চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

সর্বশেষ:

‘পেঁয়াজশূন্য’ চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ

নিজস্ব প্রতিবেদক

১১ ডিসেম্বর, ২০২৩ | ১২:৩৩ অপরাহ্ণ

বন্দরনগরী চট্টগ্রামে অস্থির পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে যৌথ অভিযান চালিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। অভিযানে মূল্য তালিকা না থাকা, ক্রয়-বিক্রয় রশিদ সংরক্ষণ না করা, অতিরিক্ত দামে বিক্রি এবং পেঁয়াজ মজুদ করার দায়ে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ ও পাহাড়তলী বাজারের ৪ ব্যবসায়ীকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গতকাল সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে এ অভিযান।

 

ভারত থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের খবরে সারাদেশের মতো চট্টগ্রামেও দফায় দফায় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। খুচরা ও পাইকারি বাজারগুলোতে কয়েকদিনের ব্যবধানে অস্বাভাবিকভাবে বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি হতে দেখা গেছে। গতকাল খাতুনগঞ্জের আড়তগুলো প্রায় ‘পেঁয়াজ শূন্য’ দেখা যায়।  বাড়তি দাম হওয়ায় খুচরা বিক্রেতাদের আনাগোনাও তেমন দেখা যায়নি।  এ অবস্থায় বাজার নিয়ন্ত্রণে অভিযানে নামে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

 

গতকাল বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খাতুনগঞ্জ ও চাক্তাই এলাকায় বাজার মনিটরিং ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. উমর ফারুক। মূল্য তালিকা না থাকা, ক্রয়-বিক্রয় রশিদ সংরক্ষণ না করা এবং সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত দামে বিক্রির দায়ে দুই প্রতিষ্ঠানকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এরমধ্যে মেসার্স মেহের আলী ট্রেডার্সকে ১০ হাজার টাকা এবং মেসার্স মোহাম্মদ আলি আহম্মদ ট্রেডার্সকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

 

ভ্রাম্যমাণ আদালত আড়তদারদের জরিমানার পাশাপাশি সবাইকে সতর্ক করে দেন। অস্বাভাবিক মূল্যে পেঁয়াজসহ ভোগ্যপণ্য বিক্রির অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন। অন্যদিকে ব্যবসায়ীদের দাবি, বেশি দামে কেনার কারণে উচ্চমূল্যে বিক্রি করতে হচ্ছে পেঁয়াজ। আবার খুচরা ব্যবসায়ীদের দাবি তাদেরও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে পাইকারি বাজার থেকে।

 

অভিযানের সময় পাইকারি দোকানদারদের রশিদে দেখা যায়, সৌমিক ট্রেডার্স, আবুল বশর এন্ড সন্স, মেসার্স মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন, মেসার্স জান্নাতুল মাওয়া, এই আড়তগুলো থেকে কেজিপ্রতি ১৭৫ থেকে ১৯৮ টাকায় পাইকারি দোকানে পেঁয়াজ বিক্রি হয়।

 

এই সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. উমর ফারুক বলেন, বাজারে বিভিন্ন দোকানে জরিমানা করার পাশাপাশি মনিটরিং অব্যাহত থাকবে। এছাড়াও, সরবরাহ কমার অজুহাতে যাতে ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়াতে না পারে সেই বিষয়েও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে এবং নিয়মিত মনিটরিং করা হবে।

 

এদিকে নগরীর পাহাড়তলী বাজারে ২ ব্যবসায়ীকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রির দায়ে জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অফিসের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ এ জরিমানা করেন।

 

অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক রানা দেব নাথ বলেন, বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করার দায়ে পাহাড়তলীর মেসার্স বাছামিয়া সওদাগরকে ২০ হাজার টাকা ও মেসার্স কালু শাহ এন্টারপ্রাইজকে  ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। মেসার্স বাছামিয়া সওদাগর মূল্য তালিকায় পেঁয়াজ নেই লিখে রাখলেও তার আড়তে ৩৬ বস্তা পেঁয়াজ পাওয়া যায়। সেখানে প্রায় ১৭০০ থেকে ১৮০০ কেজি পেঁয়াজ ছিল। এছাড়া একই অভিযানে টিসিবির তেল ও অননুমোদিত রঙ বিক্রির দায়ে বায়েজিদ থানাধীন আমিন কলোনি এলাকার ছৈয়দ স্টোরকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট