চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

সর্বশেষ:

পরিত্যক্ত ভবনে পুলিশের আবাসন পটিয়া

হারুনুর রশিদ ছিদ্দিকী, পটিয়া

৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ১:৫৪ পূর্বাহ্ণ

বৃটিশ আমলের তৈরিকৃত পটিয়া থানা। সেটি ভেঙে বহুতল ভবনও নির্মাণ করা হয়েছে। এর পরেও পুলিশের থাকার জন্য নেই কোন কোয়ার্টার। এ কারণে পরিত্যক্ত বাসভবনে থাকছেন পটিয়া থানার ওসি, কয়েকজন এসআই ও মহিলা পুলিশ সদস্যরা।
কোয়ার্টার নির্মাণে সরকারিভাবে উদ্যোগ গ্রহণ না করায় তা বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। তাই থানা পুলিশকে বিভিন্ন ভাড়া বাসায় থাকতে হচ্ছে। ২০০৯ সালে সাবেক মহকুমা শহরের প্রাচীন এই থানার ভিত্তিপ্রস্তর করেন পটিয়ার সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী। এরপর ২০১২ সালে গণপূর্ত অধিদপ্তরের অর্থায়নে বহুতল ভবন নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট শামসুল হক টুকু এমপি। তবে নেই পুলিশের থাকার কোয়ার্টার। থানা পুলিশের ওসি, এসআই, এএসআই ও মহিলা কনস্টেবল থানার অভ্যন্তরে পরিত্যক্ত বাসভবনে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন।

থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের সাবেক মহকুমা শহর পটিয়া সদরে রয়েছে প্রাচীন পটিয়া থানা। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার আরকান মহাসড়কের পাশেই। বর্তমানে থানায় রয়েছে এসআই ১৪ জন, এএসআই ১৫ জন, কনস্টেবল ৪৬ জন। তার মধ্যে মহিলা কনস্টেবল রয়েছে ১০ জন। শুধুমাত্র কয়েকজন ছাড়া বাকি পুলিশকে পৌর সদরের বিভিন্ন ভাড়া বাসায় থাকতে হচ্ছে। থানার অভ্যন্তরে নেই খাবার পানির জন্য টিউবয়েল। পুকুরঘাট রয়েছে ভাঙা। তাছাড়া থানার উত্তর ও পূর্বাংশের সীমানা প্রাচীর রয়েছে ভাঙা। যার কারণে বহিরাগত লোকজন থানার ভেতরে খুব সহজে প্রবেশও করতে দেখা যায়। একসময় পটিয়া থানায় এসআই ৩০ জনের ওপরে ছিল, বর্তমানে তা রয়েছে শুধুমাত্র ১৪ জন। উপজেলার ১৭ ইউনিয়ন ও একটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভার আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে থানা পুলিশ। অথচ তাদের জন্য নেই কোন থাকার ব্যবস্থা। পুলিশের কোয়ার্টার না থাকার কারণে ভাড়া বাসা থেকে কর্মস্থলে যেতে লাগছে দীর্ঘসময়। ১৭ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা অনুপাতে পটিয়া থানায় পুলিশের সংখ্যাও এখন খুব কম। যার কারণে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করতেও পুলিশ প্রশাসনকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
বর্তমানে পটিয়া থানার ওসি বোরহান উদ্দিন নিজেও সরকারিভাবে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা বাসভবনে ঝুঁকি নিয়ে রাতযাপন করছেন। সরকারিভাবে কোন উদ্যোগ না নেয়ার কারণে মূলত পটিয়া থানা পুলিশের থাকার কোয়ার্টার নির্মাণ হচ্ছে না।
পটিয়া থানার সেকেন্ড অফিসার ও এসআই নাদিম মাহমুদ জানান, নতুন থানা ভবনের তৃতীয় তলায় পুলিশ কনস্টেবলদের ব্যারেক রয়েছে। তবে ওসি, এসআই, এএসআই ও রিজার্ভ পুলিশের থাকার কোন ব্যবস্থা নেই। কোন জরুরি মুহূর্তে রিজার্ভ পুলিশ পটিয়া থানায় আসলে তাদেরকে থানা সন্নিকটে এএস রাহাত আলী স্কুল ও পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় শ্রেণিকক্ষে থাকতে হয়। এ কারণে বিদ্যালয় ছাত্রদের লেখাপড়ার ব্যাঘাত ঘটছে।

পটিয়া থানার ওসি বোরহান উদ্দিন জানান, সাবেক মহকুমা শহরের প্রাচীন পটিয়া থানায় পুলিশের থাকার কোন ব্যবস্থা নেই। যার কারণে থানা পুলিশের সদস্যরা পৌর সদরের বিভিন্ন ভাড়া বাসায় থাকছেন। শুধুমাত্র তিনি ও কয়েকজন পুলিশ পরিত্যক্ত ঘোষণা করা বাসভবনে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে। তাছাড়া থানার অভ্যন্তরে নেই খাবার পানির গভীর নলকূপ। তার বাসভবনের সামনের যে পুকুরঘাট, রয়েছে তা দীর্ঘদিন ধরে ভেঙে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। পটিয়া থানায় বহুতল ভবন থাকলেও পুলিশের বসবাস করার জন্য একটি কোয়ার্টার অতীব জরুরি। তিনি (ওসি) শীঘ্রই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি লিখিতভাবে জানাবেন বলে জানান।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট