চট্টগ্রাম শনিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৪

সর্বশেষ:

উদ্বৃত্ত উৎপাদন সত্ত্বেও বাড়ছে আলুর দাম

বাজারে চাহিদা বেড়েছে ১০ গুণ

ইফতেখারুল ইসলাম

২৬ আগস্ট, ২০২৩ | ১২:১৮ অপরাহ্ণ

উদ্বৃত্ত উৎপাদন সত্ত্বেও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আলুর দাম। জানুয়ারিতে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে আলুর পাইকারি দর ছিল কেজি ১০ থেকে ১২ টাকা। বর্তমানে তা ৩৪ টাকায় এসে ঠেকেছে। ব্যবসায়ীরা জানান, চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় আলুর দাম বাড়ছে। তবে এতে মধ্যস্বত্বভোগীরাই লাভবান হচ্ছে। দেশে বার্ষিক আলুর চাহিদা ৮৫ থেকে সর্বোচ্চ ৯০ লাখ টন। গত বছর (২০২১-২২ মৌসুম) উৎপাদন হয়েছিল এক কোটি ১০ লাখ টন আলু। পরের বছর (২০২২-২৩ মৌসুম) উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ১১ লাখ টন। পূরণ হয়েছে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রাও। যেকারণে গত ডিসেম্বর- জানুয়ারি মাসে পাইকারিতে আলুর কেজি ছিল ১০ থেকে ১২ টাকা। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের ডাটাবেইজ অনুযায়ী সারাদেশে আলু সংরক্ষণের জন্য ৪০৭টি হিমাগার রয়েছে। যার মধ্যে ৩৬৫টি হিমাগার আলু সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। ২০২৩ সালে মোট ২৪ লাখ ৯২ হাজার ৮২ টন আলু সংরক্ষণ করা হয়েছে। এছাড়া কৃষকেরা ঘরের মাঝে বিশেষ উপায়ে কিছু আলু সংরক্ষণ করে। চাক্তাইয়ের ব্যবসায়ী আলাউদ্দিন আলো পূর্বকোণকে জানান, ডিসেম্বরের দিকে আলুর পাইকারি দাম ছিল কেজি ১২টাকা। গতকাল তারাই কিনেছেন কেজি সাড়ে ৩৩ টাকায়। বিক্রি করতে হবে ৩৪ থেকে সাড়ে ৩৪ টাকায়। তিনি জানান, বৃষ্টিতে সবজির ক্ষতি হওয়ায় আলুর চাহিদা বেড়ে গেছে। কয়েকমাস আগে চাক্তাইয়ে যেখানে দিনে এক ট্রাক আলু বিক্রি হতো। এখন দিনে ১০ ট্রাকের বেশি আলু বিক্রি হচ্ছে। চাহিদা বাড়ার কারণে আলুর দাম ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে।

 

চাক্তাইয়ের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, দেশে আলুর বাম্পার ফলন হলে আলুর দাম কমে যায়। গত ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে হিমাগারে আলুর কেজি ছিল ৬ থেকে ৭ টাকা। যা দিয়ে হিমাগার ভাড়া দেয়াও তাদের পক্ষে সম্ভব ছিল না। অনেক কৃষককে পানির দামে আলু বিক্রি করে নিঃস্ব হতে হয়েছে। বেশি উৎপাদন করাটাই যেন তাদের জন্য কাল হয়েছে। বর্তমানে যে সময়ে আলুর দাম বেড়েছে তখন কৃষকের হাতে আর আলু নেই। লাভের শতভাগ মধ্যস্বত্বভোগীর পকেটেই যাচ্ছে।সংশ্লিষ্টরা জানান, হিমাগারে সাধারণত ছয় থেকে নয় মাস পর্যন্ত আলু সংরক্ষণ করা যায়। সে হিসেবে গত মৌসুমের আলু নভেম্বরের পর আর স্টোরেজে রাখা সম্ভব হয় না। কিন্তু বাংলাদেশে গত কয়েক বছর ধরে আলুর বাম্পার ফলন হওয়ার ফলে নির্দিষ্ট সময়ের পরও হিমাগারে আলু থেকে যায়। এমনকি গত বছরের আলু গত ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত কিছু কিছু হিমাগারে সংরক্ষণ করা ছিল। ব্যাপক দরপতনের কারণে কৃষকরা আলু হিমাগার থেকে বের করার সাহস পায়নি। এবছরও বাম্পার ফলন হয়েছে। বছরে যে চাহিদা তার থেকে অনেক বেশি উৎপাদন হয়েছে। হঠাৎ অতিবৃষ্টিতে সবজি ক্ষেত নষ্ট হওয়ায় আলু মজুদকারিরা ৬ মাসের মধ্যে দ্বিগুণ লাভবান হয়েছে।

 

সরকারের পরিকল্পনা : বাড়তি আলু নিয়ে সমস্যা সমাধানে  সরকার যে রোডম্যাপ তৈরি করেছে তাতে ২০২২ সালে আলু রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করে ৮০ হাজার টন রপ্তানি করেছে। ২০২৩ সালের লক্ষ্য ১ লাখ ২০ হাজার টন, ২০২৪ সালে ১ লাখ ৮০ হাজার টন এবং ২০২৫ সালে ২ লাখ ৫০ হাজার টন।

পূর্বকোণ/আরডি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট