চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

নোনা ইলিশ তৈরিতে ব্যস্ততা

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ২:০৩ অপরাহ্ণ

ইলিশ খেতে কে না পছন্দ করে। তাজা ইলিশের একরকম স্বাদ আবার নোনা ইলিশের স্বাদ আরেক রকম। নোনা ইলিশের কদর রয়েছে চট্টগ্রামবাসীর কাছে।

 

 

এখন ইলিশের মৌসুমে ব্যস্ততা বেড়েছে নোনা ইলিশ তৈরিতে। নগরীর আছদগঞ্জ, খাতুনগঞ্জ শুঁটকি পল্লী, দক্ষিণ কাট্টলী ও ফিশারিঘাট এলাকায় গড়ে উঠেছে নোনা ইলিশের অন্তত অর্ধশত গুদাম। নোনা ইলিশ তৈরিতে এসব এলাকায় শ্রমিকরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। জানা যায়, সাগর থেকে ইলিশ মাছ নিয়ে ফেরার পথে বরফ ও মাছের চাপে কিছু সংখ্যক মাছ নরম হয়ে যায়। এক শ্রেণির ব্যবসায়ী অল্পমূল্যে এই মাছ কিনে লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করে কাটা বা নোনা ইলিশ তৈরি করে। ইলিশের মৌসুমে তিন মাসে প্রায় কোটি টাকার নোনা ইলিশ বিক্রি হয়। চাক্তাই শুঁটকি পট্টির শ্রমিক পলাশ দাশ ও রায়হান বলেন, ইলিশ মাছকে নোনা ইলিশে পরিণত করার জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু পদ্ধতি আছে।

 

 

১ কেজি ইলিশ মাছে ২৫০ গ্রাম লবণ এবং ২ টেবিল চামচ হলুদের গুঁড়া দরকার হয়। মাছের পেট কেটে ভালো করে ধুয়ে নিয়ে ১ ঘণ্টার জন্য পানি ঝরাতে হবে। পানি ঝরানো হয়ে গেলে মাছের গায়ে খুব ভালোভাবে হলুদ-লবণের মিশ্রণটি মিশিয়ে দিতে হয়। এরপর বাঁশের তৈরি ঝুড়ির মধ্যে বা পরিষ্কার কোন জায়গায় সারি সারি করে রেখে দিতে হবে। তারপর লবণ পানি ঝরে গেলে রোদে শুকাতে হয়। সরেজমিনে দেখা গেছে, এখন মৌসুম শুরু, সাগর থেকে তাই দিনে দু’বার করে ইলিশ ঢুকছে এসব গুদামে। দক্ষিণ কাট্টলীঘাট ও ফিশারিঘাটের গুদামে ব্যস্ত সময় পার করছে শ্রমিকরা। প্রথমে ইলিশ মাছ ধুয়ে পরিষ্কার করে নেওয়া হয়। তারপর নাড়িভুঁড়ি কেটে বের করে নারী শ্রমিকেরা। এরপর ছোট আকৃতির মাছ হলে পিঠ বরাবর দুই ফালি করে কাটা হয়, মাঝখানের অংশে লবণ ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। আর বড় আকৃতির হলে দুই পাশে ফালি করে কাটা হয়, তারপর পুরো মাছে লবণ দিয়ে সাজিয়ে রাখা হয়।

 

শ্রমিক তাজু মিয়া বলেন, এখানে দুই যুগের বেশি সময় ধরে কাজ করছি। আমাদের এ সময় বেশ ভালো আয় হয়।
ব্যবসায়ী ও গুদাম মালিক মুজিবর রহমান বলেন, নোনা ইলিশ কেনার পর আমরা বিশেষ ধরনের কুয়ায় সাজিয়ে রাখি। ইলিশের ওপর বাঁশের মাচা দেওয়া হয়। মাচার ওপর প্লাস্টিক দিয়ে ঢেকে ওপরে পানি দিয়ে রাখা হয়। এভাবে রাখলে এক বছর পর্যন্ত ইলিশ সংরক্ষণ করা যায়। আড়তদার নাছির ভূঞাঁ জানান, চট্টগ্রামের এক একটি আড়ত থেকে প্রতি মৌসুমে কয়েক লাখ টাকার নোনা ইলিশ বিক্রি হয়। এখান থেকে বছরে অন্তত তিন-চার কোটি টাকার ইলিশ সরবরাহ হয়। চাহিদা থাকায় চট্টগ্রামে নোনা ইলিশকে ঘিরে একধরনের শিল্প গড়ে উঠেছে ফিশারিঘাট ও কাট্টলী এলাকায়। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আরও বিস্তৃত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

 

 

পূর্বকোণ/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট