চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪

মহাষষ্ঠীর বোধনের মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসব শুরু আজ মহাসপ্তমী

নিজস্ব প্রতিবেদক

৫ অক্টোবর, ২০১৯ | ২:৩৫ পূর্বাহ্ণ

মহাষষ্ঠীর বোধনের মধ্য দিয়ে গতকাল শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। জগতের মঙ্গল কামনায় কৈলাস থেকে এবারে দেবী এসেছে ঘোড়ায় চড়ে। আর বিজয়া দশমীর মধ্যদিয়ে আবার কৈলাসে ফিরবে ঘোড়ায় চড়ে। বিজয়া দশমী পর্যন্ত ঢাকের বাদ্যে মুখরিত থাকবে পূজাম-পগুলো। গতকাল নগরীর জামালখান কুসুম কুমারী সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পাঁচদিনের এ শারদীয় দূর্গোৎসব উদ্বোধন করেছেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। পূজা উদযাপন পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি শ্যামল কুমার পালিত বলেন, সারাদেশে ৩১ হাজার ১০০টির বেশি ম-পে এবার শারদীয় দুর্গোৎসব পালন করা হচ্ছে। জেলা পর্যায়ের এবারও দেশের সবচেয়ে বেশি দুর্গাপূজা মন্ডপ চট্টগ্রাম জেলায় হয়েছে। এখানকার ১৫টি উপজেলায় এবার ১ হাজার ৮শ ৭৪টি ম-পে এবং মহানগরের ১৬টি থানায় ২৭০টি পূজাম-পে শারদীয় দুর্গাপূজা চলছে। মহানগর ও জেলা মিলিয়ে চট্টগ্রামে এবার ২ হাজার ১৪৪টি ম-পে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আমাদের জানা

মতে, জেলা পর্যায়ে দেশের অন্য কোনো জেলায় চট্টগ্রামের মতো এতো দুর্গাপূজা ম-প নেই। চট্টগ্রাম জেলার উপজেলা পর্যায়ে সবচেয়ে বেশী পুজাম-প রাউজানে ২৩২টি। কম পূজাম-প কর্ণফুলী উপজেলায় ১৩টি। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি এডভোকেট চন্দন তালুকদার বলেন, এবছর নগরীতে ১৬টি থানায় ২৭০টি ম-পে পূজা চলছে। পরিষদের উদ্যোগে পূজার আয়োজন করা হয়েছে জে এম সেন হলে। দুর্গাপূজার উৎপত্তিস্থল বোয়ালখালীর মেধস মুনির আশ্রমে মহালয়ার মাধ্যমে দেবীপক্ষের সূচনা হয়। সেখানে শাস্ত্রবিধি অনুযায়ী মায়ের পূজা চলছে বলে জানিয়েছেন আশ্রমের অধ্যক্ষ বুলবুলানন্দ ব্রহ্মচারী।

পূজা উদযাপন পরিষদ মহানগরের উদ্যোগে গতকাল নগরীর জেএমসেন হলে শ্রী শ্রী শারদীয়া দুর্গোৎসবের মহাষষ্ঠী অনুষ্ঠিত হয়। ১ম পর্বে দুপুর ২টায় মাতৃসম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন পরিষদের মহিলা সম্পাদিকা রুমকি সেনগুপ্ত। উদ্বোধক ছিলেন মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি এডভোকেট চন্দন তালুকদার। প্রধান অতিথি ছিলেন মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ওয়াসিক আয়শা খান এমপি। ২য় পর্বে সন্ধ্যায় প্রতিমা মঞ্চের আবরণ উন্মোচন করেন বাঁশখালী ও তুলসী ধাম চট্টগ্রাম এর মোহন্ত মহারাজ স্বামী সুদর্শানন্দপুরী মহারাজ। এরপর আলোচনা সভা, বস্ত্র ও পুরষ্কার বিতরণ করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুবর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি রাখাল দাশ গুপ্ত, বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার নিতাই কুমার ভট্টাচার্য্য। প্রধান বক্তা ছিলেন রাউজান পৌরসভার মেয়র দেবাশীষ পালিত।

এছাড়া নগরীর হাজারী লেইন, জেএমসেন হল, চেরাগী পাহাড়, রাজাপুকুর লেইন, চকবাজার, পাথরঘাটা, আগ্রাবাদ, পতেঙ্গা, মুরাদপুরসহ বিভিন্ন স্থানে ম-পে ম-পে অধিষ্ঠিত হয়েছেন দেবী দূর্গা। সঙ্গে লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক ও গণেশ। এই চালচিত্রে আছেন দেবাদিদেব শিবও। লক্ষ্মী সমৃদ্ধি ও সরস্বতী জ্ঞানের প্রতীক। কার্তিক হচ্ছেন দেবসেনাপতি, শত্রুনাশকারী। আর গণেশ সর্বসিদ্ধিদাতা অর্থাৎ মানুষের কামনা পূরণকারী। দুর্গতিনাশিনী দুর্গা এসেছেন বিশ্ব শান্তির জন্য তথা সবার মঙ্গলের তরে। প্রতি শরতে মর্ত্যে তাঁকে বরণ করে নেওয়া হয় ঢাকের বাদ্য, শঙ্খ আর উলুধ্বনিতে। ভক্তকুলের আবাহন আর পুরোহিতের মন্ত্রোচ্চারণে দেবী দুর্গা প্রসন্ন হন। পূজার সময়কালে সন্ধ্যায় ধূপ-ধুনোয় ভক্তদের নৃত্য আরতি, আর ঢাক-ঢোল, কাঁসর-মন্দিরা বাদ্য, বর্ণাঢ্য আলোকচ্ছটায় উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছে পূজাম-পগুলো। একি ভাবে ১২৫তম দুর্গাৎসব পালন উপলক্ষে গোসাইলডাঙ্গা সার্বজনীন একতা গোষ্ঠী ১২৫টি প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে উদ্বোধন করা হয়। এখনো পর্যন্ত নগরীর বড় দুর্গাপূজা ম-পের মধ্যে এটি একটি। একতা গোষ্ঠীর উদ্যোগে গোসাইলডাঙ্গা সার্বজনীন দুর্গাপূজার এভারের থিম ‘জাগ্রত হোক মানবতাবোধ’। নগরীর হাজারী লেইন পূজাম-পেও এবারের দুর্গাপূজা ‘এ জগত আমার মা’ থিম নিয়ে আয়োজন করা হয়েছে।
আজ ব্যাপক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মহাসপ্তমী উদযাপিত হবে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট