চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

সর্বশেষ:

চবি ফারসি বিভাগে ছাত্রলীগের তালা, পরীক্ষা স্থগিত

চবি সংবাদদাতা

১৪ নভেম্বর, ২০২৩ | ৩:২০ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে তালা ঝুলিয়েছে শাখা ছাত্রলীগের উপপক্ষ ভার্সিটি এক্সপ্রেস (ভিএক্স) এর কর্মীরা। ফলে বিভাগের আজকের তৃতীয় বর্ষের ৩০১ নং কোর্সের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বিভাগের অফিস ও পরীক্ষার হলে ঝুলিয়ে দেন তারা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিভাগের সভাপতি আসমা আক্তার।

বিভাগীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের নভেম্বর মাসে বিভাগের ২য় বর্ষের ২০৪ নম্বর কোর্সের পরীক্ষা চলাকালীন মাহমুদুল ইসলাম হাসিব ও হাবিবুর রহমান হাবিব নামে দুই শিক্ষার্থীর নকল ধরেন দায়িত্বরত শিক্ষক সভাপতি আসমা আক্তার। ওই পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ছিলেন অধ্যাপক ড. মো. আবুল হাসেম।

পরে তাদের পরীক্ষার খাতা রেজিস্ট্রার অফিসে পাঠানো হলে গত এক বছরেও তাদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি চবি শৃঙ্খলা কমিটি। যার কারণে, ওই দুই শিক্ষার্থীর ২য় বর্ষের রেজাল্ট আসেনি। এমনকি তারা ৩য় বর্ষেও ভর্তি হতে পারেননি। গত এক বছরেও তাদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় তারা বিভাগের অফিস ও পরীক্ষার হলে তালা ঝুলিয়ে দেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হাসিব বলেন, আমার দ্বিতীয় বর্ষের রেজাল্ট বের হয়নি। আমি তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা দিতে পারছি না। এই বছর পরীক্ষা দিতে না পারলে আমি ছাত্রত্ব হারাবো। বিভাগ থেকে আমার খাতা সময়মতো পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে পাঠানো হয়নি। ৪ মাস পরে পাঠানো হয়েছে। তাই তারা আর সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।

চবি ছাত্রলীগের উপগ্রুপ ভিএক্সের নেতা প্রদীপ চক্রবর্তী দুর্জয় বলেন, একটা ছেলে পরীক্ষায় বহিষ্কৃত হয়েছিল। কিন্তু তার বিষয়ে দুই মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত আসার কথা থাকলেও একবছরেও কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয়। এটি ডিসিপ্লিনারি কমিটির কাজ হলেও বিভাগ এর দায় এড়াতে পারে না। তাই তার বন্ধু-বান্ধব বিভাগে তালা লাগিয়েছে।

পরীক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবুল হাসেম বলেন, এটা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাজ। আমরা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ অফিসে খাতা পাঠিয়ে দিয়েছি। তারা সিদ্ধান্ত নিবেন। এখানে আমাদের কোনো কাজ নেই।

বিভাগের সভাপতি আসমা আক্তার বলেন, আমরা তাদের খাতা পাঠিয়ে দিয়েছি রেজিস্ট্রার অফিসে। তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে চবির শৃঙ্খলা কমিটি। তবে, তাদের জন্য কোনো সুপারিশ করা যায় কিনা তা বিভাগের একাডেমিক কমিটি বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) চৌধুরী আমির মোহাম্মদ মুছা বলেন, গত বছর তাদের নকল ধরা হলেও বিভাগ আমাদের খাতা দিয়েছে ফেব্রুয়ারিতে। তাছাড়া, এরইমধ্যে শৃঙ্খলা কমিটির মিটিং না হওয়ায় কিছুদিন আগেও আমরা উপাচার্যকে জানিয়েছি। তিনি কোনো সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন না। মিটিং হলে সেখানে তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। এরকম নকল ধরা পড়লে শিক্ষার্থীদের সাধারণত এক বছরের জন্য এক্সপেল করা হয়।

তিনি আরও বলেন, ওই দুই শিক্ষার্থীকে বলেছিলাম, তোমরা দ্বিতীয় বর্ষের সঙ্গে আবারও পরীক্ষা দাও। তারা কথা শুনেনি। ইতোমধ্যেই দ্বিতীয় বর্ষের দুইটা পরীক্ষা চলে গেছে। এখন তারা যদি এক বছরের জন্য এক্সপেল হয়, তাহলে দুই বছরের একাডেমিক গ্যাপে পড়ে যাবে। তবে, বিভাগ যদি সুপারিশ করে শাস্তি কমানোর জন্য, তাহলে শৃঙ্খলা কমিটির মিটিয়ে তাদের বিষয়ে উপাচার্য বিবেচনা করতে পারেন।

পূর্বকোণ/রায়হান/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট