তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপি বলেছেন, সময় বদলে গেছে, যারা মানুষ পোড়ানোর রাজনীতি করে, হরতাল-অবরোধের রাজনীতি করে গাড়ি ভাংচুর করে সেই বিএনপির সাথে এখন আর বিদেশিরাও নেই। সরকারের কঠোর অবস্থান এবং আমাদের নেতাকর্মীদের সতর্ক দৃষ্টি রাখার প্রেক্ষিতে বিএনপি এখন সুবোধ বালকের মতো আচরণ করছে।
তিনি বলেন, বিএনপি এখন লিফলেট বিতরণ এবং হাঁটা কর্মসূচি দিয়েছে। সম্ভবত এরপর দৌড়ানি অথবা বসা কর্মসূচি দিবে। তবে, যদি মানুষকে হয়রানি ও গাড়ি পোড়ানোর অপচেষ্টা করা হয়, মানুষের সহায় সম্পত্তি নষ্টের অপচেষ্টা চালায় আমরা জনগণকে সাথে নিয়ে দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবো।
শুক্রবার (১৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার এডভোকেট নুরুচ্ছফা তালুকদার অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুল মোনাফ সিকদার।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, খালেদা জিয়ার জঙ্গি বাহিনী ১৭ আগস্ট সারাদেশের পাঁচ শ জায়গায় বোমা ফাটিয়েছিল। আর বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা পাঁচ শ ৬০ জায়গায় মসজিদ নির্মাণ করেন। আমরা নতুন নতুন মসজিদ বানায় আর তারা বাইতুল মোকারমে কোরআন শরীফ পোড়ায়। আমরা স্কুলের বাচ্চাদের বিনামূল্যে বই দেই, আর ওরা বই পোড়ায়, গাড়ি ও মানুষ পোড়ায়। এটাই হচ্ছে আওয়ামী লীগের সাথে বিএনপির পার্থক্য।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠন করে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দিবানিশি কাজ করে যাচ্ছেন। সারাদেশের মানুষ যখন ঘুমান, তখন শেখ হাসিনা কাজ করেন। যখনই কোন দুর্যোগ দুর্বিপাক হয় শেখ হাসিনা ঘুমান না। এইভাবে তিনি দেশকে করোনামুক্ত করেছেন, করোনা মোকাবেলার ক্ষেত্রে তিনি পৃথিবীর কাছে উদাহরণ।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, স্বল্পোন্নত থেকে দেশ আজ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। সমস্ত সূচকে আমরা আজ পাকিস্তানকে অতিক্রম করেছি। পাকিস্তান এখন আমাদের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে। পাকিস্তানের টেলিভিশনে শেখ হাসিনার প্রশংসা হয়। পাকিস্তানের রাজনীতির সভামঞ্চে বাংলাদেশের প্রশংসা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে বিএনপিসহ কিছু রাজনৈতিক দল ও বুদ্ধিজীবী পরিচয়ে কিছু মানুষ শেখ হাসিনার প্রশংসা করতে পারে না। আর কিছু মানুষ আছে উন্নয়ন দেখতে পারে না। আন্তর্জাতিক মিডিয়া ব্লুমবার্গ রিপোর্ট করেছে শেখ হাসিনা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন। আর যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান আইআরআই এর জরিপে উঠে এসেছে বাংলাদেশের ৭০ শতাংশ মানুষ শেখ হাসিনার কাজে সন্তুষ্ট।
তিনি বলেন, রাঙ্গুনিয়া থেকে যেই ছেলেটি ১৪-১৫ বছর আগে বিদেশ গেছে সে ফিরে এসে এখন রাঙ্গুনিয়া চিনতে পারে না। এমন উন্নয়ন হয়েছে সেটা কেউ ভাবেনি। চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে আক্তারুজ্জামান ফ্লাইওভারে উঠলে এখন বুঝা যায় না এটা বিদেশের কোন শহর নাকি চট্টগ্রাম শহর। সব সম্ভব হয়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনার জাদুকরি নেতৃত্বের কারণে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক এমরুল করিম রাশেদ ও মাহমুদুল হাসান বাদশার সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা স্বজন কুমার তালুকদার, জহির আহমেদ চৌধুরী, আবুল কাশেম চিশতি, শাহজাহান সিকদার, মুহাম্মদ আলী শাহ, ইদ্রিছ আজগর, আকতার হোসেন খান, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার, ইকবাল হোসেন, ইকবাল হোসেন চৌধুরী মিল্টন, আবদুর রহিম, নিজাম উদ্দিন বাদশা, আবু তাহের, ফারুক তালুকদার, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শামসুদ্দোহা সিকদার আরজু, ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুল হক হিরো, শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী, শফিউল আলম, পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি আরিফুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ।
পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ