১০ শয্যার আইসিইউ ওয়ার্ড পেল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগ। ফলে ব্রেইন টিউমারসহ মস্তিষ্কের ক্ষতিগ্রস্ত রোগীদের নিবিড় সেবাদান আরও সহজ হয়ে ওঠবে।
বুধবার পুরোপুরি স্বতন্ত্র এ ওয়ার্ডটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর রোগী ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়। এর আগে চলতি বছরের জুনে চমেক হাসপাতালের ৬ষ্ঠ তলায় অবস্থিত নিউরো সার্জারি বিভাগের একটি কক্ষে আইসিইউ শয্যা স্থাপনের কাজ শুরু হয়। চট্টগ্রামের শিল্প গ্রুপ প্যাসিফিক জিন্সের ‘আলহাজ মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন ফাউন্ডেশন’র সহযোগিতায় পৃথক ১০ শয্যার আইসিইউ ওয়ার্ড স্থাপনের কাজ শুরু হয়। সম্প্রতি ওয়ার্ডটিতে শয্যা স্থাপনসহ যাবতীয় যন্ত্রপাতি স্থাপনের পর গত বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়।
নিউরো সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. সানাউল্লাহ শামীমের সভাপতিত্বে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. জসিম উদ্দিন, হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দীন এবং হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. হারুন অর রশীদ। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দিন বলেন, নিউরো সার্জারি বিভাগে যেসব রোগী ভর্তি হন সবগুলো রোগীর শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ থাকে। তাদের বেশিরভাগের আইসিইউতে রাখতে হয়। নিজস্ব বিভাগে নতুন এ আইসিইউ ওয়ার্ড চালুর ফলে মুমূর্ষু রোগীদের জীবন বাঁচাতে এই ইউনিট অনেক ভূমিকা রাখবে আশা করি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সড়ক দুর্ঘটনাসহ প্রতিদিন মস্তিষ্কের আঘাতজনিত বিভিন্ন জটিল রোগ নিয়ে নিউরো সার্জারি বিভাগে ভর্তি হন বহু রোগী। কিন্তু একদিকে আইসিইউ শয্যা সংকট, অন্যদিকে অস্ত্রোপচার কক্ষে অপ্রতুলতার কারণে রোগীদের অস্ত্রোপচার করতে হিমশিম খেতে হয় চিকিৎসকদের। যার কারণে অস্ত্রোপচার করতে মাসের অধিক অপেক্ষা করতে হচ্ছে একজন রোগীকে। এ জন্য বিভাগটির মধ্যেই পৃথক আইসিইউ শয্যার পাশাপাশি জরুরি অস্ত্রোপচার কক্ষ গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যাতে এগিয়ে আসে হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতি। রোগী কল্যাণ সমিতির সহযোগিতায় শিল্প গ্রুপ প্যাসিফিক জিন্সের ‘আলহাজ মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন ফাউন্ডেশন’র অর্থায়নে সমন্বিত এ আইসিইউ ওয়ার্ডটি স্থাপন করা হয়।
চমেক হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. সানাউল্লাহ শামীম বলেন, ব্রেইনের অস্ত্রোপচারের পর রোগীর আইসিইউ সাপোর্ট প্রয়োজন হয়। এতদিন রোগীদের অস্ত্রোপচার কিংবা কোন রোগী খারাপ হলে তাকে চতুর্থ তলার আইসিইউ ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হতো। যেহেতু পুরো হাসপাতালের রোগীরা সেখানে থাকতো, তাতে শয্যার সংকটও তৈরি হতো। তবে নতুন করে ওয়ার্ডের মধ্যেই পৃথক ১০টি আইসিইউ শয্যা স্থাপনের ফলে শয্যার সংকট যেমন ঘুচবে, তেমনি রোগীদের সেবাদান আরও সহজ হবে। বাঁচবে বহু মুমূর্ষু রোগীর প্রাণ।
পূর্বকোণ/ইব