চট্টগ্রাম সোমবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৪

সর্বশেষ:

চবি শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ-যুবলীগের সশস্ত্র হামলা, আহত ৩

চবি সংবাদদাতা

২১ অক্টোবর, ২০২৪ | ১২:১৯ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সশস্ত্র হামলার অভিযোগ উঠেছে। এতে তিনজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। সোমবার (২১ অক্টোবর) ভোর ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেলগেট এলাকার একটি রেস্টুরেন্টে ভাঙচুর চালায় যুবলীগ নেতা হানিফের অনুসারীরা। এ সময় তারা কয়েক রাউন্ড গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এ ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে রেলগেট এলাকায় গিয়ে হানিফের একটি দোকান ভাঙচুর করেন। এতে যুবলীগের নেতাকর্মীরা ছাত্রদের সাথে এলাকাবাসীর সংঘর্ষ হয়েছে বলে গুজব রটিয়ে দেয়। পরে শিক্ষার্থীরা ফিরে আসার সময় যুবলীগ হামলা করলে একজন ছাত্র আহত হন।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী হাবিবুল্লাহ খালেদ জানান, ক্যাম্পাসে যুবলীগের সন্ত্রাসীরা বোমাবাজি করছে শুনে সকালেই আমরা জিরো পয়েন্টে আসি। পুলিশের জন্য অপেক্ষা করলেও রেলগেটে সন্ত্রাসীরা অবস্থান নেওয়ায় তারা আসতে পারছে না বলে শোনা যায়। পরে আমরা প্রক্টরসহ রেলগেট এলাকায় যাই এবং অবস্থান নেই। এ সময় যুবলীগের নেতারা আমাদের দিকে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। পরে আমরা ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়।

 

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ইসহাক বলেন, পুলিশ আমাদের ন্যূনতম সহযোগিতা করেনি। এত বিশাল ঘটনা, অথচ ওসি পুলিশ পাঠিয়েছেন তিনজন। এছাড়া তারা আবার সন্ত্রাসীদের কারণে রেলগেট থেকে আসতে পারছেন না।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ তানভীর হায়দার আরিফ বলেন, স্থানীয় একজনের দোকানে সন্ত্রাসীরা ভাঙচুর চালালে ঘটনার সূত্রপাত হয়। রাত ৪টায় এখানে প্রচুর ককটেল ফোটানো হয়। এর প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়। সন্ত্রাসীরা গুজব রটিয়ে দেয় এলাকাবাসীর সাথে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়েছে।

 

তিনি আরও বলেন, সকালে শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমরা রেলগেট এলাকায় যাই। সেখানে স্থানীয়দের সাথে কথা হয়েছে। দুপুর ২টায় একটি মিটিং হবে, যেখানে এলাকার গণ্যমান্য তিনজন ব্যক্তি, ছাত্র প্রতিনিধি ও প্রক্টরিয়াল বডি থাকবে। মিটিং থেকে একটি সমন্বয় কমিটি করা হবে যাতে ভবিষ্যতে এমন সমস্যা হলে দ্রুত সমাধান করা যায়।

 

হানিফের ব্যাপারে প্রক্টর বলেন, তার নামে একাধিক জঘন্য মামলা রয়েছে। পুলিশ বলছে তারা হানিফকে খুঁজছে, কিন্তু পাচ্ছে না। অন্যদিকে এলাকাবাসী বলছে, সে রাতে নিয়মিত এলাকায় আসে।

 

উল্লেখ্য, ৫ আগস্ট রাতে রেলক্রসিং এলাকায় শিক্ষার্থীদের উপর হামলাসহ দর্শন বিভাগের শিক্ষক ড. মোহাম্মদ মোজাম্মেল হকের গাড়িতে হামলা চালায় যুবলীগ নেতা হানিফ ও তার অনুসারীরা। তাদের হামলায় তখন তিনজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছিলেন।

 

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে রেলওয়ের জায়গা দখল করে সবগুলো দোকানের ভাড়া নেয় হানিফ। তার ছোটভাই ছাত্রলীগ নেতা মো. ইকবাল পুরো ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় ডিশের লাইন এবং ওয়াইফাইয়ের ব্যবসা করে নিম্নমানের ইন্টারনেট দিয়ে দীর্ঘদিন এই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। অন্য কাউকে তারা এখানে ব্রডব্যান্ডের ব্যবসা করতে দেয় না বলে অভিযোগ রয়েছে।

 

পূর্বকোণ/ইব/মাহমুদ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট