চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

সর্বশেষ:

ওয়াসার ভেতর আরেক ওয়াসা

মোহাম্মদ আলী

২১ এপ্রিল, ২০২৪ | ১১:৪৩ পূর্বাহ্ণ

এ যেন ওয়াসার ভেতর আরেক ওয়াসা। চট্টগ্রাম ওয়াসার মতো লাইনের এককালীন সংযোগ ফি ও প্রতিমাসে বিল আদায়ের সব নিয়মও আছে। সার্বিক দেখভাল করার জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে লোকবলও। এভাবে দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে চলে আসছে অবৈধ মিনি ওয়াসার কার্যক্রম।

 

নগরীর লালখান বাজার মতিঝর্ণা এলাকার ইউসেফ স্কুল গলিতে এই মিনি ওয়াসার অবস্থান। দামপাড়া ওয়াসার প্রধান কার্যালয় থেকে এটির দূরত্ব আনুমানিক পৌনে এক কিলোমিটার হলেও এ অবৈধ কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারেনি সরকারি সেবা সংস্থাটি।

 

স্থানীয় লোকজনের অভিযোগে জানা গেছে, প্রায় পাঁচ বছর আগে জনৈক মো. জাহিদুল ইসলাম (জাবেদ), মোহাম্মদ আরিফসহ কয়েকজনে মিলে যৌথভাবে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে লালখান বাজার মতিঝর্ণা এলাকার ইউসেফ স্কুল গলিতে একটি গভীর নলকূপ বসায়। এরপর প্রতিজন গ্রাহক থেকে ৩০ হাজার টাকা ফি নিয়ে সংযোগ লাইন দিতে থাকে তারা। এভাবে তারা ডেলিভারি পাইপ দিয়ে প্রায় ২৬টি সংযোগ দেয়। প্রতিজন গ্রাহক থেকে প্রতিমাসে আদায় করা হয় এক হাজার ৫০০ টাকা ফি।

 

ইউসেফ মতিঝর্ণা টেকনিকেল স্কুল গলি ছাড়াও মতিঝর্ণা ৭নং, ৬নং গলি ও আশেপাশে বিভিন্ন এলাকায় সেখান থেকে পানি লাইনের সংযোগ দেওয়া হয়েছে।

 

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, মতিঝর্ণা টেকনিকেল স্কুল গলিতে এ অবৈধ নলকূপটি বসানো হয়েছে। সেখান থেকে প্লাস্টিকের ডেলিভারি পাইপের মাধ্যমে গ্রাহকদের ঘরে ঘরে সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কিছু কিছু পাইপলাইন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণভাবে বৈদ্যুতিক খুঁটির সাহায্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাতে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার শঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

 

এ অবৈধ গভীর নলকূপের ভুক্তভোগী এক গ্রাহক অভিযোগ করে বলেন, ‘মিনি ওয়াসার মালিকরা ওয়াসা থেকে আমাদের সংযোগ নিতে দেয় না। তাছাড়া তারা এলাকায় প্রচার করে যে, ওয়াসা থেকে সংযোগ নিতে চাইলে সংস্থাটি কোনো সংযোগ দিবে না। তাই বাধ্য হয়ে ওদের থেকে চড়া দামে সংযোগ নিতে বাধ্য হয়েছি।

 

জানতে চাইলে অবৈধ নলকূপের মালিক দাবিদার মোহাম্মদ আরিফ দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘এ নলকূপ থেকে ২২টি সংযোগ দেওয়া হয়েছে। প্রতি সংযোগের জন্য ২৮ হাজার থেকে ২৯ হাজার টাকা পর্যন্ত ফি আদায় করেছি। তাছাড়া প্রতিমাসে গ্রাহক থেকে নির্ধারিত একটি ফিও নিয়ে থাকি।’

 

অবৈধ নলকূপের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যবসা প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ একটা অবৈধ কাজ। নগরীতে ওয়াসা ছাড়া কোন ব্যক্তি কিংবা সংস্থা নলকূপ বসিয়ে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সংযোগ দিয়ে ব্যবসা করতে পারে না। এটার ব্যাপারে ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে অভিযান চালাবে ওয়াসা এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

পূর্বকোণ/এসএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট