চট্টগ্রামের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ফ্রিতে যান চলাচল বন্ধ হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পেলে চলতি মাসের যে কোনো দিন এক্সপ্রেসওয়েতে টোল আদায় শুরু করবে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)।
টোল আদায়ের জন্য পতেঙ্গা প্রান্তে চারটি অস্থায়ী টোল বুথ প্রস্তুত করা হয়েছে। ধীরে ধীরে নগরের লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে ১০টি টোল বুথ বসানো হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। প্রথম থেকে এলিভেটেড এক্সপ্রেওয়েতে মোটরসাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা না চলার সিদ্ধান্ত থাকলেও পরবর্তীতে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচলের অনুমতি দেয় মন্ত্রণালয়।
চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের এক সভায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোলের হার চূড়ান্ত করা হয়েছিল। এরমধ্যে টোলের হার পরিবর্তন করে নতুন করে টোল প্রস্তাব করে তা অনুমোদনের জন্য ৩ নভেম্বর গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে সিডিএ। এরপর গত ২৭ নভেম্বর মন্ত্রণালয় তা অনুমোদন করে। সেখানে গাড়ি ভেদে ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত কমছে টোল।
কোন গাড়িতে কত টোল দিতে হবে:
লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ১০ ধরনের গাড়ি চলাচল করতে পারবে। সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকদের টোল দিতে হবে ৩০ টাকা। কারের টোল ৮০, জিপ গাড়ি ও মাইক্রোবাসের টোল ১০০, পিকআপ ১৫০, মিনি বাস ও চার চাকা ট্রাক ২০০, বাস ২৮০, ছয় চাকার ট্রাক ৩০০, কাভার্ডভ্যান চলাচলে ৪৫০ টাকা টোল দিতে হবে। এছাড়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরসাইকেল ও ট্রেইলার চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
গত বছরের ১৪ নভেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি চট্টগ্রাম শহরের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করেন। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের সাড়ে ৯ মাস পর গত ২৬ আগস্ট পরীক্ষামূলকভাবে যান চলাচল শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস চললেও পরবর্তীতে মোটরসাইকেলসহ সবধরনের যান চলাচল শুরু করে।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে জিইসি মোড় থেকে ওঠে পতেঙ্গাসহ বিভিন্ন স্থানে নামার সুযোগ থাকবে। আবার পতেঙ্গা থেকে ওঠে টাইগারপাস, লালখান বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে নামার জন্য র্যাম্প রয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় জিইসি মোড়, আগ্রাবাদ, টাইগারপাস, নিমতলায়, কেইপিজেড, ফকিরহাট, সিইপিজেডে ওঠানামার নয়টি র্যাম্প থাকবে।
জানতে চাইলে সিডিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, প্রথম দফায়ও টোলের হার সহনীয়ভাবে নির্ধারণ করে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু মন্ত্রণালয় সিডিএর প্রস্তাবের চেয়ে একটু বেশি নির্ধারণ করে টোলের হার চূড়ান্ত করেছিল। পরবর্তীতে আমরা টোলের হার কমিয়ে নতুন করে নির্ধারণ করে তা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের জন্য পাঠায়। যা গত ২৭ নভেম্বর মন্ত্রণালয় অনুমোদন দেয়।
টোলের বিষয়ে সিডিএ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম বলেন, ইতোমধ্যে গাড়ি ভেদে টোলের হার মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন হয়েছে। পতেঙ্গা প্রান্তে টোল বুথ প্রস্তুত রয়েছে। টোল আদায়ের জন্য কিছু সফটওয়্যার প্রস্তুতের কাজ চলছে। আমরা আশা করছি, মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পেলে আগামী ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যে টোল আদায় শুরু হবে।
পূর্বকোণ/ইব