চট্টগ্রাম বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪

সিইউএফএলের সার নিয়ে চলছে কারসাজি, ট্রাক লোডিংয়ে দাবি করা হচ্ছে চাঁদা

নওশের আলী খান

৩ আগস্ট, ২০২৩ | ১২:০০ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম ইউরিয়া ফার্টিলাইজারের (সিইউএফএল) সার লোডিংয়ে ডিলারদের কাছ থেকে ট্রাক প্রতি ৬শ টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। অপরদিকে  সিইউএফএলের কালুরঘাট বাফার গুদাম থেকে ট্রাক প্রতি ২২শ টাকা করে চাঁদা দাবি করায় গতকাল কোন ট্রাক লোডিং হয়নি। ১০টি ট্রাক সারাদিন ঠাঁই দঁড়িয়েছিল। সার লোডিং ঠিকাদারের এই চাঁদাবাজি নিয়ে ডিলারদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।

 

চাঁদা আদায়ের বিষয়টি বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার এসোসিয়েশন (বাফা) চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের পক্ষ থেকে গত ২৬ জুলাই লিখিতভাবে সিইউএফএল ব্যবস্থাপনা পরিচালককে জানানো হয়। একইভাবে ব্যাপারটি কৃষিমন্ত্রী, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসককেও লিখিতভাবে অবহিত করা হয়। এরপরও চাঁদা আদায় বন্ধ হয়নি বলে জানিয়েছেন ফার্টিলাইজার এসোসিয়েশন চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক মো. মাহাবুবুল আলম খান। তিনি জানান, সার নিয়ে চলছে কারসাজি। আমন মৌসুমে সার নিয়ে এ ধরনের চাঁদাবাজি সরকারকে বেকায়দায় ফেলার ষড়যন্ত্র।

 

সিইউএফএল সূত্র জানায়, সিইউএফএলের সাড়ে তিন লক্ষ টন সার লোডিংয়ের জন্য আনোয়ারা ট্রান্সপোর্টকে ২ কোটি ১০ লক্ষ টাকার চুক্তিতে এক বছরের জন্য ১ জুলাই থেকে নিয়োগ দেয়া হয়। তবে দরপত্রের ১৯ নং শর্তে উল্লেখ রয়েছে, সার লোডিং বাবদ ডিলার অথবা ডিলার প্রতিনিধি কিংবা পরিবহন ঠিকাদার বা তাদের প্রতিনিধির কাছে কোন প্রকার বখশিশ বা চাঁদা দাবি করা যাবে না। বখশিশ বা চাঁদা চাওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হলে জামানত বাজেয়াপ্ত করণসহ কার্যাদেশ বাতিল করা হবে।

 

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর এই ৮ জেলার ৬৫০ ডিলারের জন্য সিইউএফএল থেকে সাড়ে তিন লক্ষ টন সার বরাদ্ধ করা হয়। তন্মধ্যে কারখানার গুদাম থেকে আড়াই লক্ষ টন এবং কালুরঘাট বাফার গুদাম থেকে ৯০ হাজার টন সার সরবরাহ করার কথা রয়েছে। জানা গেছে, ২০২১ সালের পূর্বে গুদাম থেকে ডিলারদের সার সরবরাহ দেয়া হত প্রতি ট্রাকে ৮ টন। ২০২১ সালের জুলাই থেকে ট্রাক প্রতি ১৫ টন লোড দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

 

লোডিং ঠিকাদারের চাঁদাবাজি নিয়ে বাফা চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের অভিযোগের বিষয়ে সিইউএফএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মিজানুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি চাঁদা দাবির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ট্রাক লোডিংকালে প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মকর্তা উপস্থিত থাকেন। গুদাম থেকে ট্রাক প্রতি ১৫ টন সার লোড দেয়ার বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে, তাই এ ধরণের অভিযোগ করা হচ্ছে।

 

মো. মিজানুর রহমানের সাথে কথা শেষ হওয়ার পরপরই বিকেল সাড়ে ৩ টায় এ প্রতিবেদকের কাছে অভিযোগ আসে কালুরঘাট বাফার গুদাম থেকে সার লোডিংয়ে ট্রাক প্রতি ২২শ টাকা চাঁদা দাবি করা হচ্ছে।

 

ডিলারের প্রতনিধি মো. সেলিম জানান, ১০টি ট্রাক সার নিতে এলে ট্রাক প্রতি ২২শ টাকা চাঁদা দাবি করা হচ্ছে। বিষয়টি তাৎক্ষণিক সিইউএফএল এমডিকে অবহিত করলে তিনি ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন বলে উল্লেখ করেন। যদিও রাত অবধি কোন ট্রাকে সার লোড দেয়া হয়নি।

 

পূর্বকোণ/মাহমুদ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট