বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় গতানুগতিক সনাতন পদ্ধতি পরিহার করে আধুনিক টিউটোরিয়াল সিস্টেম ও শিক্ষকগণের আন্তরিক তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের মাধ্যমে সুশৃংখল, মনোবিজ্ঞানের আধুনিকতম পদ্ধতি প্রয়োগ ও বিশ্বস্ত অভিভাবকত্বের দায়িত্ব নিয়ে ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ‘হলি চাইল্ড স্কুল এন্ড কলেজ’। আলোকিত প্রত্যয়ী ও সুশিক্ষিত জাতি গঠনের অঙ্গিকার নিয়ে একটি যুগোপযোগী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মডেল হিসেবে শিক্ষামন্ত্রণালয় ও চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত(EIIN-139260) এই স্কুলটি বিগত ২৬ বছরের পরিক্রমায় অক্সিজেন ও তদসংলগ্ন এলাকার সর্বাধিক কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জনকারী একমাত্র আদর্শ বিদ্যাপীঠ যা অত্র এলাকার অভিভাবক মহলের একমাত্র নির্ভরযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রুপে স্বীকৃত।
স্কুল প্রতিষ্ঠাতা বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী অধ্যক্ষ এম. কে বড়ুয়া, বিএসসি অনার্স, এমএসসি (রসায়ন) ঢাবি, এমএড, বলেন, ঐতিহ্যবাহী হলি চাইল্ড স্কুলে ২০২৩ সনের SSC-পরীক্ষায় গোল্ডেনসহ A+ ৮ জন, A ১৯ জন এবং ২০২২ সালে A+১১ জন, A ৩১ জনসহ শতভাগ পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। অধ্যক্ষ আরও জানান স্কুলের বিশেষ বৈশিষ্ট্যসমুহ সম্পর্কে–
দক্ষ শিক্ষক : যথার্থ মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে মেধাবী ও দক্ষ শিক্ষক অপরিহার্য। উচ্চশিক্ষিত, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও সুদক্ষ বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকমন্ডলী পাঠদানের দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন। শিক্ষানীতির মূল শর্ত অনুসরণ কর এই বিদ্যালয়ে প্রতি ক্লাসে ৩০ জন শিক্ষার্থীর জন্য রয়েছেন একজন শিক্ষক। বছরের শুরুতেই প্রস্তুত করা হয় একাডেমিক ক্যালেন্ডার। শিক্ষা কৌশল নির্ধারণে এখানে শিক্ষক প্রশিক্ষণ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ আছেন। তাঁরা নিয়মিত প্লে থেকে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীর সামগ্রিক উন্নয়ন ও উৎকর্ষের জন্য প্রথাগত পদ্ধতির উপর ছেড়ে না দিয়ে অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতির উপর জোর দিয়ে থাকেন। স্ব স্ব বিষয়ে মাস্টার্স এবং বি.এড, এম. এড ডিগ্রীধারী অভিজ্ঞ শিক্ষক মন্ডলী পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে পাঠদানের কাজ সম্পন্ন করেন।
এখানে উল্লেখ্য যে, ২০২৩সাল থেকে পরিবর্তিত নুতন কারিকুলামের উপর বিশেষ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন আমাদের শিক্ষকবৃন্দ।
নতুন কারিকুলামের চ্যালেঞ্জ : অধ্যক্ষ এম কে বড়ুয়া এ প্রসঙ্গে বলেন, ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্রীদের জন্য রয়েছে পৃথক ক্যাম্পাস। আমরা প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ব্যতিক্রমী শিখন পদ্ধতি অনুসরণ করে এসেছি যাতে রয়েছে- সহজ এবং গবেষণালব্ধ পদ্ধতিতে ছাত্র-ছাত্রীদের সৃজনশীল প্রতিভা বিকাশের পাশাপাশি আত্মবিশ্বাসী করে গড়ে তুলতে গ্রুপ ওয়ার্ক, ছাত্র-ছাত্রীরা কতটুকু অর্জন করল তা যাচাই বাছাই করতে ফিডব্যাক ক্লাস, শিক্ষার্থী তাদের অর্জিত জ্ঞান ক্লাসরুমে সকলের সামনে উপস্থাপন করতে প্রেজেন্টেশন ক্লাস এবং পাঠ সংশ্লিষ্ট শিখন উপকরণ ব্যবহারের মাধ্যমে পাঠদান।
নতুন প্রবর্তিত কারিকুলামের নতুন শিখন কারক্রমেও এইসব পাঠদান পদ্ধতি রয়েছে বিধায় আমাদের শিক্ষকগণের কাছে নতুন কারিকুলামের প্রশিক্ষণ বেশ গ্রহণযোগ্য হয়েছে এবং ক্লাসে আমরা অত্যন্ত সফলভাবে নতুন পদ্ধতি প্রয়োগ করতে সক্ষম হয়েছি।
আমাদের শিক্ষকগণ নতুন কারিকুলামের উপর সরকারী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন।যেহেতু বর্তমানপাঠক্রম একটি দক্ষতা-ভিত্তিক পাঠ্যক্রম।তাই নতুন শিখন অভিজ্ঞতা অর্জন করাতে গিয়ে নতুন শিখন কৌশল রপ্ত করতে হয়েছে শিক্ষকদের।
খেলাধুলা ও সৃজনশীল কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষা প্রদানে উৎসাহ দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা যেন ক্লাসের পাঠ ক্লাসেই শেষ করতে পারে, যাতে করে বাড়ির কাজ বা হোমওয়ার্ক কমানো সম্ভব হয়,তাও নিশ্চিত করি আমরা।সবশেষে প্রায়োগিক দক্ষতা কতটুকু লাভ করলো তা মূল্যায়ন করেন অভিজ্ঞ শিক্ষকবৃন্দ।আমাদের প্রতিটি ক্লাসে ৩০ থেকে ৪০ জন শিক্ষার্থী থাকায় দলগত কাজ বা মূল্যায়ন সেশন কার্যকর ভাবে ফলপ্রসূ হয়।
আইসিটি ও বিজ্ঞান শিক্ষক বলেন, নতুন এই শিক্ষাক্রমে মুখস্থনির্ভর লেখাপড়ার চর্চা থেকে বেরিয়ে আসবে শিক্ষার্থীরা ।শিক্ষাক্রমে তথ্য মনে রাখার ক্ষমতার চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে শিক্ষার্থীর তথ্য বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা এবং তথ্য ব্যবহার করে সমস্যা সমাধানের ক্ষমতার উপর। আমরা বিজ্ঞানের প্রতিটি ক্লাসে শিখন উপকরণের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট তথ্য তুলে ধরি এবং প্রাসংগিক উপকরণ প্রদর্শন করি।দলগত কাজে হাতে কলমে বিভিন্ন প্রকল্প উপস্খাপনের মাধ্যমে যে কোন জটিল বিষয় অত্যন্ত উপভোগ্য ও সহজবোধ্য হয়ে ওঠে।
পরামর্শ সেল : এই প্রতিষ্ঠানকে একটি সুন্দর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তথা মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে অভিভাবক মহলের পক্ষ থেকে সুচিন্তিত মতামত পরামর্শ ও অভিযোগ সম্পর্কে অবগত হয়ে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রতিষ্ঠানের রয়েছে একটি অভিযোগ ডেস্ক। তাছাড়া বিভিন্ন সময়ে মতামত জরিপ এবং শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকের সমন্বয়ে মতবিনিময়ের ব্যবস্থা করা হয়।
মনিটরিং সেল : আমাদের রয়েছে একটি মনিটরিং সেল যার প্রধান কাজ ছাত্র–ত্রীদের লেখাপড়ার পরিবেশ ও সুযোগ সুবিধা পর্যবেক্ষণ করা। সেই সেলের কাজের অংশ হিসেবে সদস্যরা ছাত্র–ছাত্রীদরে বাসায় প্রয়োজন মত পরিদর্শনে যান।
কম্পিউটার ল্যাব : কেজি থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত কম্পিউটার শিক্ষা বাধ্যতামূলক। প্রত্যেক শ্রেণীর জন্য রয়েছে নির্ধারিত শিক্ষক্রম ও পাঠ্যসূচি। অভিজ্ঞ কম্পিউটার শিক্ষক দ্বারা নার্সারী কেজি শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের আইটি এর আধুনিক সকল কোর্সের উপর প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দক্ষ করে তোলা হয়।
বিজ্ঞানাগার ও বিজ্ঞান ক্লাব : প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে বিজ্ঞান শিক্ষার জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের যাতে প্রচুর আগ্রহ জন্মায় ও বুঝতে সহজ হয় ,ব্যবহারিক ও প্রয়োগিক দিক স্পষ্ট হয়ে ওঠে,সেজন্য এই্ স্কুলে রয়েছে উন্নত বিজ্ঞানাগার। বিজ্ঞান ক্লাবে নানা সৃজনশীল কর্মকান্ড এবং কর্মশালা ও বিজ্ঞানমেলা আয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান মনস্ক হিসাবে গড়ে তুলতে সফল উদ্যোগ নেয়া হয়।
SPOKEN ENGLISH : ক্যাম্পাসে পরিবেশ ইংরেজী করার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে এবং ইংরেজী ভাষায় কথোপকথনে দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে শ্রেণীর মান অনুযায়ী SPOKEN ENGLISH আমাদের কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
সহপাঠক্রমিক কার্যক্রম : আমাদের শিক্ষাক্রমে বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক চর্চা যেমন- বিতর্ক, আবৃত্তি, সংগীত, নৃত্য প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়া রয়েছে বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান, ক্লাস পার্টি, বার্ষিক ম্যাগাজিন, প্রতিভা অন্বেষণ ও বার্ষিক শিক্ষা সফরের ব্যবস্থা।গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য শিক্ষা ভ্রমণ কারিকুলামভুক্ত। তাই হলি চাইল্ড স্কুলে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে বাধ্যতামূলক শিক্ষা ভ্রমণের ব্যবস্থা।এছাড়া শিক্ষার্থীর মননশীলতা বিকাশের জন্য নিয়মিত দেয়ালিকা ও বুলেটিন প্রকাশ করা হয়। জাতীয় সকল দিবসসমূহ পালিত হয় সাড়ম্বরে।
বিস্তারিত জানতে, Holy Child School & College ফেসবুক পেজে লগইন করে এবং বঙ্গবন্ধু এভিনিউ সড়ক, অক্সিজেন, বায়েজিদ,চট্টগ্রাম,এই ঠিকানায় এবং ০১৫৫৪-৩২৬৬৭৪ ফোন নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে।
পূর্বকোণ/এসি