এজাহারের কপি, গুলিবর্ষণে কেউ নিহত হলে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ও সুরতহাল রিপোর্ট, গুলিবর্ষণকারীর নামসহ ব্যয়িত গুলির বিবরণ, গুলিবর্ষণের জন্য নির্দেশ/আদেশ প্রদানকারী কর্মকর্তার লিখিত জবানবন্দি, ব্যবহৃত কার্তুজের জব্দ তালিকা, বিভাগীয় কমিশনার/জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক প্রদত্ত নির্বাহী তদন্তের আদেশের কপি, গুলিবর্ষণের ঘটনায় আহত ব্যক্তি বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের চিকিৎসা সংক্রান্ত সনদ এবং ঘটনাস্থলে প্রাপ্ত আলামতের জব্দ তালিকা।

 

পূর্বকোণ/ইব

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট