চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৪

ব্যস্ততা কমেছে চট্টগ্রাম বন্দরের, জাহাজবিহীন খালি যাচ্ছে জেটি

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৮ আগস্ট, ২০২৩ | ১:৫৩ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ কোন জাহাজ নেই। তাই বিদেশ থেকে জাহাজ এসে সরাসরি বন্দরের জেটিতে ভিড়ানোর সুযোগ পাচ্ছে। এমনকি অপেক্ষামান জাহাজ না থাকায় গত চারদিন ধরে বন্দরের অন্তত দুটি জেটি প্রতিদিনই খালি থাকছে।

বিভিন্ন জেটিতে বার্থিং করা জাহাজের তথ্য অনুযায়ী গতকাল বৃহস্পতিবার দুটি, বুধবার তিনটি, মঙ্গল ও সোমবার দুটি করে জেটি খালি ছিল। অপেক্ষমাণ জাহাজ না থাকায় জাহাজকে অলস বসে থেকে ক্ষতিপূরণ গুণতে না হলেও জেটি খালি থেকে যাওয়ায় বন্দর কেন্দ্রিক ব্যবসা পরিস্থিতিকে নেতিবাচক বলে দেখছেন ব্যবসায়ী ও বন্দর সংশ্লিষ্টরা।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. আরিফ পূর্বকোণকে বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে একটা সময় ছিল যখন জাহাজ এসে ৫/৬ দিন অলস বসে থাকতে হতো। সেই দিন এখন আর নেই। একটি জাহাজ একদিন অলস বসে থাকলে ১২/১৫ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণ গুণতে হতো। তবে এখন সেই চিত্র পাল্টে গেছে। বন্দরে জাহাজ এসে সরাসরি ভিড়তে পারছে। এমনকি বন্দরের জেটি খালিও থাকছে। সেটি কিন্তু আবার দেশের বাণিজ্যের জন্য ভালো খবর না।

তিনি বলেন, বন্দর কেন্দ্রিক ব্যস্ততা কমে যাওয়া মানে হলো দেশের আমদানি রপ্তানি কমে যাওয়া। আর আমদানি রপ্তানি কমে যাওয়া মানে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য কমে যাওয়া। এর কারণ হতে পরে ডলার সংকটের প্রভাব। গত কায়েক মাস আমদানি রপ্তানি বাড়লেও সম্প্রতি কমেছে। যার ফলে বন্দরে জাহাজ আসাও কমেছে। তাই জাহাজ আসা যাওয়া বাড়াতে ব্যাসায়িক সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে এবং সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হবে।

তৈরি পোশাক শিল্পের সবচেয়ে বড় সংগঠন বিজিএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম পূর্বকোণকে বলেন, বিশ্ববাণিজ্যেই এক অস্থিতি অবস্থা বিরাজ করছে। আমরা করোনায় একবার পিছিয়েছিলাম। সেই কাটা দাগ শুকানোর আগেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও তার প্রভাবে ডলার এবং বাণিজ্য সংকট সৃষ্টি হয়। এসবের মধ্যেও প্রতিযোগিতার বাণিজ্যে টিকে থাকার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে ব্যবসায়ীরা।

তিনি বলেন, ব্যবসা কমে গিয়ে অনেক কারখানা অলস দিন কাটাচ্ছে। অর্ডার না থাকায় কাঁচামাল আমদানির প্রয়োজন পড়ছে না। আর ডলারের উচ্চমূল্যে কাঁচামাল কিনবে কিনা সেই চিন্তাও করতে হয় কারখানাগুলোকে। আবার একেবারে ঠেকায় পড়ে আমদানির চিন্তা করলেও দেখা যায় ব্যাংকগুলো ডলার সরবরাহ করতে পারছে না। এসবের কারণে ব্যবসা কমেছে। আর ব্যবসা কমে যাওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যস্ততাও কমেছে।

উল্লেখ্য, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার প্রায় ৭০ শতাংশ আসে রপ্তানি আয় থেকে। তবে জুনের তুলনায় জুলাইয়ে রপ্তানি আয় কমে গিয়েছিল। গত জুলাইয়ে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৪৫৯ কোটি ডলার। জুনে হয়েছিল ৫০৩ কোটি ডলার ও মে মাসে হয়েছিল ৪৮৫ কোটি ডলার। সে হিসেবে মে ও জুনের চেয়ে জুলাইয়ে রপ্তানি আয় কমেছে।

পূর্বকোণ/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট