চট্টগ্রাম শনিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৪

সংস্কার করা ১৬ খাল যাচ্ছে চসিকের কাঁধে

ইমরান বিন ছবুর

২২ আগস্ট, ২০২৩ | ১১:১৩ পূর্বাহ্ণ

চলতি মাসেই চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের অধীনে সংস্কার করা ১৬টি খাল চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে। হস্তান্তরের পর থেকে এই ১৬টি খালের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন।

 

হস্তান্তরের প্রস্তুতি নেয়া এসব খালের কাজ ইতোমধ্যে শতভাগ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। সিডিএ’র মাধ্যমেই খালগুলো সিটি কর্পোরেশনকে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের লে. কর্নেল মো. শাহ্ আলী।

 

সম্প্রতি ভারী বর্ষণে ডুবে যায় নগরীর প্রায় এলাকা। বৃষ্টি শেষ হওয়ার পর কিছু জায়গা থেকে পানি সরে গেলেও অনেক এলাকার পানি দীর্ঘ সময়েও সরেনি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেন নগরবাসী। জলাবদ্ধতার জন্য কেউ সিডিএকে আবার কেউ কেউ সিটি কর্পোরেশনকে দায়ী করেছেন। এর পরপর সিডিএ ও সিটি কর্পোরেশন মুখোমুখী অবস্থান নেয়। সংবাদ মাধ্যমে এ দু’টি সংস্থা একে অন্যের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেয়।

 

জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, এই প্রকল্পের অধীনে ৩৬টি খাল রয়েছে। এরমধ্যে ১৬টি খালের কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে। এছাড়াও আরো ৯টি খালের কাজ শেষের পথে। ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় এখনো ১১ খালের কাজ বাকি রয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণ করা না গেলে এই ১১ টি খালের কাজ শেষ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। যে ১৬টি খালের শতভাগ কাজ শেষ হয়েছে সেগুলো হচ্ছে- আযব বাহার খাল, ডোমখালি খাল, ফিরিঙ্গীবাজার খাল, গুপ্তা খাল, কলাবাগিচা খাল, মরিয়ম বিবি খাল, নয়ারহাট খাল, রাজাখালী-৩, রাজাখালী-২ খাল, রামপুর খাল, রুবি সিমেন্ট খাল, সদরঘাট-১, সদরঘাট-২ খাল, টেকপাড়া খাল, উত্তরা খাল।

 

জানতে চাইলে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের লে. কর্নেল মো. শাহ্ আলী বলেন, প্রকল্পের অধীনে থাকা খালগুলোর মধ্যে ১৬টির কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে। এসব খাল কিছুদিনের মধ্যে আমরা সিডিএ’র কাছে হস্তান্তর করবো। এরপর সিডিএ এসব খাল রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সিটি কর্পোরেশনকে হস্তান্তর করবে।

 

সিডিএ চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ বলেন, মূলত নগরীর খাল রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের। সিডিএ যেহেতু জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, এই প্রকল্পের অধীনে খালগুলোর কাজ শেষ করে সিটি কর্পোরেশনকে হস্তান্তর করবে। ইতোমধ্যে প্রকল্পের যে ১৬টি খালের কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে, খালগুলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কিছুদিনের মধ্যে আমরা তা সিটি কর্পোরেশনকে হস্তান্তর করবো।

 

সম্প্রতি চসিক সভাকক্ষে এক সমন্বয় সভায় মেয়র বলেন, খাল হস্তান্তরের ব্যাপারে সিডিএ আমাদের চিঠি দিলে উভয় সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ আমরা খালগুলোর বর্তমান অবস্থা দেখবো। এরপরই আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবো।

 

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগস্টে ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সিডিএ’র ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, স¤প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয় একনেক। তিন বছর মেয়াদি এই প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় শেষ হয় ২০২০ সালের জুন মাসে। প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৩ সালের জুন ও ব্যয় বাড়িয়ে সাড়ে আট হাজার কোটি টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে বলে জানা যায়। তবে এখনো সংশোধিত প্রকল্পের অনুমোদন মিলেনি। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল সেনাবাহিনীর সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি এমওইউ) স্বাক্ষর করে সিডিএ। এরপর ২৮ এপ্রিল প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। বর্তমানে প্রকল্পের ৭৬ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে।

 

 

পূর্বকোণ/আরডি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট