চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪

ব্যবসাবান্ধব সংশোধিত ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্স বিধিমালা চাই

নিজস্ব প্রতিবেদক

৭ মে, ২০২৪ | ১১:৫৫ পূর্বাহ্ণ

দেশে সময়ের সাথে সাথে চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তার তাগিদে বিভিন্ন সময়ে অনেক আইন পরিবর্তন হয়েছে। তাই দেশের লজিস্টিক খাতের বৃহত্তর স্বার্থে যেসব আইনের ধারার কারণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে আগামী বাজেটে তার সংশোধন চাই। অর্থাৎ ব্যাবসাবান্ধব সংশোধিত ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্স বিধিমালা চান বলে জানিয়েছেন বাফা সহ-সভাপতি খায়রুল আলম সুজন।

আসন্ন জাতীয় বাজেট ২০২৪-২০২৫ প্রসঙ্গে পূর্বকোণ প্রতিনিধির সঙ্গে ‘বাজেট ভাবনা’ নিয়ে আলোচনায় তিনি এই দাবি জানান।

 

ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্স (লাইসেন্সিং ও কার্য পরিচালনা) বিধিমালা, ২০০৮ সংশোধনের প্রস্তাব জানিয়ে খায়রুল আলম সুজন বলেন, বাংলাদেশ সরকার ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে বৈদেশিক মূদ্রা নিয়ন্ত্রক আইন, ১৯৪৭ সংশোধন করে ওই আইনের ১৮(অ) ধারা বিলুপ্ত করে। কিন্তু ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্স (লাইসেন্সিং ও কার্য পরিচালনা) বিধিমালা সংশোধন না হওয়ায় ফ্রেইট ফরওয়ার্ডদের এখনো লাইসেন্স আবেদনে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনপত্রের প্রয়োজন হয়। যেহেতু বৈদেশিক মূদ্রা আইন সংশোধন করা হয়েছে, তাই বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনপত্রের প্রয়োজনীয়তা নেই। এজন্য ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্স (লাইসেন্সিং ও কার্য পরিচালনা) বিধিমালাতেও সংশোধন এনে সংশ্লিষ্ট ধারা ৬(ঙ) ও ৯(ঘ) অর্থাৎ ‘প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রক আইন, ১৯৪৭ মোতাবেক বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনপত্র’ বাতিল করা প্রয়োজন।

 

তিনি আরো বলেন, লাইসেন্স আবেদনের ক্ষেত্রে লাইসেন্সিং বিধিমালায় আয়কর বিবরণী আদেশ (আই.টি ৮৮ এবং আই.টি-১০বি) এর কপি দাখিলের বিধান বাতিল করা হোক। এছাড়া ফ্রেইট ফরওয়ার্ডিং সেবার সংঙ্গে সংশ্লিষ্ট কজের অভিজ্ঞতার পরিবর্তে বাফার সদস্য সনদ দাখিলের বিধান চালু করা প্রয়োজন। এছাড়া বন্দর কর্তৃপক্ষের তালিকাভূক্তির সনদপত্র ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্স এসোসিয়েশনের সদস্যভূক্তির সদনপত্র দাখিলের বিধানেও বাফার দেওয়া সাময়িক সদস্যপদ সনদ জমার বিধান চালু করা প্রয়োজন।

 

লাইসেন্সের মেয়াদ বৃদ্ধি প্রসঙ্গে খায়রুল আলম সুজন বলেন, লাইসেন্স নবায়নের বা মেয়াদ পূর্তির পূর্বে বাতিল করা না হলে লাইসেন্স প্রদানের তারিখ হতে লাইসেন্সের মেয়াদ ৪ বছর বহাল থাকার বিধান সংশোধন করে ৫ বছর করার অনুরোধ জানাই।

 

তিনি আরো বলেন, লাইসেন্স হস্তান্তর না হওয়ার শর্ত সংশোধন করা যুক্তিযুক্ত। কারণ, লাইসেন্সধারী ব্যাক্তির মৃত্যু হতে পারে, শারীরিক বা মানসিকভাবে অক্ষম হতে পারে, কিংবা আর্থিকভাবেও অক্ষম হতে পারে। সেক্ষেত্রে যেন লাইসেন্সের পরবর্তি ওয়ারিশগণ পেতে পারে তার সহজ আইন চাই। আর লাইসেন্স কোন ব্যাক্তির নামে না করে প্রতিষ্ঠানের নামে ইস্যু করাই যুক্তিযুক্ত।

 

অন্যান্য আইনের সংশোধন প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, পণ্য চালান আমদানিকারক অথবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বন্দর-কাস্টমস, শিপিং লাইন্স, বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষ, এয়ারলাইন্স যদি পণ্য খালাসের ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা না নেয় এবং চালনটি যদি দীর্ঘদিন বন্দরে বা বিমানবন্দরে পড়ে থাকে তবে তার দায়ভার ফ্রেইট ফরোওয়ার্ডারের ওপর বর্তাবে না উল্লেখ করে লাইসেন্স বিধিমালার সন্নিবেশ করার অনুরোধ জানাই।

 

মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ফ্রেইট ফরোওয়ার্ডদের দায় করা যুক্তিযুক্ত হবে না। কারণ বিদেশ থেকে দেশে যে মোড়কজাত পণ্য আমদানি হয় তার ভেতরে বস্তবে কি পণ্য রয়েছে তা চেক করার আইনত অধিকার ফ্রেইট ফরওয়ার্ডারদের নেই। ফ্রেইট ফরোওয়ার্ডার শুধু পরিবহনের ব্যবস্থা করে থাকে। তাই মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানির বিষয় শুধুমাত্র রপ্তানিকারকদেশের প্রতিষ্ঠান ও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানই অবগত থাকবে। তারাই যে কোন দায়ভার গ্রহণ করবে এমন বিধার রাখা চাই।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট