প্রতি বছর বিশ্বে পাঁচ কোটি শিশু আক্রান্ত হচ্ছে মেনিনজাইটিস সংক্রামক রোগে। যাদের মধ্যে ৩ লাখ শিশুরই মৃত্যু ঘটছে এ সংক্রামক রোগের কারণে। বাকিরা বেঁচে থাকলেও তাদের সিংহভাগই পরবর্তী সময়ে পক্ষাঘাত হয়েই জীবন পার করছেন। তবে সুখবর হচ্ছে- প্রতিরোধযোগ্য এ রোগ থেকে শিশুদের নিরাপদ রাখতে সঠিক সময়ে শিশুদের মেনিনজাইটিস টিকা প্রদান করতে হবে। কেননা এ রোগ প্রতিরোধের উপায় হচ্ছে ভ্যাকসিন বা টিকা।
শুক্রবার রাতে নগরীর হোটেল দি পেনিনসুলায় ‘মেনিনজাইটিস ভ্যাকিসন’ বিষয়ক বৈজ্ঞানিক সেমিনারে এসব তথ্য ওঠে আসে। বাংলাদেশ পেডিয়াট্রিক এসোসিয়েশন, চট্টগ্রাম শাখা এ সেমিনারের আয়োজন করে। বাংলাদেশ পেডিয়াট্রিক এসোসিয়েশন চট্টগ্রামের সভাপতি অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিন মাহমুদের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পেডিয়াট্রিক এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডা. ওয়াজির আহমেদ। সেমিনারে মেনিনজাইটিস ভ্যাকসিন সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করেন ভারতের গৌহাটির প্রখ্যাত শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. রাসনা দাশ হাজারীকা।
সেমিনারে বলা হয়, মেনিনজাইটিসের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া প্রতি পাঁচজন রোগীর অন্তত একজন চিরস্থায়ী অঙ্গহানি, মস্তিষ্কের সমস্যা, বধিরতা বা দৃষ্টি শক্তি হারানোর মতো করুণ পরিণতি ভোগ করতে হয়। যদিও দেশে বর্তমানে গুরুতর এ সংক্রামক রোগের চিকিৎসা রয়েছে। রোগটি যে কোন বয়সী মানুষের হয়ে থাকলেও শিশুরাই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে। প্রতিরোধযোগ্য রোগ হলেও সঠিক সময়ে চিকিৎসা না পেলে শিশুর জীবন বিপন্ন করে দিতে পারে এ রোগ। চিকিৎসকরা বলেন, সঠিক সময়ে রোগ শনাক্ত না হলে, সঠিক ও সময়মতো চিকিৎসা না পেলে কিংবা চিকিৎসা অসম্পূর্ণ থাকলে এ রোগে আক্রান্ত শিশুদের বড় ধরনের শরীরিক কিছু জটিলতা তৈরি হয়। আর শিশু বয়সে এই জটিলতাগুলো হওয়ায় এর করণে যেসব সমস্যা তৈরি হয় তা সারাজীবন ধরে বয়ে বেড়াতে হয়। বেঁচে গেলেও অনেকের কানে না শোনা, পক্ষাঘাত, খিঁচুনি ইত্যাদিসহ নানা রকম মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধিতা হতে পারে। সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন পেডিয়াট্রিক এসোসিয়েশন চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. চৌধুরী চিরঞ্জীব বড়ুয়া, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. সনত কুমার বড়ুয়া, প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী, সায়নোভিয়া ফার্মার সহকারী মহাব্যবস্থাপক লাকী সিংহা প্রমুখ।
পূর্বকোণ/পিআর