আন্তর্জাতিক কুরআন তিলাওয়াত সংস্থার উদ্যোগে পিএইচপি ফ্যামিলির পৃষ্ঠপোষকতায় চট্টগ্রাম জমিয়তুল ফালাহ্ মসজিদে ২৩তম আন্তর্জাতিক ক্বিরাত সম্মেলন দেশি-বিদেশি ক্বারীদের অংশগ্রহণে শনিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আন্তর্জাতিক স্বনামধন্য ক্বারীগণের সুমধুর সুললিত কণ্ঠে কুরআন তিলাওয়াত মুগ্ধ হয়ে শুনেন হাজারো দ্বীনদার কুরআনপ্রেমী মানুষ।
ক্বিরাত সম্মেলনে প্রখ্যাত উলামায়ে ক্বেরাম ও ইসলামী চিন্তাবিদগণ বলেছেন, বর্তমানে দেশে দেশে নিরীহ মানবতার ওপর জঘন্য নিগৃহ নিপীড়ন চলছে। সমগ্র বিশ্বজুড়ে চলছে হানাহানি, স্বার্থের সংঘাত ও অরাজকতা। ফলে শান্তিকামী বিশ্ববাসী আজ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠিত। কুরআন সুন্নাহ শাশ্বত নির্দেশনার অনুসরণ থেকে বিচ্যুতিই মানবজাতির ওপর এ বিপর্যয় নেমে এসেছে। আজকের সংঘাতমুখর বিশ্বে শান্তি ফিরিয়ে আনতে কুরআন-সুন্নাহকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরতে হবে। বিপর্যস্ত নিগৃহীত অবস্থা থেকে পরিত্রাণে কুরআন-সুন্নাহ মডেল অনুসরণের মাধ্যমে মানবিক বিশ্বসমাজ গড়তে হবে।
শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের ব্যবস্থাপনায় এবং আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট ও গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশের সহযোগিতায় আয়োজিত এ আন্তর্জাতিক ক্বিরাত সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান একুশে পদকপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব আলহাজ সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
প্রধান অতিথি ছিলেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। মেয়র বলেন, এ ধরনের সম্মেলন আয়োজনের জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এটি প্রতিবছর আয়োজনের জন্য আহবান জানিয়ে এতে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করছি।
সম্মেলনের সভাপতি সুফি মিজান বলেন, কুরআন মজিদ বিশ্ব মানবতার মুক্তির দিক দর্শন হিসেবে মহানবীর (দ:) ওপর অবতীর্ণ হয়েছে। কুরআন মজিদের তিলাওয়াত শুনে আমরা হৃদয়ের গভীরে প্রশান্তি খুঁজে পাই। কুরআন-সুন্নাহকে মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরলে আমরা পার্থিব কল্যাণ ও পরকালীন অনন্ত জীবনে নাজাত পেতে পারি। জমিয়তুল ফালাহ্ মসজিদে ২৩ বছর ধরে আন্তর্জাতিক ক্বিরাত সম্মেলন আয়োজনের মাধ্যমে আমরা আমাদের ঈমানী চেতনাই শাণিত করছি। এই সম্মেলন নবীওলি প্রেমি জনতার রুহানি তথা আত্মিক খোরাক জুগিয়ে যাচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি দেশি-বিদেশি অংশগ্রহণকারী ক্বারীদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান এবং সমবেত দ্বীনদ্বার কুরআনপ্রেমী জনতাকেও অভিনন্দন জানান।
কুরআন মজিদ থেকে তিলাওয়াত করেন মিসরের ড. আদেল মুহাম্মদ মোসাইলিহী ইসমাইল, শাইখ ইয়াসির শাক্বাউই (মিসর), ক্বারী হামিদ রেজা আহমাদী ওয়াফা (ইরান), ডাক্তার ক্বারী কোচার ওমর আলী (কুর্দিস্তান ইরাক), ক্বারী হাম্মদ আনওয়ার নাফীসী (পাকিস্তান), ক্বারী ইলিয়াস আল-মিহইয়াউঈ (মরক্কো) এবং বাংলাদেশের শাইখ আহমদ বিন ইফসুফ আল আযহারী প্রমুখ।
আন্তর্জাতিক ক্বিরাত সম্মেলনে অতিথি ও আলোচক ছিলেন পিএইচপি ফ্যামিলির ডাইরেক্টর ও শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের প্রধান সমন্বয়কারী আলহাজ মুহাম্মদ আলী হোসাইন সোহাগ, পিএইচপি ফ্যামিলির ডাইরেক্টর মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান আল্লামা কাযী মঈন উদ্দীন আশরাফী, জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের খতিব আল্লামা আবু তালেব মুহাম্মদ আলাউদ্দিন, আলহাজ খোরশেদুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ আনোয়ারুল হক, অধ্যাপক কামাল উদ্দিন আহমদ, মুহাম্মদ আব্দুল হাই মাসুম, আলহাজ মুহাম্মদ সাইফুদ্দিন, ড. আল্লামা জাফর উল্লাহ, আলহাজ দিলশাদ আহমেদ, হাফেজ মুহাম্মদ ছালামত উল্লাহ, এস.এম শফি, জাফর আহমদ সওদাগর, মাওলানা শাহ নুর মোহাম্মদ আলকাদেরী, হাফেজ মাওলানা আহমদুল হক, মুহাম্মদ মাহাবুবুল আলম, মুহাম্মদ আবুল মনছুর সিকদার, মঈন উদ্দিন মিটু, মুহাম্মদ শরফুদ্দিন জঙ্গি, মুহাম্মদ জহির প্রমুখ।
ক্বিরাত সম্মেলনে বিভিন্ন দরবারের সাজ্জাদানশীন, বিভিন্ন মাদ্রাসার ওলামায়ে কেরাম, শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের কর্মকর্তাবৃন্দ, আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট ও গাউসিয়া কমিটির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দসহ পিএইচপি কুরআনের আলো’র কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ