চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

সর্বশেষ:

৪ কারণে আগ্রহ নেই মরণোত্তর চক্ষুদানে

৩৯ বছরে স্বেচ্ছায় চক্ষুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ৪৪ হাজার ১০৬ জন

মরিয়ম জাহান মুন্নী

২ নভেম্বর, ২০২৩ | ১২:১৮ অপরাহ্ণ

তিন যুগের বেশি সময়ে সন্ধানী ৩ হাজার ৪৯৬ ব্যক্তির চোখে কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করে আলো ফিরিয়ে দিয়েছে। তবে স্বেচ্ছায় রক্তদানে আগ্রহ থাকলেও স্বেচ্ছায় মরণোত্তর চক্ষুদানে আগ্রহ নেই মানুষের মধ্যে। সন্ধানী ন্যাশনাল আই ডোনেশন সোসাইটি এবং সন্ধানী ইন্টারন্যাশনাল আই ব্যাংকের (বাংলাদেশ) তথ্য অনুযায়ী-উল্লেখ্যযোগ্য চার কারণে মানুষের মধ্যে মরণোত্তর চক্ষুদানের আগ্রহ নেই বললেই চলে। উল্লেখ্য কারণগুলো হচ্ছে, ধর্মীয় অনুশাসনের কারণে মরণোত্তর চক্ষুদানে আগ্রহ নেই প্রায় সব ধর্মের মানুষের মধ্যে। কোনো ব্যক্তিকে রক্তদানের পর তাকে যেভাবে রক্তদানকারী ব্যক্তি বেশিরভাগ সময় সুস্থ হতে দেখেন, কিন্তু চক্ষুদানের ক্ষেত্রে চক্ষুদানকারী তা দেখে যেতে পারেন না। এ কারণে চক্ষুদানে মানুষের ভালো লাগা কিংবা আগ্রহ জন্মায় না। একবার কোনো ব্যক্তি রক্তদান করলে সেই ব্যক্তির কোনো শারীরিক সমস্যা ছাড়াই চার মাসের মধ্যে পুনরায় রক্তদানের জন্য উপযুক্ত হয়ে উঠে। যা চক্ষুদানের ক্ষেত্রে সম্ভব নয়। এছাড়া রক্তদানে যেভাবে প্রচার-প্রচারণা আছে মরণোত্তর চক্ষুদানে সেইভাবে কোনো প্রচার প্রচারণা নেই। সন্ধানী ন্যাশনাল আই ডোনেশন সোসাইটি এবং সন্ধানী ইন্টারন্যাশনাল আই ব্যাংকের (বাংলাদেশ) তথ্য অনুযায়ী- চলতি বছরের ১১ মাসে দেশে ১৮ জন মানুষ স্বেচ্ছায় মরণোত্তর চক্ষুদান করেছে। যা ২০২২ সালে ছিল ১৯ জন। এক বছরের ব্যবধানে স্বেচ্ছায় চক্ষুদানের হার কমেছে। তবে ২০২১ সালে ২০ জন ব্যক্তি মরণোত্তর চক্ষুদান করেছেন। পরিসংখ্যান বলছে স্বেচ্ছায় মরণোত্তর চক্ষুদানে মানুষের আগ্রহ নেই বললেই চলে।

 

সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী- দীর্ঘ ৩৯ বছরে সন্ধানী ইন্টারন্যাশনাল আই ব্যাংকে ৪৪ হাজার ১০৬ জন মানুষ চক্ষুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এরমধ্যে সরাসরি এসে কার্ড করেছেন ৩৬ হাজার ৬৮৭ জন এবং অনলাইনে ফর্মপূরণ করেছেন ৭ হাজার ৪১৯ জন। তাদের মধ্য থেকে কর্নিয়া সংগ্রহ করা হয়েছে ৪ হাজার ১৫৩টি। স্বেচ্ছায় চক্ষুদান করেছেন ১২৮ জন ব্যক্তি। এছাড়াও কাউন্সিলিং করে ১৯৭ জনের কর্নিয়া সংগ্রহ করা হয়েছে। এসব কর্নিয়ার মধ্যে ৩ হাজার ৪৯৬টি কর্নিয়া অন্ধ মানুষের চোখে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। 

 

সন্ধানী ন্যাশনাল আই ডোনেশন সোসাইটি এবং সন্ধানী ইন্টারন্যাশনাল আই ব্যাংক (বাংলাদেশ) এন্ড সন্ধানী আই হাসপাতাল’র কো-অডিনেটর মো. সাইফুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, মানুষের মধ্যে যেভাবে রক্তদানের আগ্রহ দেখা যায় সেইভাবে মরণোত্তর চক্ষুদানে আগ্রহ নেই। মূলত এবিষয়ে মানুষের মধ্যে নানারকম কুসংস্কার রয়েছে। সচেতনতার অভাবে এ হার বাড়ানো যাচ্ছে না। যদি মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো যায় তবে রক্তদানের মত চক্ষুদানের হারও বাড়বে।

 

পূর্বকোণ/আরডি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট