চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫

সর্বশেষ:

ওয়ান সিটি টু টাউনের মাধ্যমে বৃহত্তর চট্টগ্রামকে সাজাতে চান প্রধানমন্ত্রী: নওফেল

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৭ অক্টোবর, ২০২৩ | ১০:৪৩ অপরাহ্ণ

ওয়ান সিটি টু টাউনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বৃহত্তর চট্টগ্রামকে সাজাতে চান বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এম.পি।

 

আজ শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) বিকেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল উদ্বোধন উপলক্ষে ‘আমরা করবো জয়’ এর উদ্যোগে নগরীর ফিরিঙ্গিবাজারের কর্ণফুলী নদী সংলগ্ন মাঠে দুই দিনব্যাপী টানেল উৎসবের সমাপনী দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।

 

সমাপনী অুনষ্ঠানের শুরুতে কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু থেকে শতাধিক সাইকেলের বহর নিয়ে র‌্যালিটি যখন সমাবেশ স্থলের দিকে আসছিল ঠিক সে মুহূর্তে বিকেলের শান্ত নীল আকাশে এক ঝাঁক তরুণ-তরুণী হাতে নাটাই নিয়ে উড়াচ্ছিল নানা রঙ বেরঙের ঘুড়ি। ঘুড়ি উৎসবের ফাঁকে ফাঁকে চলছিল আঞ্চলিক গানের আসর। চাঁটগাইয়া পিঠা এবং মহেশখালীর খিলি পান হাতে অতিথিদের বরণে দাঁড়িয়ে ছিলেন এক দল তরুণ-তরুণী। এরই মাঝে এসে উপস্থিত হন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এম.পি। এসেই সাথে সাথে মঞ্চে উঠে যান তিনি।

 

অনুষ্ঠানের সভাপতি চট্টগ্রাম মহানগর ১৪ দলের সমন্বয়ক ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজনের সভাপতিত্বে এবং মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম ইমরান আহাম্মেদ ইমুর সঞ্চালনায় শুরু হয় শুভেচ্ছা বক্তব্য।

 

বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, এ টানেল নিয়ে আমার পিতা মরহুম এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী অনেক আন্দোলন সংগ্রাম করেছিলেন। আমার পিতার প্রথম নির্বাচনের ইশতেহারেও টানেল নির্মাণের কথা উল্লেখ ছিল। কারণ আমাদের দেশের রাজস্ব আয়ের প্রায় ৭০ ভাগ আসে এ কর্ণফুলী নদী থেকে। এ কর্ণফুলী নদী হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। তাই আমাদের চাওয়া ছিল কর্ণফুলী নদীতে যাতে পলি না জমে সেজন্য নদীর উপর ঝুলন্ত সেতু অথবা নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ। দুঃখজনকভাবে তৎকালীন বিএনপি সরকার কর্ণফুলী নদীর উপর একটি আধা ঝুলন্ত সেতু করে কর্ণফুলী নদীকে একটি মৃতপ্রায় নদীতে পরিণত করেছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের মধ্য দিয়ে ওয়ান সিটি টু টাউনের মাধ্যমে বৃহত্তর চট্টগ্রামকে সাজাতে চান। ইনশাআল্লাহ আগামীকাল এ টানেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম ইতিহাসে জায়গা করে নিবে নিঃসন্দেহে। চট্টগ্রামের অর্থনীতির দ্বার আরো উম্মোচিত হবে এ টানেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে। তাই আগামী নির্বাচনেও চট্টগ্রামের সকল ভোটারদেরকে প্রধানমন্ত্রীর মার্কা নৌকা মার্কায় ভোট দানের উদাত্ত আহবান জানান শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেল।

 

সভাপতির বক্তব্যে টানেল উৎসবের আয়োজক খোরশেদ আলম সুজন ব্যতিক্রমধর্মী ‘শেখ হাসিনার শাসনকালে, নদীর তলে গাড়ি চলে’ ‘শেখ হাসিনার শাসনকালে, পদ্মার উপর গাড়ি চলে’ স্লোগানের মধ্য দিয়ে আগত দর্শকদের উজ্জ্বীবিত করেন।

 

তিনি বলেন, পুরো চট্টগ্রামবাসী আজ এক মাহেন্দ্রক্ষণের জন্য অপেক্ষা করছে। আর অল্প কিছু সময় পর রাত পোহালেই সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। সেই মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষা নিয়েই চট্টগ্রামবাসী আজ নির্ঘুম রাত পার করবেন বলেও মনে করেন সুজন। কারণ এই টানেল নির্মাণের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম একটি বৃহৎ অর্থনৈতিক শহরে জায়গা করে নিবে। একটি টানেলের মাধ্যমে নদীর দুই পাড়ই উপকৃত হবে প্রকৃত অর্থে। তাই প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে পুরো চট্টগ্রামবাসী আজ আনন্দে উদ্বেলিত। আর প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে স্মরণীয় করতে আমাদের এই অনন্য আয়োজন।

 

আমরা কৃতজ্ঞচিত্তে প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে স্মরণ করছি বলে জানান খোরশেদ আলম সুজন।

 

শুভেচ্ছা বক্তব্য চলাকালীন সময়েই সন্ধ্যার আকাশে ভেসে ওঠে লাল সবুজের আতশবাজি। আতশবাজির আলোতে আলোকিত হয়ে উঠে পুরো এলাকা। অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত দর্শকরা তখন মন ভরে উপভোগ করতে থাকেন শিল্পীদের কন্ঠে গাওয়া চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের সম্রাজ্ঞী শেফালী ঘোষের ‘ছোড ছোড ঢেউ তুলি ফানি। লুসাই পাহাড়ত্তুন লামিয়ারে যার গৈ কর্ণফুলী’ গানটি। পুরো অনুষ্ঠানস্থল তখন এক আবেগ অনুভূতিতে পরিণত হয়। এর পর একের পর এক চাঁটগাইয়া গানে মেতে উঠেন উপস্থিত দর্শকরা। সবাই একবাক্যে সুজনের ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজনের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

 

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ইব্রাহীম হোসেন চৌধুরী বাবুল, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মসিউর রহমান চৌধুরী। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর ১৪ দল নেতা মাওলানা নজরুল ইসলাম আশরাফী এবং মিটুল দাশগুপ্ত।

 

আরো বক্তব্য রাখেন জহির উদ্দিন মো. বাবর, মোহাম্মদ ইলিয়াছ, আব্দুর রহমান মিয়া, কাউন্সিলর আতাউল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপিকা তাহমিনা বেগম, আমিনুর রশীদ দুলাল, রুহুল আমিন তপন, মহানগর যুবলীগের সভাপতি মাহবুবুল হক সুমন, ফরহান আহমেদ, মো. সালাউদ্দিন, কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, কাউন্সিলর পুলক খাস্তগীর, কাউন্সিলর আব্দুস সালাম মাসুম।

 

অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আজম খান, খলিলুর রহমান নাহিদ, নাজিম উদ্দিন, নুরুল কবির, মো. ইলিয়াছ, এমদাদুল হাসান বাবু, মোরশেদ আলম, আলী আকবর বাবুল, এ.জে.এম মহিউদ্দিন রনি, গিয়াস উদ্দিন তালুকদার, জসীম উদ্দিন, এনামুল হক মিলন, জাহেদ আহমদ চৌধুরী, কামরুল হক, জানে আলম, সোলায়মান সুমন, মো. মনির উদ্দিন, মো. ইউনুছ, শহীদুল আলম লিটন, তোফায়েল আহমদ রয়েল, সমীর মহাজন লিটন, আব্দুর রহিম জিল্লু, রাজীব হাসান রাজন, মো. ওয়াসিম, আফগানী বাবু, ওয়াসিম আকরাম, ফেরদৌস মাহমুদ আলমগীর, আশিকুন্নবী চৌধুরী, সরওয়ার্দী এলিন, এস এম করিম, পাভেল ইসলাম, নাঈম রনি, নোমান চৌধুরী, আফম সাইফুদ্দিন, শওকত আলী রনি, সুজন বর্মন, ইরফানুল আলম জিকু প্রমুখ।

 

পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট