
অবশেষে অপেক্ষার অবসান হচ্ছে ফইল্যাতলী বাজার ব্যবসায়ীদের। ঈদের পরেই উদ্বোধন হতে হচ্ছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত হালিশহর কিচেন মার্কেট। এর ফলে গত কয়েক বছর ধরে অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকা ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটেছে। দোকান ফিরে পাওয়ায় তাদের ঈদ আনন্দে এবার বাড়তি মাত্রা যোগ হয়েছে।
জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৫ জুলাই আয়বর্ধক প্রকল্প হিসেবে এই মার্কেট নির্মাণের কাজ শুরু করে চসিক। এ সময় ফইল্যাতলী বাজার পুরোনো ব্যবসায়ীদের জন্য অস্থায়ী বাজার তৈরি করে দেয় চসিক। এর দুই বছর পর নির্মাণ কাজ শেষ হলেও বরাদ্দ নিয়ে পুরোনো ব্যবসায়ীদের সাথে দ্বন্দ্ব শুরু হয় চসিকের। এর মধ্যে সাবেক এস্টেট অফিসার জসীম উদ্দিন কৌশলে পুরোনো ব্যবসায়ীদের বাইরে রেখে কিছু দোকান বরাদ্দ দিয়ে দেন। এসময় বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন পুরোনো ব্যবসায়ীরা। তাদের অভিযোগ ছিল পুরাতন ব্যবসায়ীদের না জানিয়ে দোকান বরাদ্দ দিয়েছে চসিক। এসময় দোকান হারানোর শঙ্কায় হতাশ হয়ে পড়েন তারা। তবে গতবছর শুরুর দিকে মেয়র এম রেজাউল করিমের নির্দেশে বর্তমান এস্টেট অফিসার রেজাউল করিম ব্যবসায়ীদের সাথে দ্বন্দ্ব নিরসনের উদ্যোগ নেন।
পুরোনো ব্যবসায়ীদের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করেন এবং তাদের দোকান ফিরে পাওয়ার ব্যাপারটি আশ্বস্ত করেন। পুরো মার্কেটে দোকান সংকুলান না হওয়ায় অতিরিক্ত দোকান সৃষ্টি করে ব্যবসায়ীদের অনুকূলে দোকান বরাদ্দ শুরু করেন। এরমধ্যে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীদের দোকান বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বাকি সামান্য কিছু ব্যবসায়ীকে ঈদের পর দোকান বরাদ্দ দেয়া হবে। এরপর শুরু হবে কিচেন মার্কেটের যাত্রা। মার্কেটে বর্তমানে নিচ তলায় ১২৪টি স্টল ও ৪৩টি দোকান, ২য় তলায় ১৭টি স্টল, ৫৩টি মুদি দোকান ও ১টি হোটেল এবং তৃতীয় তলায় ৪৪টি দোকান বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে।
অস্থায়ী বাজারের মুদি দোকানদার মো. ইলিয়াছ বলেন, ‘গত পাঁচবছর ধরে মহেশখালের পাড়ে অস্থায়ী মার্কেটে নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে দোকান করে আসছি। ময়লা-অবর্জনার মধ্যে দোকান করতে হয়েছে। ক্রেতাদের সংখ্যাও ধীরে ধীরে কমে গিয়েছিল।’ নতুন দোকান বরাদ্দ পাওয়ায় খুশি এ ব্যবসায়ী বলেন, ‘এবার ঈদ আমাদের জন্য অন্যরকম আনন্দের। শঙ্কা কাটিয়ে অবশেষে আমরা দোকান ফিরে পেয়েছি।’
সংকট নিরসনে চসিকের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করে দোকান বরাদ্দের বিষয়টি সমাধান করেন ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা। এদের একজন হেলাল হোসেন বলেন, মেয়র আমাদেরকে দোকান বরাদ্দ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু চসিকের এক সাবেক কর্মকর্তার কারণে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল। তবে বর্তমান এস্টেট অফিসারের আগ্রহ ও সহযোগিতার কারণে আমরা দোকান ফিরে পেয়েছি।’
আরেক ব্যবসায়ী ওমর ফারুক বলেন, ‘দোকান ফিরে পাওয়ায় আমরা ব্যবসায়ীরা মেয়র ও এস্টেট অফিসারের কাছে কৃতজ্ঞ। আশা করি ঈদের পর চালু করতে পারবো কিচেন মার্কেট।
স্থানীয় দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, ‘কিচেন মার্কেট নিয়ে বিরোধ নিরসন হয়েছে। দোকান বরাদ্দ পেয়ে খুশি পুরোনো ব্যবসায়ীরা। কিছু দোকান বরাদ্দের প্রক্রিয়া চলছে। ঈদের পর এসব দোকানও বুঝিয়ে দেয়ার পর মার্কেটটি চালু করা হবে।’
পূর্বকােণ/এসএ