গত বছর ভারতীয় ট্রানজিটের চারটি পরীক্ষামূলক চালান চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে পরিবহনের পর এবার সরাসরি বাণিজ্যিক পণ্য পরিবহন শুরু করতে যাচ্ছে ভারত। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতীয় ট্রানজিট পণ্য পরিবহনের অনুমতি পাওয়ার পর ভারত সরকার পুরোদমে বাণিজ্যিক পণ্য পরিবহনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
গত আগস্ট মাসে ভারতের ত্রিপুরা এবং উত্তর-পূর্ব অন্য রাজ্যের ব্যবসায়ীদের জন্য চারটি ট্রানজিট রুট অনুমোদন পাওয়ার কথা জানায় ত্রিপুরার শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী শান্ত¡না চাকমা। চার রুট হলো চট্টগ্রাম বন্দর-আখাউড়া-আগরতলা, মোংলা বন্দর-আখাউড়া-আগরতলা, চট্টগ্রাম বন্দর-বিবিরবাজার-শ্রীমন্তপুর এবং মোংলা বন্দর-বিবিরবাজার-শ্রীমন্তপুর।
পাশাপাশি ভারতীয় শুল্ক দপ্তরের পক্ষ থেকেও বাংলাদেশের বন্দর ব্যবহার করে ট্রানজিট পণ্য পরিবহনের সকল প্রস্তুতির কথা জানায় একাধিক ভারতীয় গণমাধ্যম।
এখনো পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে কোনো পণ্য উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্যে (সেভেন সিস্টার) পাঠাতে গেলে সড়কপথে দীর্ঘ এবং জটিল পথ পাড়ি দিতে হয়। এতে কলকাতা থেকে আসাম বা ত্রিপুরা থেকে কলকাতায় পণ্য পরিবহন করতে গেলে প্রচুর সময় ও অর্থ ব্যয় হচ্ছিল। এই সমস্যা থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে দ্রুত-নির্বিঘ্নে পণ্য পরিবহন নিশ্চিত করতেই বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে ট্রানজিট পণ্য পরিবহনে উদ্যোগ নেওয়া হয়।
এরই মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দুটি ও মোংলা বন্দর দিয়ে দুটি ট্রানজিট চালানের পরীক্ষামূলক চলাচল শেষ হয়েছে গত বছর। এখন ট্রানজিটের রুট, ব্যয়, ত্রুটি দূর করে বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশ বসে আনুষ্ঠানিকভাবে পণ্য পরিবহন শুরুর সিদ্ধান্ত নেবে। প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে পণ্য সরবরাহ করতে দুদেশের মধ্যে ২০১৮ সালের অক্টোবরে একটি চুক্তি হয়। এরপর প্রথমবারের মতো ট্রায়াল রান (পরীক্ষামূলক চলাচল) হয়েছিল ২০২০ সালের জুলাইয়ে। তখন কলকাতা বন্দর থেকে পণ্যবাহী জাহাজ ‘এমভি সেঁজুতি’ চারটি কনটেইনার নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায়। এর মধ্যে দুটি কনটেইনারে ছিল টিএমটি স্টিল বার, যা পরে স্থলপথে ভারতের ত্রিপুরায় যায়। বাকি দুই কনটেইনারে ছিল ডাল যা ভারতের আসামে নেওয়া হয়েছিল।
পূর্বকোণ/আরডি