চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

সর্বশেষ:

দক্ষ গবেষক থাকা সত্ত্বেও গবেষণায় উপেক্ষিত চট্টগ্রাম

১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ | ১:৩১ অপরাহ্ণ

পরিকল্পিত চট্টগ্রাম গড়ে তুলতে হলে মানুষের অন্যসব মৌলিক চাহিদার সাথে স্বাস্থ্যসেবাকেও অগ্রাধিকার দিতে হবে। স্মার্ট সিটি গড়তে হলে নিশ্চিত করতে হবে স্মার্ট স্বাস্থ্যসেবা। শুধুমাত্র উচ্চবিত্ত বা মধ্যবিত্তদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে সমাজের সাধারণ নাগরিকদের দোরগোড়ায় এই সেবা পৌঁছাতে হবে।

বর্তমানে নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে চসিকের যেসব স্বাস্থ্যকেন্দ্র আছে, তা ঝুঁকিপূর্ণ এবং জরাজীর্ণ। জনসংখ্যা যতটুকু আছে, সে অনুপাতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে লোকবল নেই। সবার আগে প্রান্তিক পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি হাসপাতালগুলোতেও কাক্সিক্ষত সেবা পাচ্ছে না জনগণ। তাদের সেবা নিশ্চিত করতে হবে।

 

একজন মানুষ অসুস্থ হলে সে সরকারি হাসপাতালে যেতে চায় না। ন্যূনতম সামর্থ্য থাকলেই ছোটে প্রাইভেট হাসপাতালের দিকে। আরেকটু সামর্থ্যবান হলে ঢাকা অথবা দেশের বাইরে চলে যায়। চিকিৎসাক্ষেত্রে কেন আস্থা ফেরাতে পারছে না চট্টগ্রাম, তা নিয়ে ভাবতে হবে। সরকারি হাসপাতালগুলো পরিচালিত হয় ঢাকা থেকে। চট্টগ্রামের তেমন কোন ক্ষমতা নেই। যতক্ষণ পর্যন্ত কেন্দ্রের কাছে ক্ষমতা থাকবে, ততক্ষণ চট্টগ্রামের স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নতি হবে না।

 

প্রাইভেট সেক্টরেও রয়েছে সমস্যা। রয়েছে দক্ষ জনবলের অভাব। বিভিন্ন সময়ে রোগীকে ঢাকা থেকে অনেক টাকা দিয়ে স্পেশালিস্ট নিয়ে আসতে হয়। তাই বিশেষজ্ঞ ডাক্তাদের অনেকেই চট্টগ্রামের হলেও তাদেরকে যথাসময়ে পাই না।

 

দেশের বাইরে থেকে পিএইচডি, পোস্ট ডক্টরেট করা শতাধিক গবেষক থাকা সত্ত্বেও চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য গবেষণায় নিয়োজিত বিজ্ঞানীদের জন্য নেই পর্যাপ্ত অনুদান, নেই জনবল প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপ, বিভিন্ন সংক্রামক রোগ দিন দিন চট্টগ্রামে বেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু নেই সমন্বিত গবেষণার উদ্যোগ। নেই বেসরকারি বা ব্যাক্তি পর্যায়ে অর্থায়ন। তাকিয়ে থাকতে হয় সরকারি বা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর দিকে।

 

চট্টগ্রামে কেন এন্টিবায়োটিক অকার্যকর হওয়ার হার বেড়ে যাচ্ছে, কেন তরুণদের মধ্যে ডায়াবেটিস বেড়ে যাচ্ছে, নবজাতকদের জিনগত অস্বাভাবিকতা কেন বাড়ছে, কীভাবে ক্যান্সার দ্রুত শনাক্ত করা যায়- এসব নিয়ে অনেক বেশি গবেষণার প্রয়োজন। চট্টগ্রামে এখনও জেনেটিক স্ক্রিনিংয়ের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ডায়াগনোসিসের ব্যাবস্থা নেই। পর্যাপ্ত বিনিয়োগ থাকলে এখানকার রোগীদের ভারতে নমুনা পাঠাতে হতো না, এখানেই শনাক্তকরণ সম্ভব।

 

প্রতিবছর ৫০ কোটি টাকার বেশি টেস্ট করানো হচ্ছে ভারত থেকে। জিনোম সিকুয়েন্স করার যন্ত্র আছে দুই জায়গায়। কিন্তু তা চালানোর জন্য নেই বিনিয়োগ, বঞ্চিত হচ্ছে এখানকার রোগী ও গবেষকেরা।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট