চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

সর্বশেষ:

‘এতো বরাদ্দ দেওয়া সত্ত্বেও কাজ না করলে কষ্ট লাগে’

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৫ অক্টোবর, ২০২৩ | ১১:২৭ পূর্বাহ্ণ

চসিকের (চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন) সক্ষমতার বিষয়ে অভিযোগ রয়েছে। এভাবে হতে থাকলে আগামীতে অবস্থা খারাপ হবে। চট্টগ্রামে কেন এডিস মশায় কামড়াবে? কেন দুর্গন্ধময় থাকবে? প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ার পর ড্রেন দিয়ে কেন পানি সঠিকভাবে চলাচল করবে না? কেন জলাবদ্ধতা হবে? এতো বরাদ্দ দেওয়া সত্ত্বেও যথাযথভাবে কাজ না হলে কষ্ট লাগে।

 

চট্টগ্রামে বিভিন্ন সংস্থার উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ নিয়ে এভাবেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। গতকাল শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উন্নয়ন কার্যক্রম সংক্রান্ত সমন্বয় সভায় মন্ত্রী এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

 

সভায় মন্ত্রী তাজুল বলেন, বাংলাদেশকে উন্নত দেশের কাতারে নিতে হলে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে জনগণের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে। সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি বেসরকারি উন্নয়নসংস্থা সমূহ এবং জনগণকে ভূমিকা রাখতে হবে।

 

চট্টগ্রাম বন্দরের আয়ের এক শতাংশ চসিককে না দেওয়ার বিষয়টি উত্থাপন করা হলে মন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের আয়ের একটি অংশ চসিককে না দিলে বন্দরকে রাস্তা ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। কিন্তু আপনারা সব কথা আমার মুখ দিয়েই বলিয়ে নিচ্ছেন। সিদ্ধান্ত তো দেওয়া আছে। আপনারা বাস্তবায়ন করতে পারেন না? বন্দর চেয়ারম্যানকে বলেন আপনারা চসিকের রোড ব্যবহার করবেন, কিন্তু টাকা দিবেন না, তা হবে না। টাকা না দিলে চসিকের রাস্তা ব্যবহার করতে পারবে না বন্দর।

 

সভাপতির বক্তব্যে সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, চসিকের রাজস্ব আয় থেকে ৮১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ৫৬টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ অনেকগুলো জনসেবামূলক প্রকল্প পরিচালনা করা হচ্ছে। এগুলো পরিচালনার ব্যয়ভার বহন করতে গিয়ে চসিকের উপর চাপ তৈরি হচ্ছে। রাজস্ব আয় বাড়াতে আয়বর্ধক প্রকল্প বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা পেলে চসিক স্বাবলম্বী হবে, সেবা কার্যক্রমও বাড়াতে পারবে।

 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, চসিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে যে ব্যয় করে তা যেন কোন চাপ তৈরি না করে সেজন্য মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় করতে হবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে। বড় প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের পাশাপাশি রুটিন ওয়ার্কগুলো যাতে ভালভাবে হয় সে ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে।

 

সভায় চসিকের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের অধীনে সম্পাদিত ও চলমান উন্নয়ন কার্যক্রমের বিবরণ তুলে ধরেন।

 

সভায় জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের লে. কর্নেল মো. শাহ আলী বলেন, সিডিএ’র জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের অধীনে ৩৬টি খালের মধ্যে ১৭টি খালের কাজ সম্পূর্ণ শেষ। কাজ শতভাগ শেষ হওয়ার পরও প্রতিবছর আমাদের এসব খাল পরিষ্কার করতে হচ্ছে। আমরা এসব খাল চসিককে বুঝিয়ে দিতে চাই।

 

তবে চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী প্রকল্পের মাঝপথে এসে এসব খাল বুঝে নিতে অনীহা প্রকাশ করে বলেন, বেশকিছু খাল থেকে এখনও মাটি উত্তোলন করা হয়নি। খাল খনন করে রাস্তা করে দিলে আমরা খাল বুঝে নেব। উত্তরে লে. কর্নেল মো. শাহ আলী ১৭টি খালের সবগুলোতে খনন, রিটেইনিং ওয়াল ও রাস্তা নির্মাণ শেষ করা হয়েছে বলে জানান।

 

সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহম্মদ ইব্রাহিম। স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মলয় চৌধুরী, মুস্তাকিম বিল্লাহ ফারুকী, এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী মো. আলি আখতার হোসেন, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মু. আনোয়ার পাশা, চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খালেদ মাহমুদ, ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসকিম এ খান, চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ, সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস, চসিকের প্যানেল মেয়রবৃন্দ, কাউন্সিলরবৃন্দ, চট্টগ্রামের উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট সবগুলো প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট