২০২২-২৩ অর্থবছরে রেকর্ড ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর) আদায় করেছে চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারেট। সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে ১৫ হাজার ১৩১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ভ্যাট আদায় করেছে সংস্থাটি। যা চট্টগ্রামে এক অর্থবছরে ভ্যাট আদায়ে নতুন রেকর্ড। এর আগে ২১-২২ অর্থবছরে চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ ১০ হাজার ৯০৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ভ্যাট আদায় করা হয়। দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে গত ১৩ অর্থবছরের ভ্যাট আদায়ের পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী- বন্দরনগরী চট্টগ্রামে ২০-২১ অর্থবছরে ৯৪৩৯ কোটি, ১৯-২০ অর্থবছরে ৮৮৬৬ কোটি, ১৮-১৯ অর্থবছরে ১০৩৮২ কোটি, ১৭-১৮ অর্থবছরে ৮৫৩২ কোটি ও ১৬-১৭ অর্থবছরে ৭০৮৮ কোটি টাকা ভ্যাট আদায় করা হয়। এছাড়া ১৫-১৬ অর্থবছরে ৭২৬৭ কোটি, ১৪-১৫ অর্থবছরে ৫১৩২ কোটি, ১৩-১৪ অর্থবছরে ৫০৪৪ কোটি, ১২-১৩ অর্থবছরে ৫৫০৬ কোটি, ১১-১২ অর্থবছরে ৩৮৭৫ কোটি এবং ১০-১১ অর্থবছরে ৩৩৬০ কোটি টাকা ভ্যাট আদায় করা হয় চট্টগ্রামে।
ভ্যাট আদায়ের তুলনামূলক চিত্র : ২০২১-২২ অর্থবছরে ১০ হাজার ৯০৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ভ্যাট আদায় করে চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারেট। আর সদ্য বিদায়ী ২২-২৩ অর্থবছরে ভ্যাট আদায় হয়েছে ১৫ হাজার ১৩১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ৪ হাজার ২২২ কোটি ৮১ লাখ টাকা বেশি। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে ভ্যাট আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৮.৭১ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভ্যাট আদায় হয়েছে জুন-২৩ এ। এই মাসে ২ হাজার ৪৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা ভ্যাট আদায় করা হয়।
সদ্য বিদায়ী অর্থবছরের মধ্যে ২০২২ সালের জুলাইয়ে ৮৯২.৪৬ কোটি, আগস্টে ১১০৩.৮৬ কোটি, সেপ্টেম্বরে ১০১৪.৮৮ কোটি, অক্টোবরে ৯৯৮.২৯ কোটি, নভেম্বরে ১২৯১.৩৩ কোটি এবং ডিসেম্বরে ১২৪৩.৪৩ কোটি টাকা ভ্যাট আদায় হয়। এছাড়া ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ১২৪১.৪৫ কোটি, ফেব্রুয়ারিতে ১১৮৯.৯২ কোটি, মার্চে ১১৩৫.২৭ কোটি, এপ্রিলে ১৪৭৫.১৬ কোটি মে’তে ১৫০২.১০ কোটি এবং জুনে ২০৪৩.৩১ কোটি টাকা ভ্যাট আদায় করা হয়।
তিন কারণে রেকর্ড রাজস্ব আদায় : ভ্যাট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আমদানি করা জ্বালানি তেলের উপর উচ্চ মূল্য সংযোজন কর, বকেয়া ভ্যাট আদায়ে কার্যকর পদক্ষেপ এবং অনিষ্পন্ন থাকা অডিট দ্রুত নিষ্পন্ন করার উদ্যোগ নেওয়ায় বিদায়ী অর্থবছরে চট্টগ্রামে রেকর্ড ভ্যাট আদায় হয়েছে। এছাড়া ইএফডি মেশিন বৃদ্ধি, ভ্যাট মেলার আয়োজন, শপিং মলগুলোতে ভ্যাট বুথ, খোলা জায়গায় ভ্যাট স্ট্যান্ড বসিয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম বাড়ানো, ‘ডোর টু ডোর’ কার্যক্রমের ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে ভ্যাট আদায়ে।
চট্টগ্রামে ভ্যাট আদায়ে নতুন রেকর্ড সম্পর্কে জানতে চাইলে ভ্যাট কমিশনার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান পূর্বকোণকে বলেন, বিদায়ী অর্থবছরে আদায় হওয়া মোট ভ্যাটের প্রায় ৬০ শতাংশ পাওয়া গেছে আমদানি করা জ্বালানি তেল থেকে। এর বাইরে অডিট জোরদার, অনিষ্পন্ন মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি, বকেয়া থেকেও বিপুল পরিমাণ ভ্যাট আদায় করা হয়েছে। স্টেকহোল্ডাররা সহায়তা করেছেন। আমাদের কর্মকর্তাদের উদ্ভাবনী চিন্তা ও প্রচেষ্টা ছিলো। সবমিলিয়ে আমরা রেকর্ড ভ্যাট আদায়ে সক্ষম হয়েছি।
পূর্বকোণ/এসি