চট্টগ্রাম সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

দু’সপ্তাহ ধরে বন্ধ একমাত্র আল্ট্রাসাউন্ড মেশিন!

চমেক হাসপাতালের গাইনি বিভাগ

ইমাম হোসাইন রাজু

১৩ নভেম্বর, ২০২৩ | ১২:৪৭ অপরাহ্ণ

নাছিমা আক্তার (ছদ্মনাম)। বিয়ের চার বছর পার হলেও এখন পর্যন্ত সন্তানের মুখ দেখতে পারেননি এ গৃহিণী। সন্তান লাভের আশায় চমেক হাসপাতালের গাইনি বিভাগের ইনফার্টিলিটি ওয়ার্ডে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন তিনি। চিকিৎসক নিঃসন্তান এ নারীর প্রজনন অঙ্গ পরীক্ষার জন্য ‘ট্রান্সভ্যাজিনাল সনোগ্রাফি’ বা টিভিএস পরীক্ষার পরামর্শ দেন। যা বিভাগটিতেই করে থাকেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকগণ।

 

নাছিমা আক্তারের স্বামী পূর্বকোণকে বলেন, ‘নির্ধারিত সময় অনুযায়ী গত শনিবার টিভিএস নামক পরীক্ষাটি করার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে গাইনি বিভাগে আসি। কিন্তু জানানো হয় পরীক্ষা করার মেশিনটি (আল্ট্রাসাউন্ড) নষ্ট। যার কারণে বেসরকারি ল্যাব থেকে কয়েকগুণ বেশি টাকায় পরীক্ষাটি করতে হয়েছে।’

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আধুনিক আল্ট্রাসাউন্ড মেশিনটি ইউপিএস বিকল হয়ে যাওয়ায় প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে বন্ধ রয়েছে বন্ধ্যাত্ব নারীদের পরীক্ষা টিভিএস-সহ গাইনি রোগীদের গুরুত্বপূর্ণ রোগ নির্ণয়সেবা। অবশ্য, বিভাগটির প্রধান জানিয়েছেন- একমাত্র মেশিনটি দ্রুত সময়ে সচল করতে বারবার তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। নতুন ইউপিএস স্থাপন হলে আগামী সপ্তাহ থেকে পুরোদমে সেবা গ্রহণ করা সম্ভব হবে।

 

সংশ্লিষ্টরা জানান, বছর দুয়েক আগে গুরুত্বপূর্ণ রোগীদের জরুরি প্রয়োজনে আধুনিক এ আল্ট্রাসাউন্ড মেশিনটি ডোনেশন হিসেবে পায় চমেক হাসপাতালের গাইনি ও প্রসূতি বিভাগ। বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার মেশিনটি সংগ্রহ করেন। গুরুত্বপূর্ণ মেশিনটি দ্বারা ইনফার্টিলিটি বিভাগে আসা রোগীদের গুরুত্বপূর্ণ রোগ নির্ণয়ের ট্রান্সভ্যাজিনাল সনোগ্রাফি বা টিভিএস পরীক্ষাসহ অন্যান্য জটিল ও জরুরি মুহূর্তের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়ে থাকে। এরমধ্যে গড়ে প্রায় ৬ থেকে ৭ জন বন্ধ্যাত্ব বা নিঃসন্তান নারীর টিভিএসসহ অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়ে থাকে। ভালোভাবে মেশিনটি চললেও গত সপ্তাহে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। পরবর্তীতে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এসে ইউপিএস নষ্ট হওয়ার বিষয়টি শনাক্ত করেন এবং তা নিয়ে যান প্রকৌশলীরা।

 

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের গাইনি ও প্রসূতি রোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার বলেন, ‘গত দুই সপ্তাহ ধরে মেশিনের ইউপিএসটি নষ্ট থাকায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। ইউপিএসটি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি চলতি সপ্তাহে এটি চলে আসবে। এলে আগামী সপ্তাহ থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ স্বাভাবিকভাবে করা যাবে।’

 

এক প্রশ্নের জবাবে বিভাগীয় প্রধান ডা. সাহেনা আক্তার বলেন, ‘সাধারণ ইউপিএসগুলো সাড়ে ৬শ’ ভোল্টেজের হয়ে থাকে। কিন্তু এ আল্ট্রাসাউন্ড মেশিনের ইউপিএসের ভোল্টেজ সাড়ে তিন হাজারের। এ কারণেই একটু সময় লাগছে। বারবার তাগাদা দেওয়া হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে হাতে পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।’

 

পূর্বকোণ/আরডি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট