স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে নগরীর ঐতিহ্যবাহী হাজারী গলির ব্যবসায়িক কার্যক্রম। হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় সংগঠন ইসকনকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট শেয়ারকে কেন্দ্র করে যৌথ বাহিনীর উপর হামলার ঘটনায় তিন দিন বন্ধ থাকার পর গত শনিবার থেকে হাজারী গলির দোকান-পাট খোলেন ব্যবসায়ীরা।
গতকাল সোমবার এই এলাকায় ব্যবসায়িক কার্যক্রম ছিল একেবারে স্বাভাবিক। গতকাল দুপুরে হাজারী গলিতে গিয়ে দেখা যায়, টেরিবাজার বকশির বিট এলাকা দিয়ে হাজারী গলিতে প্রবেশের প্রধান গেটে পাহারা দিচ্ছেন কয়েকজন পুলিশ সদস্য। ভেতরের সবগুলো ওষুধের দোকান খোলা রয়েছে। সাত-আটটি স্বর্ণের দোকান ছাড়া বাকি সব স্বর্ণের দোকানও খোলা ছিল এ সময়। ক্রেতাদের সমাগম ছিল গলিজুড়ে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ওষুধ দোকানদার জানান, নগরী ও জেলার বিভিন্ন থানায় পাইকারি ওষুধ সরবরাহের প্রধান বাজার হাজারী গলি।
কয়েকদিন বন্ধ থাকায় আজকে (সোমবার) গ্রাহকের সমাগম অন্য সময়ের তুলনায় বেশি। সব ওষুধের দোকান খোলা হলেও কয়েকটি স্বর্ণের দোকান বন্ধ রয়েছে। বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক প্রণব সাহা জানান, হাজারী গলিতে ২৮০টি স্বর্ণের দোকান রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দোকান খুলতে বলা হলেও মূলত ব্যবসায়ীরা শনিবার থেকে দোকান খুলেছেন। সোমবার (গতকাল) পুরোদমে পুরনো আমেজে ফিরেছে হাজারী গলি।
সাত-আটটি দোকান বন্ধ থাকা প্রসঙ্গে প্রণব সাহা বলেন, গত ৬ নভেম্বরের ঘটনার পর থানায় দায়ের করা মামলায় ৪৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৫-৭ জন ছাড়া বাকিরা দোকানের কর্মচারী। কয়েকজন পথচারীও রয়েছেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ৫০০-৬০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। গত দুই দিনেও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মূলত গ্রেপ্তার আতঙ্কেই কয়েকটি স্বর্ণের দোকানদার তাদের দোকান খুলেননি।
এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সাথে আমাদের কথা হয়েছে। তারা আর কাউকে গ্রেপ্তার করা হবে না এবং যারা গ্রেপ্তার হয়েছে তাদের জামিনের ব্যপারে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। হাজারী গলির ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে আগামী শনিবার জেলা প্রশাসক, সেনাবাহিনী, সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের সমন্বয়ে একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানান তিনি। বাংলাদেশ কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির চট্টগ্রাম শাখার সহ-সভাপতি জয় প্রকাশ দাশ জানান, হাজারী গলিতে প্রায় ৭০০ ওষুধের দোকান রয়েছে।
গত মঙ্গলবার যৌথ বাহিনীর উপর হামলার ঘটনার পর থেকে বন্ধ ছিল সব ওষুধের দোকান। তিন দিন বন্ধ থাকার পর গত শনিবার থেকে সব ওষুধের দোকান খোলা হয়েছে।
পূর্বকোণ/ইব