চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী জালালাবাদ জমির হাউজিং এলাকায় ভবন মালিক মো. নেজাম পাশা হত্যা মামলায় মো. হাসান (৪৫) নামে এক দারোয়ানের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রবিবার (২৬ মে) চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁঞার আদালত এই রায় দেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওমর ফুয়াদ জানান, ১৬ জনের সাক্ষ্য-প্রমাণে ভবন মালিক মো.নেজাম পাশা হত্যা মামলায় আসামি মো.হাসানের বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১ বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও ২০১ ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। রায়ের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিল। সাজা পরোয়ানা মূলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, জমির হাউজিং সোসাইটির ভিআইপি কাঁচা সড়কে মো. নেজাম পাশা ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেন। প্রতি সপ্তাহে ভবনের কাজ দেখতে এবং শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করতে সেখানে যেতেন নেজাম। ভবনের নির্মাণকাজ শুরুর সময় সেখানে মো. হাসানকে দারোয়ানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি নির্মাণকাজে তার পছন্দের লোকজনকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য নেজামকে বিভিন্ন সময় চাপ দিতেন। এ নিয়ে মনোমালিন্য হওয়ায় হাসানকে কাজে রাখবেন না বলে জানিয়ে দেন।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হাসান ২০২১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে সাড়ে চারটা থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ছয়টার মধ্যে যেকোন সময় মো. নেজাম পাশাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। নগরীর খুলশী থানার জালালাবাদ জমির হাউজিং সোসাইটিস্থ ভিআইপি কাঁচা রোডের শেষ মাথায় আনিসুর রহমানের প্লটের সামনে মরদেহ গুম করার উদ্দেশে পরিত্যক্ত পলিথিন, কাদা বালি ও ময়লার স্তুপের ভিতরে ফেলে দেওয়া হয়। নেজাম পাশা ফটিকছড়ি পৌরসভার ধুরং এলাকার বাসিন্দা।
নেজাম পাশাকে (৬৫) হত্যার ঘটনায় স্ত্রী সেলিনা ইয়াসমিন বাদী হয়ে নগরীর খুলশী থানায় ভবনের দারোয়ান মো. হাসানকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তৎকালীন খুলশী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আনোয়ার হোসেন তদন্ত শেষে ২০২২ সালের ২৩ জানুয়ারি আদালতে হাসানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। একই বছরের ১৯ জুলাই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।
পূর্বকোণ/পিআর/এএইচ