চট্টগ্রাম বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫

মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নে সব সংস্থাকে একীভূত করতে হবে

১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ | ৫:০৮ অপরাহ্ণ

পাহাড়, সমুদ্র আর নদীঘেরা বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম। নৈসর্গিক এ নগরীকে আধুনিক করতে নির্মাণ করা হয়েছে একের পর এক ফ্লাইওভার, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। এরই মাঝে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে অপরিকল্পিত ভবন, পাহাড় কেটে তৈরি হচ্ছে আবাসিক এলাকা, ভরাট হচ্ছে নদী-জলাশয়। ধ্বংস হচ্ছে সবুজ। এক কথায় প্রাকৃতিকভাবে সুন্দর প্রাচীন এ নগরীকে আধুনিক ও পরিকল্পিতভাবে গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছে অভিভাবক সংস্থাগুলো।

 

সামান্য বৃষ্টি কিংবা জোয়ারের পানিতে নগরীর বিভিন্ন এলাকা কোমর পানিতে ডুবে যায়। বিগত দিনের কোনো মাস্টারপ্ল্যানই বাস্তবায়ন না হওয়ায় এমন বেহাল দশা। গত মাস্টারপ্ল্যানের ১০ শতাংশও বাস্তবায়ন হয়নি। এর মধ্যে নতুন মাস্টারপ্ল্যান হচ্ছে। ফ্লাইওভার হলো। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হচ্ছে। এই শহরকে নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা কখনো ছিল না। এখনো নেই। শহরের অন্তত ৫০ বছরের পরিকল্পনা থাকা উচিত। যা ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হয়। এখন মেট্রোরেলের কথা আলোচনায় আসছে। তা হলে মেট্রোরেলকে কীভাবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে সমন্বয় করা যাবে। এসব অনেক প্রশ্ন এসে যাচ্ছে। পাশাপাশি স্থাপনা তো আছেই। এই শহরে রাস্তা বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। যেহেতু ২০৪১ সালকে মাথায় রেখে মাস্টারপ্ল্যান হচ্ছেতার জন্য কিছুটা সময় দিয়ে উন্নয়ন প্রকল্প আপাতত গ্রহণ না করাই উচিত। এখনি যদি আবারও অপরিকল্পিত প্রকল্প গ্রহণ করা হয় তাহলে মাস্টারপ্ল্যান পদে পদে বাধাগ্রস্ত হবে। কিছুদিন পর সংশোধন করতে হবে।

আগের মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালিত না হওয়ায় অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে চট্টগ্রাম শহর। যে যেভাবে পারছে, নিজেদের মতো উন্নয়ন পরিচালনা করছে এবং এর নেতিবাচক ফল ভোগ করতে হচ্ছে নাগরিকদের। এ অবস্থা থেকে বের হতে হলে সব সেবা সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। শুধু মহাপরিকল্পনা করলেই চলবে না, তার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নও করতে হবে। যেহেতু সিডিএ একটি বাস্তবায়নযোগ্য মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করতে চায়। সবগুলো সংস্থার সমন্বয়ে তারা কাজটি করতে চায়। যা এখন সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। তবে আমাদের মধ্যে পরস্পরকে দোষারোপের একটি চিত্র দেখি। যা কোনভাবে কাম্য নয়। সিটি কর্পোরেশনকে মাস্টারপ্ল্যানে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তাদের উন্নয়ন কাজগুলো যাতে মাস্টারপ্ল্যানের সাথে সাংঘর্ষিক না হয়। নতুন মহাপরিকল্পনায় উন্মুক্ত পরিসর, খেলার মাঠ ও উদ্যান সংরক্ষণে জোর দিতে হবে। পুকুর, দিঘি, জলাশয় সংরক্ষণ করতে হবে। ভবন অনুমোদন দেয়ার ক্ষেত্রে স্পষ্ট গাইডলাইন থাকতে হবে।

 

সিটি কর্পোরেশন, সিডিএ, ওয়াসা, বিআরটিএ, পিডিবিসহ প্রত্যেক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কর্মকা- চলমান আছে। কিন্তু একটা প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনার সাথে অন্য প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনায় কোন সমন্বয় থাকে না। সিটি কর্পোরেশন রাস্তা নির্মাণের পর ওয়াসা এসে রাস্তা কাটে অথবা সিডিএ কোন অবকাঠামো করতে গেলে পিডিবির লাইন কাটে। সেবা প্রদানকারী সব সংস্থাকে যদি মাস্টারপ্ল্যানে অন্তর্ভুক্ত করা যায়, তাহলে এ বিড়ম্বনা এড়ানো সম্ভব।

যাঁরা অংশ নিলেন

সঞ্চালক
স্থপতি আশিক ইমরান
সদস্য, চউক পরিচালনা পর্ষদ

স্বাগত বক্তব্য
জসিম উদ্দিন চৌধুরী
চেয়ারম্যান, দি পূর্বকোণ লিমিটেড

আলোচক
প্রফেসর মোজাম্মেল হক
উপাচার্য সাদার্ন ইউনিভার্সিটি

প্রফেসর স্বপন কুমার পালিত
অধ্যাপক পুরকৌশল বিভাগ, চুয়েট

প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম
প্রধান প্রকৌশলী, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন

জয়নুল আবেদীন
উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক উত্তর)

মুহাম্মদ মাহাবুবুল আলম
তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, চট্টগ্রাম ওয়াসা
শহীদুল ইসলাম মৃধা
তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, পিডিবি দক্ষিণাঞ্চল

প্রকৌশলী আবু ঈসা আনছারী
উপ-প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ

ড. আহসানুল কবীর
টিম লিডার, পরামর্শক প্রতিষ্ঠান, মাস্টারপ্ল্যান প্রকল্প

ড. নুরুল হাসান
ডেপুটি টিম লিডার
পরামর্শক প্রতিষ্ঠান, মাস্টারপ্ল্যান প্রকল্প

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট