চট্টগ্রামে গেল মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১১ জন। যা চলতি বছরে একমাসে রেকর্ড মৃত্যু। এছাড়ও এ মাসেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯০৭ জন যা আগস্টের চেয়ে সাড়ে চারগুণ বেশি। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রকাশিত ডেঙ্গু রোগীর তথ্য পর্যালোচনায় এসব পাওয়া গেছে।
এদিকে, মৃত্যু ও হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার এ সংখ্যা ডেঙ্গুর সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আশঙ্কা বাড়াচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে সামনে আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে ডেঙ্গুর প্রকোপ। তাই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও দায়িত্বশীল হওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, জানুয়ারি মাসে মাত্র ৬৯ জন, ফেব্রুয়ারি মাসে ২৫ জন, মার্চে ২৮ জন, এপ্রিলে ১৮ জন, মে মাসে ১৭ জন, জুন মাসে ৪১ জন করে রোগী ভর্তি হয়েছিল। জুলাই মাসে তা বেড়ে ১৯৮ জনে দাঁড়ায়। অগাস্ট মাসে ২০২ জন রোগী ভর্তি হয়েছে হাসপাতালে। আর সেপ্টেম্বর মাসে ৯০৭ জনে এসে দাঁড়িয়েছে। এ সংখ্যা শুধুমাত্র হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার চিত্র। তবে বাস্তব সংখ্যা আরও কয়েকগুণ বেশি বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, পরিস্থিতি এখন যেমন রয়েছে, হয়তো সমানের দিনে আরও বাড়তে পারে। সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ও মৃত্যু দুটোই রেকর্ড গড়েছে। তাই এখন থেকেই সকলকে সচেতন থাকতে হবে। এদিকে, এডিস মশার কামড়ে সেপ্টেম্বর মাসে যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিল নগরীর তিন এলাকার বাসিন্দা। মশার উৎপত এবং হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় নগরীর চিহ্নিত এলাকাগুলোতে জরিপের কাজ শুরু করেছে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন। যেখানে বেশ কিছু এলাকায় এডিস মশার লার্ভাও সংগ্রহ করা হয়েছে। অন্যদিকে, এখনও মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম জোরদার না করা হয়, তাহলে বাকি দিনগুলোতে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার হতে হবে বলেও আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকসহ কিটতত্ত¡বিদরা।
ডেঙ্গুতে নারীর মৃত্যু, নতুন ৬৬ রোগী হাসপাতালে : চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে রিফা আক্তার (৩০) নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বান্দরবানের এ বাসিন্দা। গতকাল চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রকাশিত দৈনিক ডেঙ্গু প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। এ নিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, বিগত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৬৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এদেরমধ্যে ২৩ জন চমেক হাসপাতালে, ১৬ জন বিআইটিআইডি হাসপাতালে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৪ জন, ১২ জন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে, সম্মিলিত বেসামরিক হাসপাতালে ৩ জন এবং ৮ জন বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৫০৫ জনে এসে দাঁড়িয়েছে।
পূর্বকোণ/ইব