চট্টগ্রাম সোমবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০২৫

ঝুঁকিপূর্ণ চিকিৎসা বর্জ্য ভাঙারি কারখানায়

চট্টগ্রাম সেবা সংস্থার মালিকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে পরিবেশের মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ | ১১:১৫ অপরাহ্ণ

অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণভাবে চিকিৎসা বর্জ্য মজুদ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের দায়ে তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে মামলা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) পরিবেশ অধিদপ্তরের নগর কার্যালয়ের পরিদর্শক মুহম্মদ আশফাকুর রহমান বাদী হয়ে বন্দর থানায় মামলাটি দায়ের করেন ।

মামলার তিন আসামি হলো : ভাঙারি দোকানের মালিক মো. তৈয়ব, কর্মচারী মো. তানভীর ও চট্টগ্রাম সেবা সংস্থার স্বত্বাধিকারী মো. জমির উদ্দিন।

পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয় পরিচালক হিল্লোল বিশ্বাস পূর্বকোণ অনলাইনকে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল মঙ্গলবার আনন্দবাজারের  টিজি কলোনি এলাকায় মো. তৈয়বের ভাঙারি কারখানায় অভিযান চালানো হয়। এসময় প্রতিষ্ঠানটি হতে ৪৩ বস্তা চিকিৎসা বর্জ্য জব্দ করা হয়। অভিযানকালে কারখানাটি হতে ব্যবহৃত সংক্রমিত সিরিঞ্জ, সুঁচ, ক্যানোলা, স্যালাইনের বোতল, নল, সংক্রমিত প্লাস্টিক বর্জ্য জব্দ করা হয় । কারখানাটিতে এসব সংক্রমিত ঝুঁকিপূর্ণ চিকিৎসা বর্জ্য যত্র-তত্র, খোলা ও অনিরাপদ অবস্থায় মজুদ ও প্রক্রিয়াজাতকরণরত অবস্থায় দেখা যায়। অভিযানকালে ভাঙারি দোকানের মালিক মো. তৈয়বকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি। তবে চিকিৎসা বর্জ্য প্রক্রিয়াজাককৃত অবস্থায় দোকানের কর্মচারী মো. তানভীরকে হাতে নাতে আটক করে থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করা হয়।

তিনি আরও জানান জব্দকৃত আলামত ও স্থানীয় তদন্তে জানা যায় যে আনন্দবাজারস্থ সিটি কর্পোরেশনের ডাম্পিং সাইট হতে এসব ঝুঁকিপূর্ণ চিকিৎসা-বর্জ্য সংগ্রহ করে উক্ত ভাঙারি দোকানে মজুদ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের কাজ পরিচালিত হত।

উল্লেখ্য যে, নগরীর কঠিন চিকিৎসা বর্জ্য পরিবেশসম্মত পন্থায় বিনষ্টকরণের জন্য আনন্দবাজার ডাম্পিং সাইটের নিকটে জাইকার অর্থায়নে একটি অত্যাধুনিক ইনসিনারেটর প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছে। সিটি কর্পোরেশন বর্তমানে উক্ত প্ল্যান্টটি পরিচালনা করছে। নগরীর হাসপাতালগুলো হতে কঠিন চিকিৎসা-বর্জ্য সংগ্রহ ও ইনসিনারেটর প্ল্যান্ট পরিবহনের কাজটি করে ‘চট্টগ্রাম সেবা সংস্থা’ নামীয় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান । প্রতিষ্ঠানটি হাসপাতালগুলো থেকে হলুদ ও কালো রঙয়ের পলিথিনে করে চিকিৎসা বর্জ্য সংগ্রহ করে থাকে  । তৈয়বের ভাঙারি দোকানে হলুদ ও কালো রঙের এসব পলিথিন জব্দ করা হয় যা থেকে প্রতীয়মান হয় যে ‘চট্টগ্রাম সেবা সংস্থা’ কর্তৃক সংগৃহীত চিকিৎসা বর্জ্য প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে অবৈধ পন্থায় উক্ত ভাঙারির দোকানদারের নিকট বিক্রি করা হয়। অর্থাৎ হাসপাতালগুলো থেকে সংগৃহীত কঠিন চিকিৎসা-বর্জ্য ইনসিনারেটর প্ল্যান্টে না দিয়ে অবৈধ পন্থায় ভাঙারির দোকানে বিক্রি করা হয়েছে। স্থানীয় তদন্তেও এর প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়।

পরিচালক হিল্লোল বিশ্বাস বলেন, সার্বিক বিবেচনায় ভাঙারি দোকানের মালিক মো. তৈয়ব, কর্মচারী মো. তানভীর ও ‘চট্টগ্রাম সেবা সংস্থা’ এর স্বত্বাধিকারী মো. জমির উদ্দিনের বিরুদ্ধে আজ বুধবার পরিদর্শক মুহম্মদ আশফাকুর রহমান বাদী হয়ে বন্দর থানায় মামলা দায়ের করেন । ‘চট্টগ্রাম সেবা সংস্থা’ এর স্বত্বাধিকারী মো. জমির উদ্দিনেরর বিরুদ্ধে এর পূর্বেও একই অপরাধে ২০২২ সালে মামলা দায়ের করা হয়। এছাড়া এর পূর্বে তার বিরুদ্ধে একই অপরাধে পরিবেশগত ক্ষতিপূরণও আরোপ করা হয়েছিল ।

 

পূর্বকোণ/আরআর/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট