চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

সর্বশেষ:

বাজেটে রপ্তানিকারকদের মতো প্রণোদনা চান শিপিং এজেন্টরাও

নিজস্ব প্রতিবেদক

৩ মে, ২০২৪ | ৪:৩৭ অপরাহ্ণ

শিপিং এজেন্টদের কমিশনের উপর উৎসে করের হার ৮% থেকে কমিয়ে ৫% নির্ধারণ করার জন্য দাবি জানিয়েছেন শিপিং এজেন্টস এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ। তিনি বলেন, এক অর্থবছরে ৮% হারে শিপিং এজেন্টদের কমিশনের ওপর উৎসে করের পরিমাণ কর্পোরেট কর থেকেও অপেক্ষাকৃত বৃদ্ধি পাওয়ায় অতিরিক্ত পরিশোধিত কর ফেরত সংক্রান্ত জটিলতার কারণে শিপিং এজেন্টগুলো দারুণভাবে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে শিপিং এজেন্টদের কমিশনের উপর প্রদেয় উৎসে করের হার ৫% নির্ধারণ করার দাবি জানাচ্ছি।
আসন্ন জাতীয় বাজেট ২০২৪-২০২৫ প্রসঙ্গে পূর্বকোণ প্রতিনিধির সাথে ‘বাজেট ভাবনা’ আলোচনায় সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের ৯০ শতাংশের বেশি পণ্য সমুদ্রপথে পরিবহন হয়, যা সম্পাদনের গুরু দায়িত্বে রয়েছে দেশের শিপিং এজেন্টগুলো। ফলে দেশের অর্থনীতিতে শিপিং এজেন্সি প্রতিষ্ঠানের অবদান অনেকাংশে নির্ভরশীল। শিপিং বাণিজ্যে নিয়োজিত বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালু রাখাতে দেশে নিয়োজিত স্থানীয় শিপিং এজেন্টদের উপর নিত্যনতুন শর্ত আরোপ অব্যাহত রেখেছে।
ফলে বিদেশি প্রিন্সিপালের চাপ ও দেশে করের চাপে শিপিং এজেন্টগুলো নিজের অবস্থান টিকিয়ে রাখতে হিমসিম খাচ্ছে। তাই সমুদ্র পথে বাণিজ্যের স্বার্থে আগামী বাজেটে শিপিং এজেন্টদের দাবি বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত জরুরি। বিশেষ করে রপ্তানির মাধ্যমে যেমন রপ্তানিকারকেরা বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের বিপরীতে প্রণোদনা পান তেমনি শিপিং এজেন্টরাও বিদেশি প্রিন্সিপালের কাছ থেকে বাৎসরিক প্রচুর রেমিট্যান্স আহরণ করেন। ফলে শিপিং এজেন্টরাও এই প্রণোদনার দাবিদার।
সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ আরো বলেন, শিপিং এজেন্টগুলো দেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মাধ্যমে দেশে বৈদেশিক মুদ্রা আহরণে ভূমিকা পালন করে। তারা আয়ব্যয়ের বিভিন্ন খাতে কর ও মূসক প্রদান করে। তাছাড়া উৎসে প্রদত্ত অতিরিক্ত কর ফেরতে জটিলতা এবং কোম্পানির সুনির্দিষ্ট খাতে প্রকৃত ব্যয়ের কিছু অংশ আয়কর আইনের শর্তাবলীর কারণে মোট আয় থেকে বিয়োজনযোগ্য না হওয়ায় আয়কর নির্ধারণের সময় করযোগ্য নিট আয় প্রকৃত নিট আয় থেকে বেশি নির্ধারণ করা হয়। ফলে কোম্পানিসমূহের প্রকৃত করভার ২৭ দশামিক ৫% বা ৩০% থেকেও বেশি হয়ে থাকে। তাছাড়া বর্তমান খুচরা বাজারের বাস্তবতা এবং নগদ লেনদেনের অপরিহার্যতা বিবেচনায় বার্ষিক ৩৬ লক্ষ টাকা পর্যন্ত নগদ লেনদেনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা কোম্পানিগুলোর পক্ষে সম্ভবপর হয়ে ওঠে না। এছাড়াও বর্তমান সময়ে কোম্পানির পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধিজনিত কারণে ছোট ও মাঝারি শিপিং এজেন্টদের তারল্যসহকারে পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে এক্ষেত্রে ২৭ দশমিক ৫% বা শর্তসাপেক্ষে ৩০% হারে কর্পোরেট কর প্রদান তাদের জন্য অতিরিক্ত বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই এটি ২৫% ধার্য্য করা হলে তাদের কিছুটা হলেও কল্যাণ হবে।
অন্যান্য দাবির বিষয়ে সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ২০১৩- ২০১৪ থেকে ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের বিলের উপর শিপিং এজেন্টদের কাছে বকেয়া ভ্যাট দাবি করছে। যা প্রত্যাহার করার নির্দেশনা প্রদানের জন্য প্রস্তাব করছি। শিপিং এজেন্ট লাইসেন্সিং বিধিমালা, ২০২২ (খসড়া) অনুমোদনের পূর্বে শিপিং এজেন্টদের মতামত গ্রহণ ও তা বিধিমালায় যুক্ত করার দাবি রাখি। এছাড়া বাতিঘর মাসুল কাস্টমস তথা সরকারি কর্তৃপক্ষকে প্রদান করা হয়। যার বিপরীতে সরকারি কর্তৃপক্ষ হতে উৎসে কর কর্তন সম্ভব হয় না এবং এটি আয়কর আইন দ্বারা সমর্থিত না। তাই এই বিষয়ে কর অঞ্চল-১ চট্টগ্রামের জারিকৃত নির্দেশনার মাধ্যমে শিপিং এজেন্টদের নিজস্ব তহবিল থেকে উৎসে আয়কর প্রদানের নির্দেশনা আয়কর আইনের পরিপন্থী এবং অযৌক্তিক। তাই এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সুস্পষ্ট নির্দেশনা প্রদানের অনুরোধ জানাচ্ছি।

পূর্বকোণ/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট