চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

সর্বশেষ:

মহালয়া আজ, শুরু দেবীপক্ষের

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৪ অক্টোবর, ২০২৩ | ১১:২৯ পূর্বাহ্ণ

হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গোৎসবের পুণ্যলগ্ন, মহালয়া আজ শনিবার। মহালয়া মানে দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গার আগমনী বার্তা। মহালয়া এলেই সবাই পুরোপুরি নিশ্চিতই হয়ে যান এখন থেকে দুর্গাপূজার ক্ষণ গোনা শুরু। এ দিন থেকেই শুরু দেবীপক্ষের। শ্রীশ্রী চ-ীপাঠের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার আবাহনই মহালয়া হিসেবে পরিচিত। এই ‘চ-ী’তেই আছে দেবী দুর্গার সৃষ্টির বর্ণনা এবং দেবীর প্রশস্তি। দুর্গাপূজার একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ মহালয়া। পুরাণমতে, মহালয়ার দিনে দেবী দুর্গার আবির্ভাব ঘটে। দুর্গোৎসবের তিনটি পর্ব- মহালয়া, বোধন আর সন্ধিপূজা।

 

বছর ঘুরে আবারও উমা দেবী আসছেন তার বাপের বাড়ি। অশুভ অসুর শক্তির কাছে পরাভূত দেবতারা স্বর্গলোকচ্যুত হওয়ার পর চারদিকে শুরু হয় অশুভ শক্তির প্রতাপ। এই অশুভ শক্তিকে বিনাশ করতে একত্র হন দেবতারা। তখন দেবতাদের তেজরশ্মি থেকে আবির্ভূত হন অসুরবিনাশী দেবী দুর্গা। মহালয়ার সময় ঘোর অমাবস্যা থাকে। তখন দুর্গা দেবীর মহাতেজের আলোয় সেই অমাবস্যা দূর হয়। আর প্রতিষ্ঠা পায় শুভশক্তি।

 

হিমালয়ের কৈলাশ থেকে সুদূর পথ পাড়ি দিয়ে প্রতিবছর দুর্গা দেবী আসেন সমতল ভূমির এই বাংলায়। সঙ্গে নিয়ে আসেন গণেশ, কার্তিক, লক্ষ্মী আর সরস্বতীকে। প্রতিবছরের শরৎকালে দেবী দুর্গার এই আগমন হয় নিজ ভূমিতে। বিশুদ্ধ পঞ্জিকামতে, এবার দুর্গা দেবী আসছেন ঘোটকে  ঘোড়ায়) এবং উমা কৈলাসেও ফিরবেন ঘোটকে (ঘোড়ায়)। যার অর্থ ফলাফল ছত্রভঙ্গ। এর প্রভাব পড়ে সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর, যুদ্ধ-বিগ্রহ, অশান্তি, বিপ্লব দেখা দিতে পারে।

 

মহালয়ার পাঁচদিন পর ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ২০ অক্টোবর বোধনের মধ্য দিয়ে ষষ্ঠী পালিত হবে। আর ২৪ অক্টোবর হবে দেবীর বিসর্জন।

 

মহালয়া প্রসঙ্গে মহাভারত বলছে, পিতামহ ভীষ্মের কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে প্রাণ ত্যাগ থেকে কর্ণের মৃত্যু ও ফের পৃথিবীতে এসে পিতৃপুরুষকে অন্ন-জলের নিবেদনের কাহিনীতে এর অর্থ আলাদা। ব্যাসদেবের লিখনিতে ‘মহালয়’ বলতে ‘পিতৃলোক’কে বোঝানো হয়েছে। যেখানে বিদেহী পিতৃপুরুষের অবস্থান। সেক্ষেত্রে পিতৃলোককে স্মরণের অনুষ্ঠানই হল মহালয়া।

 

শাস্ত্র বিশেষজ্ঞদের মতে- পিতৃপক্ষের অবসানে, অমাবস্যার অন্ধকার পেরিয়ে আমরা আলোকোজ্জ্বল দেবীপক্ষকে আগমন করি, তাই সেই মহা লগ্ন আমাদের জীবনে ‘মহালয়া’। এক্ষেত্রে দেবী দুর্গাকেই সেই মহান আশ্রয় বলা হয়ে থাকে এবং আঁধার থেকে আলোকে উত্তরণের লগ্নটিকে বলা হয় মহালয়া। পাড়া-মহল্লার পূজা ম-পগুলোতে  লেগেছে আনন্দের আমেজ। প্রাণে প্রাণে জ্বলছে খুশির তারা।  প্রতিমা ও মণ্ডপ সাজানোর কাজে শশব্যস্ত কারিগর ও বারোয়ারী পূজা মণ্ডপগুলো। কাঠামে তোলা হয়েছে প্রতিমাও।

 

আজকের কর্মসূচি : মহালয়া উপলক্ষে নগরীর জেএম সেন হলে উদযাপিত হবে মহানগর পূজা উদ্ধসঢ়;যাপন পরিষদের উদ্যোগে বিভিন্ন মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে- বিকাল ৪টায় চণ্ডীপাঠ, ৪টা ৩০ মিনিটে একক সঙ্গীতানুষ্ঠান, ৬টায় দলীয় সঙ্গীতানুষ্ঠান, সন্ধ্যা ৭টায় দলীয় নৃত্যানুষ্ঠান, রাত ৮টায় বিশেষ শম্ভু দাশের পরিচালনায় গীতিনাট্য ‘ধরিত্রীর উমা’, রাত ৮টা ৩০ মিনিটে বিশেষ সঙ্গীতানুষ্ঠান ‘ওগো আমার আগমনী’, পরিচালনায় বেতার ও টিভির কণ্ঠশিল্পীরা। দক্ষিণ জেলা পূজা পরিষদের উদ্যোগে বোয়ালখালীর করলডেঙ্গা পাহাড়ের মেধস আশ্রমে রয়েছে দিনব্যাপী নানা আয়োজন। এছাড়াও নগরীর গোল পাহাড় মহাশশ্মান কালিবাড়ি, সদরঘাট কালিবাড়ি, কাটগড় কালিবাড়ি, উত্তর কাট্টলি রক্ষাকালি বাড়িসহ বিভিন্ন ম-পে নানা আয়োজনে পালিত হবে মহালয়া।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট