চট্টগ্রাম জেলায় চতুর্থ পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপে আরও ২৪৪টি ভূমি ও গৃহহীন পরিবারকে দুই শতাংশ জমিসহ ঘর দেওয়া হবে। আনোয়ারা ও হাটহাজারীকে হালনাগাদ যাচাই-বাছাই করে তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল বুধবার (৯ আগস্ট) ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করবেন। সরকারি উদ্যোগে দেশের সব ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ভূমি ও গৃহ প্রদানের এ নজির পৃথিবীর বুকে অনন্য।
আজ মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য তুলে ধরেন জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. মাসুদ কামালসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক চট্টগ্রাম জেলায় ভূমিহীন ও গৃহহীন (৪র্থ পর্যায়ের ২য় ধাপ) ২৪৪টি পরিবারকে জমিসহ ঘরের মালিকানা হস্তান্তর করা হবে। এত সংখ্যক ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষকে জমিসহ ঘর দেওয়ার নজির পৃথিবীর আর কোথাও নেই।
‘মুজিব শতবর্ষে একজন লোকও গৃহহীন থাকবে না’ প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অধীনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সারাদেশে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদানের কার্যক্রম গ্রহণ করেন। তারই ধারাবাহিকতায় ১ম পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি সারাদেশে ৬৩ হাজার ৯৯৯টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ ঘর বরাদ্দ প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
সারাদেশের ন্যায় চট্টগ্রাম জেলায় ১ম পর্যায়ে ১ হাজার ৪৪৪টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে ২য় পর্যায়ে ২০২১ সালের ২০ জুন সারাদেশে ৫৩ হাজার ৩৩০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সরকারি অর্থায়নে ঘর দেওয়া হয়েছে। ২য় পর্যায়ে চট্টগ্রাম জেলায় ৬৪৯টি পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ১ম ও ২য় পর্যায়ের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী ৩য় পর্যায়ে গত বছরের ২৬ এপ্রিল সারাদেশে ৩২ হাজার ৯০৪টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ ঘর বরাদ্দ প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। চট্টগ্রাম জেলায় ৩য় পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে ১ হাজার ২১৬টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে একই বছর ২১ জুলাই প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে ৩য় পর্যায়ে (২য় ধাপ) ২৬ হাজার ২২৯টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ ঘর বরাদ্দ প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম জেলায় ২য় পর্যায়ে (২য় ধাপ) ৫৮৭টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলার ৮টি উপজেলা পটিয়া, কর্ণফুলী, সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া, বোয়ালখালী, রাউজান উপজেলাকে হালনাগাদ যাচাই-বাছাইকৃত তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ১ম, ২য় এবং ৩য় পর্যায়ের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী ৪র্থ পর্যায়ে ২য় ধাপে আগামীকাল (৯ আগস্ট) সারাদেশে ২২ হাজার ১০১টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ ঘর বরাদ্দ প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জানান, জেলায় ৩য় পর্যায়ের অবশিষ্ট ১৫৯টি এবং ৪র্থ পর্যায়ের ৮৯৩টিসহ মোট ১ হাজার ৫২টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর দেওয়া হয়। চতুর্থ পর্যায়ের ২য় ধাপে ২৪৪টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ ঘর দেবেন। এরই মধ্যে দিয়ে চট্টগ্রামের আরও দুই উপজেলা আনোয়ারা ও হাটহাজারীকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করবেন।
পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ