গুদামে আগুন লেগে এক লাখ টন অপরিশোধিত চিনি পুড়ে যাওয়ার কথা বললেও এ কারণে আসন্ন রোজায় চিনির বাজারে ‘কোনো প্রভাব পড়বে না’ বলে আশ্বস্ত করলেন দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) দুপুরে পুড়ে যাওয়া গুদাম দেখতে এসে এস আলম গ্রুপের জিএম (কমার্শিয়াল) মো. আকতার হাসান বলেন, ‘অত্যন্ত বেদনার সাথে জানাচ্ছি, গতকাল বিকালে আগুন লেগেছে, এখনো আগুন নেভানো যায়নি। এখানে প্রত্যেকে কাজ করছে।’
‘কীভাবে হল এবং ক্ষয়ক্ষতি কত তা এখন আমরা বলতে পারছি না। তবে এটা নিশ্চিত করতে পারি, বাজারে প্রভাব পড়বে না। আমাদের এখনো ১০-১৫ দিনের মত ফিনিশড (পরিশোধিত) চিনি হাতে আছে।’
সোমবার বিকাল ৪টার আগে আগে কর্ণফুলী থানার ইছাপুর এলাকায় এস আলম রিফাইন্ড সুগার মিলের চারটি গুদামের মধ্যে একটিতে আগুন লাগে।
ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টার চেষ্টায় রাত সাড়ে ১০ টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত তা পুরোপুরি নেভানো যায়নি।
কর্ণফুলী থানার মইজ্জারটেক সংলগ্ন ইছাপুর এলাকায় ১১ মেগাওয়াটের এস আলম পাওয়ার প্লান্টের পাশেই এস আলম রিফাইন্ড সুগার মিল। পাওয়ার প্ল্যান্টের বিদ্যুৎ দিয়েই চিনি কারখানার উৎপাদন কার্যক্রম চলে। এ কারখানার দৈনিক পরিশোধন ক্ষমতা ২২০০ টন।
কোম্পানির কর্মকর্তারা বলছেন, রোজার মাস সামনে রেখে মিলের চারটি গুদামে মোট চার লাখ টন অপরিশোধিত চিনি মজুদ করা হয়েছিল। পরিশোধনের পর ওই চিনি বাজারে যাওয়ার কথা। এর মধ্যে ১ নম্বর গুদামের এক লাখ টন চিনি পুড়ে গেছে।
রোজা শুরুর মাত্র এক সপ্তাহ আগে বিপুল পরিমাণ চিনি ভষ্মীভূত হওয়ায় এর প্রভাব বাজারে পড়বে কি না, সেই আলোচনা চলছে সোমবার থেকে।
আকতার হাসান বলেন, ‘আশা করি দুয়েক দিনের মধ্যে আমরা আবার বাজারে ফিরে আসব। আমাদের পাইপলাইনে ৬-৭ লাখ টন চিনি আছে। শুধু একটি গোডাউন পুড়েছে। আরো চারটি গোডাউন আছে। বাজারে কোনো প্রভাব পড়বে না।’
তিনি বলেন, যে গুদামে আগুন লেগেছে তাতে এক লাখ টন র সুগার ছিল। ব্রাজিল থেকে আমদানি করা হয়েছিল ওই চিনি।
বাজারে যে প্রভাব পড়বে না, সেটা কীভাবে বোঝা যাচ্ছে জানতে চাইলে এস আলম গ্রুপের জিএম (এইচআর) মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ‘রোজায় সারাদেশে এক লাখ টন চিনি লাগে। শুধু আমাদেরই এর চেয়ে অনেক বেশি চিনি আছে। র সুগারের একটা গুদাম জ্বলেছে। তিনটা অক্ষত আছে। আরেকটা গুদাম ফিনিশড সুগারের, সেটাও অক্ষত আছে।’
‘আমাদের প্রায় ২৫ হাজার টন পরিশোধিত চিনি রেডি আছে। সেটা ১০-১৫ দিনের মত ফিনিশড গুড। আগুনের কারণে গতকাল থেকে বাজারে ডেলিভারি বন্ধ। আশা করি দুয়েক দিনের মধ্যে আবার বাজারে চিনি দিতে পারব।’
পূর্বকোণ/এসি