গত এক সপ্তাহ ধরে চমেক হাসপাতালে ভর্তি ফেনীর বাসিন্দা মরিয়ম জাহান। শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি ওষুধ প্রেসক্রিপশন করেন চিকিৎসক। যার সবগুলোই সরকারি এ হাসপাতালে বিনামূল্যে প্রদান করার কথা। কিন্তু ওই রোগীকে মাত্র দুটি ওষুধ হাসপাতাল থেকে সরবরাহ পেলেও এন্টিবায়োটিকসহ কয়েকটি ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হয়েছে।
শুধু মরিয়মের ক্ষেত্রেই নয়। মাসখানেকের বেশি সময় ধরে শতাধিক ওষুধের সংকট চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে। যে কারণে নামিদামি ওষুধগুলো বাইরে থেকে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন রোগী ও স্বজনদের। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ওষুধ সরবরাতে দরদাতা নির্বাচিত হয়ে গেছে। শিগগিরই কার্যাদেশ দেয়া হবে। দ্রুতই বিরাজমান সংকট কেটে যাবে। হাসপাতালের কয়েকটি বিভাগের চিকিৎসক ও ইনচার্জদের সাথে আলাপকালে তারা জানান, ২২শ শয্যার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচার থেকে শুরু করে সবগুলো ওয়ার্ডে গত নভেম্বর মাস থেকে বেশ কিছু ওষুধের সংকট তৈরি হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুই উৎস থেকে ওষুধ সরবরাহ করা হয়। এরমধ্যে একটি উৎস হল- রাষ্ট্রায়ত্ত ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড (ইডিসিএল)। এর বাইরে টেন্ডারের মাধ্যমেও কিছু ওষুধ কেনা হয়। ইডিসিএল’র সরবরাহ ঠিক থাকলেও রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে দরপত্র সংক্রান্ত সিদ্ধান্তে ব্যাঘাত ঘটে। এতেই সময়ক্ষেপণ হয়, যার প্রভাব পড়েছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ওষুধ ক্রয়ে। প্রসঙ্গতঃ প্রতি অর্থবছরে চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ১০ থেকে ১২ কোটি টাকার ওষুধ ক্রয় করে থাকে।
সূত্র জানায়, দ্রুত সময়ের মধ্যে ওষুধ সংগ্রহে গত সপ্তায়ই দরপত্রের কার্যক্রম শেষ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যাচাই-বাছাই শেষে প্রতিষ্ঠানকে ওষুধ সরবরাহের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। তাদেরকে দু-একদিনের মধ্যে কার্যাদেশ পৌঁছে দেয়ার কথা রয়েছে। এ সংক্রান্তে আজ রবিবার হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের একটি সভা রয়েছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দিন বলেন, টেন্ডার কার্যক্রম শেষ হয়েছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ওষুধ পেতে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোকে বলা হয়েছে। আশা করছি অল্প কিছুদিনের মধ্যে সবগুলো ওষুধ পাওয়া যাবে। তবে ইডিসিএল (সরকারি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান) থেকে ওষুধ সরবরাহ ঠিক আছে। কিছু ওষুধ রোগীরা পাচ্ছেন।
পূর্বকোণ/ইব