চট্টগ্রাম বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

বন্যাপরবর্তী স্বাস্থ্যঝুঁকি নগরী-জেলায়

পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাবের শঙ্কা

ইমাম হোসাইন রাজু

১২ আগস্ট, ২০২৩ | ১১:৩০ পূর্বাহ্ণ

কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে প্লাবিত হয়েছে নগরীসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন অঞ্চল। বাসা-বাড়িতে পানি প্রবেশসহ নালা নর্দমার পানি মিলে মিশে একাকার। ময়লা আবর্জনার কারণে দূষিত এসব পানিতে রোগ-বালাই বাড়ার আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্টরা। শুধু তাই নয়, দূষিত পানির কারণে ডায়রিয়া, কলেরা, টাইফয়েড রোগীর সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি চর্মরোগসহ পানিবাহী রোগী বাড়তে পারে, এমন আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।

 

ইতোমধ্যে গ্রাহকদের সতর্ক করে গণমাধ্যমে গণ-বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। এমন পরিস্থিতিতে পানি পানে সর্বোচ্চ সতর্কতার পাশাপাশি জীবাণুমুক্ত করে পানি ফুটিয়ে খাওয়ার পরামর্শ চিকিৎসকদের।

 

এদিকে, এসব বিষয় মাথায় নিয়েই ইতোমধ্যে আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য প্রশাসন। যার জন্য স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মজুদের পাশাপাশি মেডিকেল টিমও গঠন করা হয়েছে। তবে সাধারণ মানুষকে এসব রোগ-বালাই থেকে নিরাপদে থাকতে সচেতন হওয়ার পরামর্শ চিকিৎসকদের।

 

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘ময়লাযুক্ত পানির কারণে অনেকের ডায়রিয়া, টাইপয়েড, কলেরাসহ পানিবাহিত রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়াও পানিতে চলাফেরা, ব্যবহারের কারণে চর্মরোগও হতে পারে। এসব রোগ থেকে বাঁচতে হলে অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে। বিশুদ্ধকরণ ছাড়া কোনভাবেই পানি পান করা যাবে না।’

 

অন্যদিকে, চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্তৃপক্ষের গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত ও জোয়ারের পানির কারণে ভূগর্ভস্থ জলাধারে দূষিত পানি প্রবেশের আশঙ্কা রয়েছে। সে কারণে ভূগর্ভস্থ জলাধার এবং ছাদের উপরের জলাধার যথাযাথ প্রক্রিয়ায় পরিষ্কার ও জীবাণুমক্ত করার এবং সর্বোচ্চ সতর্কতা হিসাবে পানি ফুটিয়ে খাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো। অন্যথায় পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহায়তা গ্রহণ করার পরামর্শও দেওয়া হয় গণ-বিজ্ঞপ্তিতে।

 

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, ‘অনেকেই পানি বিশুদ্ধ করে পান করেন না। যার কারণে তাদের পানিবাহিত অসুখ হয়ে থাকে। যেহেতু অতিবৃষ্টির কারণে বাসা বাড়িতে দূষিত পানি প্রবেশ করেছে, ময়লা পানি একাকার। তাই বরাবরই আশঙ্কা থাকে-পানিবাহিত রোগ বাড়তে পারে। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত বিষয়ে সকল উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের অতিবাহিত করা হয়েছে। মেডিকেল টিমও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পর্যাপ্ত স্যালাইনসহ পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটও রয়েছে। তবে সবকিছুর পরও সকলকে সচেতন থাকা জরুরি।’

 

এদিকে, গত ৭ আগস্ট নয়টি জরুরি নির্দেশনা দিয়ে বিভাগের সকল হাসপাতাল, সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. মহিউদ্দিন। চিঠিতে বলা হয়, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, খাবার স্যালাইন, ওষুধসহ যাবতীয় পণ্য মজুদ রাখার ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

 

চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মহিউদ্দিন বলেন, ‘বিভাগের সকল জেলায় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কেননা পানি কমে গেলেও রোগ বালাইয়ের ঝুঁকি বেড়ে যায়। বিশেষ করে পানিবাহিত রোগসহ নানান অসুখ দেখা দিতে পারে। তাই আগাম প্রস্তুতির জন্য ইতোমধ্যে নয়টি নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে এবং আগাম প্রস্তুত নেয়া হয়েছে।’

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট