নতুন টেন্ডারের মাধ্যমে ১২টি কমিউটার ট্রেনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ছাড়ার সিদ্ধান্ত থেকে আপাতত সরে এসেছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল কর্তৃপক্ষ। হাইকোর্টে দায়ের করা একটি রিট পিটিশনের আদেশ অনুযায়ী টেন্ডার কার্যক্রম আপাতত স্থগিত করার কথা জানিয়েছেন রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার মো. মাহবুবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়- কমিউটার ট্রেনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ছাড়ার লক্ষ্যে ঠিকাদার নিয়োগের জন্য আহ্বান করা দরপত্র হাইকোর্টের আদেশে আপাতত স্থগিত করা হলো। নতুন করে এ সংক্রান্ত দরপত্র বিক্রি, দরপত্র গ্রহণ ও দরপত্র খোলার তারিখ পরে জানানো হবে। সূত্র জানায়- ৬টি রুটে চলাচল করা রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ১২টি ট্রেনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ছাড়তে গত ১৭ নভেম্বর দরপত্র আহ্বান করা হয়। পূর্বাঞ্চলের চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার মো. মাহবুবুর রহমান ৫টি প্যাকেজে এ সংক্রান্ত দরপত্র আহ্বান করেন।
১৭ নভেম্বর থেকে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত দরপত্র বিক্রি ও ৯ ডিসেম্বর দরপত্র দাখিল ও উন্মুক্ত করার দিন নির্ধারিত ছিল। দরপত্র বিজ্ঞপ্তিতে দেওয়া তথ্যানুযায়ী- চট্টগ্রাম-ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের ৩ ও ৪ নং কর্ণফুলী, চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রুটের ২৯ ও ৩০ নং সাগরিকা, আখাউড়া-ঢাকা-আখাউড়া রুটের ৩৩ ও ৩৬ নং তিতাস, ঢাকা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া-ঢাকা রুটের ৩৪ ও ৩৫ নং তিতাস, ঢাকা-মোহনগঞ্জ-ঢাকা রুটের ৪৩ ও ৪৪ নং মহুয়া এবং ঢাকা-ঝারিয়া-ঢাকা রুটের ৪৯ ও ৫০ নং বলাকা কমিউটার ট্রেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ছেড়ে দেবে রেলওয়ে।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গেলে নির্বাচিত ঠিকাদারেরা নিজস্ব লোকবল নিয়োগের মাধ্যমে এসব ট্রেনের রেলওয়ে নির্ধারিত ভাড়া অনুযায়ী টিকিট প্রিন্টিং, টিকিট সরবরাহ, টিকিট বিক্রির মাধ্যমে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। দরপত্রে অনুমোদিত দরে প্রকৃত কোচ চলাচলের ভিত্তিতে এক কোচ ট্রিপের জন্য বাংলাদেশ রেলওয়েকে ভাড়া প্রদান করবেন। লোকবল সংকটের কারণে ১৯৯৭ সাল থেকে বেশকিছু লোকাল ও কমিউটার ট্রেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করে আসছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
তবে এ জন্য দরপত্র আহ্বানসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়া অনুসরণের নিয়ম থাকলেও সেটি মানা হচ্ছিলো না। দরপত্র ছাড়াই আওয়ামী লীগ সরকার ঘনিষ্ট ঠিকাদারেরা ৩৭টি ট্রেনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পালাবদলের পর এই অবস্থার পরিবর্তন হতে শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩ নভেম্বর রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ১২টি ও রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের ১২টিসহ মোট ২৪ ট্রেনের ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করা হয়।
এরপর এসব ট্রেনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনায় ঠিকাদার নিয়োগ দিতে দরপত্র আহ্বান করে রেলওয়ে। তবে হাইকোর্টের আদেশের কারণে এখন দরপত্র প্রক্রিয়াটাই স্থগিত হয়ে গেলো।
পূর্বকোণ/ইব