চট্টগ্রাম রবিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৫

সর্বশেষ:

চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর ৪১ শতাংশই শিশু-কিশোর

শিশুদের বাড়তি যত্ন নেওয়ার পরামর্শ

ইমাম হোসাইন রাজু

২৭ আগস্ট, ২০২৩ | ১২:৩১ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামে ক্রমেই ভয়ংকর হয়ে উঠছে ডেঙ্গু। আক্রান্তের পাশাপাশি মৃত্যুর সংখ্যাও ঊর্ধ্বমুখী থাকায় দুশ্চিন্তা বেড়েই চলেছে। ইতোমধ্যে ভেঙেছে অতীতের সব রেকর্ড। ভয়ংকর পরিস্থিতি হচ্ছে, আক্রান্ত-মৃত্যু দুই তালিকাতেই অবস্থান রয়েছে শিশু-কিশোরদের। আক্রান্তের হার সর্বনিম্নে থাকলেও মৃত্যুহার বরাবরই কপালে ভাঁজ ফেলার মতো। যা নিয়ে এক প্রকার দুশ্চিন্তায় খোদ চিকিৎসক, স্বাস্থ্য বিভাগসহ আক্রান্ত পরিবারগুলোর।

 

চিকিৎসকরা বলছেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার পর দেরিতে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পাশাপাশি শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় দ্রুত জটিল হয়ে পড়ছে তাদের শারীরিক অবস্থা। যার কারণে জরুরি চিকিৎসা সত্ত্বেও শিশুদের বাঁচানোটা কঠিন হয়ে পড়ছে। এ পরিস্থিতিতে ডেঙ্গুর এই সময়ে শিশুদের প্রতি বাড়তি যত্ন এবং পরিবারকে সতর্ক থাকার পরামর্শ চিকিৎসকদের।

 

প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে ২১ জনই হচ্ছে শিশু। যা শতকরায় প্রায় ৪১ শতাংশ। আর ১৮ জন মারা গেছেন নারী। শতকরায় যা ৩৪ শতাংশ। মৃত্যুর ক্ষেত্রে পুরুষের সংখ্যা তুলনামূলক কম।

 

চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া পুরুষের সংখ্যা হচ্ছে ১৩ জন। যা শতকরায় ২৫ শতাংশ। তবে আক্রান্তের তালিকায় পুরুষের অবস্থান সবার উপরে। এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়া ৫ হাজার ২১৭ জনের মধ্যে পুরুষই হচ্ছে ২ হাজার ৩৬৪ জন। যা শতকরায় ৪৫ শতাংশ। আর নারীদের সংখ্যা হচ্ছে ১ হাজার ৪৭৯ জন বা ২৮ শতাংশ। তবে শিশুদের আক্রান্তের হার অন্যদের তুলনায় অনেক কম। মোট রোগীদের মধ্যে এ পর্যন্ত শিশু আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৩৭৪ জন। যা শতকরায় ২৭ শতাংশ।

 

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের সাবেক প্রধান অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিন মাহমুদ বলেন, শিশুরা ডেঙ্গু রোগের লক্ষণগুলো বুঝতে বা বলতে পারে না। যার কারণে সঠিক সময়েও তাদের সঠিক চিকিৎসাটি হয়ে উঠে না। শারীরিক অবস্থা অবনতি হওয়ার পরই তাদের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। যখন হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়, তখন অবস্থা খুবই খারাপ থাকে। ওই সময়ে জরুরি চিকিৎসা করলেও বাঁচানোটা অনেক কঠিন হয়ে পড়ে।

 

চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশলান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মুসলিম উদ্দিন সবুজ বলেন, সবসময় শিশুকে বাড়তি নজরে রাখতে হবে। বিশেষ করে এই মৌসুমে দিনে কিংবা রাতে শিশুদের পুরো শরীর কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। ফুল হাতার জামা কাপড় পড়াতে হবে। তবে এই সময়ে জ্বর হলে অবশ্যই ডেঙ্গু পরীক্ষার পাশাপাশি চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। প্রয়োজন হলে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে।

 

পূর্বকোণ/আরডি

শেয়ার করুন