চট্টগ্রাম বুধবার, ০৩ জুলাই, ২০২৪

কর্মকর্তাদের গাফেলতি, চসিকের সাড়ে ৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ!

ইমাম হোসাইন রাজু

১ জুলাই, ২০২৪ | ১০:৫০ পূর্বাহ্ণ

তিন বছর ধরে চসিকের ব্যাংক হিসাব নম্বর থেকে অর্থ চলে যাচ্ছে অন্যত্রে। অথচ এ নিয়ে ‘মাথা ব্যথাই’ ছিল না খোদ চসিকের হিসাব বিভাগের। এমন নিশ্চুপে একে একে জাইকাসহ প্রায় অর্ধশত প্রতিষ্ঠানের জমাকৃত প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা উত্তোলন হয় চসিকের হিসাব নম্বর থেকে। যা পরবর্তীতে সুকৌশলে আত্মসাৎ করা হয়। ভাউচার পরিবর্তনের মাধ্যমে এসব অর্থ আত্মসাৎ করা হলেও খবর নেই হিসাব শাখার।
অগ্রণী ব্যাংকের একটি শাখায় চসিকের হিসাব নম্বর থেকে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় দুদকের দায়েরকৃত মামলার তদন্তে ওঠে আসে এমন চিত্র। এ ঘটনায় চসিকের প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তাসহ তিনজন এবং ব্যাংকের এক কর্মকর্তার দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পায় দুদক। এ ঘটনায় আলোচ্য চারজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে দুদক।

 

এদিকে ব্যাংকের হিসাব নম্বর থেকে সরকারি অর্থ সুকৌশলে আত্মসাতের ঘটনায় অগ্রণী ব্যাংকের তিন কর্মকর্তাসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন (চার্জশিট) দাখিল করেছেন দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা। দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক মো. ফয়সাল কাদের সম্প্রতি এ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

 

তদন্ত প্রতিবেদনে চসিকের প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির চৌধুরী, হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা আশুতোষ দে ও হিসাব রক্ষক মাসুদুল ইসলাম এবং অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক সিনিয়র অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে অর্পিত দায়িত্ব পালনে অবহেলায় তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়। অন্যদিকে, মামলায় এজহারভুক্ত আসামি অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক অফিসার রফিক উদ্দিন কোরাইশী ছাড়াও সাবেক সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার শুভম দেওয়ান, গাজী আরিফুর রহমান এবং গ্রাহক মো. সুমন মিয়াকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়।

 

এর আগে ২০২১ সালে ১৭ নভেম্বর চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের হিসাব নম্বর থেকে ৮৭ লাখ ৪২ হাজার ৯৭৭ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় অগ্রণী ব্যাংকের আগ্রাবাদ কর্পোরেট শাখার অফিসার মো. রফিক উদ্দিন কোরাইশীর বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলায় রফিক উদ্দিনকে একমাত্র আসামি করা হয়। মামলায় একজন আসামি হলেও দুদকের তদন্তে ঘটনায় জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় ৪ জনকে আসামি করা হয়।
দুদকের তদন্তে ওঠে আসে, ভাউচার পরিবর্তনের মাধ্যমে জাইকাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রায় অর্ধশত চেকের মাধ্যমে সুমন মিয়ার একাউন্টে ৩ কোটি ৪৫ লাখ ৩ হাজার ৫২৭ টাকা সরিয়ে নেয়া হয়। এরপর তা সুকৌশলে উত্তোলন করা হয়। এ কাজে জড়িত ছিলেন ব্যাংক কর্মকর্তা রফিক উদ্দিন কোরাইশী ছাড়াও সাবেক সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার শুভম দেওয়ান, গাজী আরিফুর রহমান। তারা নিজেদের পরস্পর যোগসাজসে এসব অর্থ আত্মসাত করা হয়। চার্জশিটে ২৪ জনকে সাক্ষী করা হয়।

পূর্বকোণ/এসএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট