চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪

শহীদ ওয়াসিম আকরামের নামে পার্কের ঘোষণা মেয়র শাহাদাতের

অনলাইন ডেস্ক

১৯ নভেম্বর, ২০২৪ | ১১:৫১ অপরাহ্ণ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চট্টগ্রামের প্রথম শহীদ ওয়াসিম আকরামের নামে নগরের আমবাগানে শহীদ ওয়াসিম পার্ক নামকরণের ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। আগে এ পার্কটির নাম ছিল শেখ রাসেল শিশুপার্ক।

 

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) পার্কটি পরিদর্শনকালে মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন এ ঘোষণা দেন।  মেয়র বলেন, গত ১৬ বছর গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আমাদের অনেকে শহীদ হয়েছেন।

আমরা এখনো পর্যন্ত তাদের কারো নামে কোনো পার্ক দিতে পারিনি। তাই আমরা চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে চট্টগ্রামের  প্রথম শাহাদতবরণকারী ওয়াসিম আকরামের নামে এ পার্কের নামকরণের ঘোষণা দিচ্ছি। এই পার্কের নাম হবে আজ থেকে শহীদ ওয়াসিম পার্ক।  

এটা সবার জন্য উন্মুক্ত করতে চাই। পার্কটি প্রায় সময় বন্ধ থাকে এবং ময়লা-আবর্জনার জন্য লোকজন কম আসে এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমি পার্কটি পরিদর্শন করে, স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। পার্কটি এখন থেকে উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকবে। পার্কের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কাজ করা হবে। সবাই এখানে আসতে পারবে, হাঁটতে-ঘুরতে পারবে।

 

পার্কটি নগরবাসীর সুস্থ বিনোদনের খোরাক জোগাবে জানিয়ে মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম পাহাড়-সমুদ্রনন্দিত একটা শহর। পর্যটন সম্ভাবনাময় ট্যুরিজম সিটি। তবে ঠিকমতো ফোকাস করা যাচ্ছে না বিধায় পর্যটন খাতে আমরা এগুতে পারছি না। আমাদের ছেলেরা আসলে ঘুরতে পারে না। আমাদের এখানে আসলে ওয়াকওয়ে নাই। এ কারণে পার্ক থাকার পরও কেউ ভালোভাবে ঘুরতে পারছেন না।  এখানে পাহাড়ি একটা ভাব আছে, বসার জায়গা আছে। এ পার্কটি ভালো পর্যায়ে এনে আমরা চাই সবুজের সমারোহ গড়তে। আমি অন্যান্য পার্কেও যাব। নগরবাসীর সুস্থ বিনোদনের সুযোগ বাড়াব।  

 

এরপর মেয়র আগ্রাবাদের কর্ণফুলী শিশুপার্ক পরিদর্শন করেন। এ সময় পার্কটি বন্ধ দেখতে পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মেয়র। পার্কটি দ্রুত খুলে দেওয়ার জন্য প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ এবং পার্কের পাশেই আবদ্ধ একটি মাঠকে শিশুদের খেলার স্থানে রূপান্তরের ঘোষণা দেন মেয়র।   

 

এ সময় অতি বাণিজ্যিকীকরণের ফলে চট্টগ্রামের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে মেয়র বলেন, গত এক দশকে মানুষের সুস্থ বিনোদনের স্থানগুলোতে অতি বাণিজ্যিকীকরণ হয়েছে। যেমন বিপ্লব উদ্যানে দৃষ্টিনন্দন একটা পার্ক ছিল।  নয়নাভিরাম সৌন্দর্য সেখানে ছিল। কিন্তু সেটা কমপ্লিটলি ধ্বংস করে দিয়ে একটা মাফিয়া চক্র সেখানে দোকান তো আগেই করেছে কিছু এখন নতুনভাবে ওই পার্কটির মধ্যেই এমনভাবে ডিজাইন করেছে ওখানে আরো ২০-২৫টা দোকান দেওয়ার পাঁয়তারা করেছে। সেদিন আমরা সেটা ভিজিট করে যে স্ট্রাকচার ছিল সেটাকে ভেঙে দিয়েছি এবং আমরা সেখানে ডিকলার করেছি এটা একটা নয়নাভিরাম সুন্দর গ্রিন পার্ক হবে। যেহেতু শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এ উদ্যান থেকে স্বাধীনতার সূচনা করেছিলেন সেহেতু ওই ঐতিহাসিক পটভূমির কথাগুলো সেখানে লেখা থাকবে যাতে নতুন প্রজন্ম বিপ্লব কেন হয়েছে এবং মুক্তিযুদ্ধের যে প্রকৃত ইতিহাস তা তারা জানতে পারবে।  

 

আমি বন্ধ থাকা আগ্রাবাদের কর্ণফুলী শিশুপার্ক পরিদর্শন করেছি। পার্কটি দ্রুত খুলে দেওয়ার জন্য প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ এবং পার্কের পাশেই আবদ্ধ একটি মাঠকে শিশুদের খেলার স্থানে রূপান্তরের জন্য কাজ করব। আগ্রাবাদ ডেবাকেও দখলদারদের হাত থেকে মুক্ত করে জনগণের সুস্থ বিনোদনের জন্য উন্মুক্ত করার পরিকল্পনা আছে আমার।  

 

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবুল কাশেম, নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার জাহান, মেয়রের একান্ত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরী মারুফ প্রমুখ।

 

 

পূর্বকোণ/আরআর/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট