চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

বিএসসি'র জাহাজ বাংলার জ্যোতি

জাহাজে বিস্ফোরণ জমে থাকা গ্যাসে

নিজস্ব প্রতিবেদক

১ অক্টোবর, ২০২৪ | ১১:৩৫ অপরাহ্ণ

জাহাজের সম্মুখভাগে অবস্থিত ফোর পিক স্টোরে (জাহাজের রশি, নোঙর, স্পেয়ার পার্টস রাখার স্থান) বিস্ফোরণের ফলেই এমটি ‘বাংলার জ্যোতিতে’ আগুনের সূত্রপাত হয় বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে বিপিসির গঠিত তদন্ত কমিটি। ফোর পিক স্টোরে বিপুল পরিমাণ ফ্লামেবল গ্যাস জমা হওয়ায় এ বিস্ফোরণ ঘটতে পারে বলেও কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

 

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) বিপিসির প্রধান কার্যালয়ে এই প্রতিবেদন জমা দেন কমিটির আহ্বায়ক ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. শরিফ হাসনাত। এ সময় কমিটির অন্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। প্রতিবেদনে তদন্ত কমিটি পাঁচটি পর্যবেক্ষণ এবং চারটি সুপারিশ তুলে ধরেছে বলে জানা গেছে।

 

গত সোমবার সকাল ১১টার দিকে পতেঙ্গায় ইস্টার্ন রিফাইনারির ৭ নম্বর ডলফিন জেটিতে বিএসসির মালিকানাধীন ‘বাংলার জ্যোতি’ ট্যাংকার জাহাজে বিস্ফোরণের পর অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এ দুর্ঘটনায় জাহাজের ডেক ক্যাডেট সৌরভ কুমার সাহা, বিএসসির ফোরম্যান নুরুল ইসলাম ও শ্রমিক মো. হারুন নিহত হন। এরপর কারণ অনুসন্ধানে একটি কমিটি গঠন করে বিপিসি।

 

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে জানানো হয়- আবুধাবি থেকে প্রায় ৯৮ হাজার ৩৮৩ মেট্রিক টন মারবান ক্রুড অয়েলবাহী মাদার ভ্যাসেল এমটি ওমেরা লিগেসি গত ১৭ সেপ্টেম্বর কুতুবদিয়া বহির্নোঙরে আসে। ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ক্রুড লাইটারিং শুরু হয়। ৩০ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে এমটি বাংলার জ্যোতি ১১ হাজার ৭১৬ দশমিক ৪৪৬ মেট্রিক টন ক্রুড অয়েল নিয়ে ডলফিন জেটি-৭ এ আসে। সকাল ১০টায় খালাস শুরু হয়।

 

এরপর সকাল ১০টা ৫৪ মিনিটে ক্রুড খালাসের সময় জাহাজের সম্মুখভাগে বিস্ফোরণ ঘটে এবং আগুন লাগে। দুপুর সাড়ে ১২টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। অগ্নিকাণ্ডে তিনজন নিহত হন। দুর্ঘটনার আগে জাহাজ থেকে প্রায় ৮০০ মেট্রিক টন ক্রুড অয়েল খালাস সম্পন্ন হয়েছে। জাহাজে বিদ্যমান অবশিষ্ট প্রায় ১০ হাজার ৯১৬ দশমিক ৪৪৬ মেট্রিক টন কার্গো নিরাপদে রয়েছে। আপাত দৃষ্টিতে কার্গোর গুণগত মান অক্ষুন্ন রয়েছে।

 

বিদ্যমান অবশিষ্ট কার্গো খালাসের লক্ষ্যে জাহাজের নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণের জন্য বিস্ফোরক অধিদপ্তরের প্রতিনিধি পরিদর্শন করবেন। জাহাজটি নিরাপদ হিসেবে প্রত্যায়িত হলে অন্যান্য মেশিনারিজ ঠিক থাকা সাপেক্ষে কার্গো খালাসের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। কার্গো খালাস সম্পন্ন করতে প্রায় ২২ ঘণ্টা সময়ের প্রয়োজন হবে। কার্গো খালাস সম্পন্ন করা হলে জাহাজটি মেরামত/সংস্কারের উদ্দেশ্যে সরিয়ে নেয়া হবে।

 

বিপিসির গঠিত কমিটি চারটি সুপারিশও করেছে তদন্ত প্রতিবেদনে। সেগুলো হচ্ছে- বিএসসির পক্ষ থেকে একটি কারিগরি কমিটি করা। এসপিএম উইথ ডাবল পাইপলাইন অবিলম্বে চালু করা প্রয়োজন। এর আগ পর্যন্ত এমটি বাংলার জ্যোতি জাহাজ কার্যকরভাবে ব্যবহার উপযোগী করা সম্ভব কি না বা সম্ভাব্য বিকল্পের বিষয়ে বিএসসি’র মতামত গ্রহণ করা এবং জেটিতে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা আরও আধুনিকায়ন করা।

 

পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট